বাংলাদেশে ২৮ বছর উদযাপনে প্রথমবারের মতো ‘পেমেন্ট সামিট’-এর আয়োজন করেছে গ্লোবাল পেমেন্ট ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘মাস্টারকার্ড’। এ উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দিনব্যাপী কর্মশালা ও গালা অ্যাওয়ার্ড নাইটের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের ২৮ বছরের গৌরবময় পথচলা তুলে ধরা হয়।
প্রায় তিন দশকের এই পথচলায় নগদ অর্থ লেনদেন ছাড়াই দেশে দক্ষ ও নিরাপদ পেমেন্ট পরিমণ্ডল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। ‘মাস্টারকার্ড পেমেন্ট সামিট ২০১৯’-এ দেশের শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বিশিষ্ট ব্যক্তি, ব্যবসায়ী নেতৃ, উচ্চপদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ী মহলের ব্যক্তিরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যদের মধ্যে মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ছাড়াও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মাস্টারকার্ডের পার্টনার ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশের শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মাস্টারকার্ড পেমেন্ট সামিট ২০১৯-এ স্টেকহোল্ডারদের জন্য দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে মাস্টারকার্ড কার্ডহোল্ডারদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে নিরাপদে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও দক্ষতার বিষয়টিতে আলোকপাত করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষত আইসিটি ও ই-কমার্স শিল্পে সেরা পেমেন্ট সেবা প্রদানসহ বিভিন্ন অবদান রাখার মাধ্যমে সরকারের ‘ভিশন-২০২১’ অর্জনে মাস্টারকার্ড যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সে বিষয়টিও কর্মশালায় তুলে ধরা হয়।
কর্মশালা শেষে ‘গালা নাইট অ্যাওয়ার্ডে’র আয়োজন করা হয়। এসময় মাস্টারকার্ডের পার্টনার সেরা ব্যাংকগুলো যারা ব্যবসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও নানান সেবা দিয়ে ‘নগদবিহীন’ সমাজ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। গত ২৮ বছরে বাংলাদেশের ২০টি ব্যাংকের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করেছে মাস্টারকার্ড। ব্যাংকগুলো হচ্ছে এবি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক লি., ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক লি., ইসলামী ব্যাংক লি, লংকা-বাংলা ফিন্যান্স, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লি., ন্যাশনাল ব্যাংক লি., এনসিসি ব্যাংক লি., প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক লি., সাউথ-ইস্ট ব্যাংক লি., স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের মাননীয় সিনিয়র সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার আইসিটি, আর্থিক ও অর্থপ্রদান শিল্পসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন এবং নতুনত্ব আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বায়নের এই যুগে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সরকারের এজেন্ডার সাথে সামঞ্জস্যতা রাখে এমন যেকোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আমি বিশ্বাস করি মাস্টারকার্ড একটি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড হিসেবে বিগত ২৮ বছর ধরে পেমেন্টের নতুনত্ব, ডিজিটালাইজেশন এবং সবাইকে ডিজিটাল লেনদেন এর আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের সাথে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে যা সবার জন্য ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে।’
মাস্টারকার্ড, বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, “প্রথম ‘পেমেন্ট সামিটে’র মাধ্যমে বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের ২৮ বছরের সাফল্যপূর্ণ পথচলা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি উদযাপনের এই আনন্দঘন মুহূর্তটি আমাদের পার্টনার প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ভাগাভাগি করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। যাত্রার শুরু থেকে আর্থিক লেনদেনকে আরও নিরাপদ ও সহজ করে এদেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। নতুন নতুন উদ্ভাবনীর মধ্য দিয়ে এদেশের আর্থিক লেনদেনকে আরো সহজ ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে মাস্টারকার্ড। ‘লেস-ক্যাশ’ সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পেরে আমরা আনন্দিত।”