skip to Main Content

ফিচার I বেবি ফ্যাশনিস্তা

বিয়ের ভেন্যুতে শিশুদের সরব উপস্থিতি উৎসবটিকে প্রাণোচ্ছল করে তোলে। তাদেরও চাই বিশেষ পোশাক। ট্রেন্ডি আর রঙিন। লিখেছেন রুম্পা ফারজানা

বিয়েবাড়িতে আরাম চাই
তাই নিয়ে কথা বললেন পাঁচ বছরের ইন্নির মা স্নেহা। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে রাজকুমারীর মতো লাগতে হবে। হয় সিন্ডারেলা বা স্নো হোয়াইট। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, অন্তত চার ঘণ্টার জন্য তার আরামটাও নিশ্চিত করতে হবে।’
স্নেহা আরও বলেন, বিয়েবাড়িতে চার ঘণ্টার সহজ হিসাব আছে বৈকি। যেতে আসতে এক-দুই ঘণ্টা। এবং কমপক্ষে দুই ঘণ্টা তো থাকাই হয়। আবার আত্মীয় বা বন্ধুর বিয়ে হলে কাটাতে হবে মোটামুটি সারা দিন। এই পুরোটা সময় মসলিন বা টিস্যুর জমকালো ফ্রকে একটু হাঁসফাঁস লাগতে পারে। একই কথা বললেন আভার মা মুমু। মুমু বললেন, ‘আমাদের এখানে বিয়েবাড়ি মানে বাড়াবাড়ি। মেহেদি সাজ থেকে ফিরানি পর্যন্ত কখনো কখনো আট-নয় দিনের উৎসব। সবখানে শিশুরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে, সেটাই আমি বেশি মাথায় রাখি। এ জন্য জমকালো পোশাক এড়িয়ে চলি মাঝেমধ্যে।’
একই কথা শিশুদের জন্য সুতির জামা তৈরি করা বিলকিস বানুর, যিনি পেশায় শিক্ষক। বললেন, ‘যতই উৎসব হোক, শিশুরা কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেই ভারী বেল্ট বা অন্যান্য অনুষঙ্গের জন্য অস্বস্তি বোধ করে। শুধু যে গরমের জন্য হয় তা নয়। এ কারণে আজও নানা ফ্যাশনেবল পোশাকের পাশাপাশি টিকে আছে নরম সুতির জামা।’
এমনকি ছেলেদেরও ভীষণ অস্বস্তি হতে পারে- জানালেন বেনজীর রহমান। তিনি বিদেশে থাকেন। কিছুদিন আগে একটি বিয়ের উৎসবে স্বভাববশত কমপ্লিট স্যুট পরান তার ছেলে আয়াতকে। যদিও ঠান্ডা এখনো জেঁকে বসেনি, কিন্তু ভাবটা আছে বটে। তাই ভেবেছিলেন তার তিন বছরের রাজপুত্রকে আরও বেশি মানাবে এই পোশাক। তবে দীর্ঘ সময়ে থাকার কারণে ঘেমে-নেয়ে সর্দি বাধিয়ে ফেলল।’
বলা বাহুল্য, ঋতু যেমনই হোক, শিশুর পোশাক হতে হবে স্বাচ্ছন্দ্যের আদরে মাখা। তা না হলে শিশুর অস্বস্তিতে ভাটা পড়তে পারে বিয়ের আনন্দে।
কেমন হবে শিশুর পোশাক
বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যায় শিশুদের জন্য। হলুদসন্ধা বা মেহেদিতে ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি। আবার মেয়েদের জন্য আছে শাড়ি সেট। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে। ছোট্ট মেয়েশিশুর জন্য এতে থাকে চেইন বা বেল্টের সুবিধা। আবার ছেলেদের জন্য আছে পাঞ্জাবি ধুতি ও পায়জামা। অনেকেই শখ করে ছেলেদের জন্য ধুতি কেনেন। শিশুদের পোশাকে একসময় আড়ংয়ের বিকল্প না থাকলেও এখন অনলাইনেও নানা রকমের পোশাক পাওয়া যায়। মেয়েশিশুদের জন্য সালোয়ার-কামিজ পাওয়া যায় প্রায় সব দেশীয় ফ্যাশন হাউসেই। চরকার কর্ণধার শায়লা সুলতানা মিলি বলেন, ‘অনেকেই সুতির কামিজ বেছে নেন শিশুদের জন্য, আবার বড়দের সঙ্গে মিলিয়েও নেন। তাই আমাদের শোরুমে এই রকমের পোশাক থাকে সব সময়।’
এ ছাড়া একটু জমকালো সাজে ছেলেদের জন্য শেরওয়ানি এবং মেয়েদের জন্য লেহেঙ্গাও পাওয়া যায়। সুতি না চাইলে রয়েছে অন্যান্য অপশনও। বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্স, যেমন বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, ইস্টার্ন প্লাজা- এসব মার্কেটে শিশুদের পোশাকের বিশাল সমারোহ রয়েছে। আছে আরও নতুন নতুন ডিজাইনের জামা। ঢাকার জেনেটিক প্লাজার দোতলায় মেয়েশিশুর জন্য মিলবে গারারা।
হলুদ বা মেহেদি কিংবা রঙখেলা বাদে অন্যান্য পোশাকের ক্ষেত্রে শিশুরা পরতে পারে ওয়েস্ট কোট, প্যান্ট, চাইলে স্যুট। পরাতে পারেন ব্লেজার। মেয়েরা লেহেঙ্গা, ফ্রক, কামিজ বা মায়ের গাউনের রেপ্লিকা পরতে পারে।
শপিং প্লেসে ঘুরে বেড়ানো এড়াতে চাইলে অনলাইনে সহজেই শিশুদের পোশাক অর্ডার করা যায়। বিভিন্ন অনলাইন ফ্যাশন পেইজ হ্যান্ডপেইন্ট করা পারিবারিক পোশাকের সেট অর্ডারের ভিত্তিতে বানিয়ে দেয়।

মডেল: লারিনা, লারিসা ও আয়াশ
ওয়্যারড্রোব: অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top