আলাপন I হৃদয়গ্রাহী হয়ে ওঠার মধ্যেই গানের সার্থকতা- শেখ সাদী খান
শুদ্ধসংগীত তার রক্তে বহমান। সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ছিলেন জেঠামশাই। বাবা ওস্তাদ আয়েত আলী খান উপমহাদেশের আরেক প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ। তার হাতেই সংগীতে হাতেখড়ি দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুরকার, চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খানের। মেজ ভাই সর্বভারতীয় প্রখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ বাহাদুর খানের সান্নিধ্যে উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নিয়েছেন তিনি। বিশ শতকের মাঝামাঝি তার জন্ম। শৈশব থেকে সংগীতই তার ধ্যানজ্ঞান। এখনো তারুণ্যোদ্দীপ্ত। সুরের সাধনায় কাটাচ্ছেন প্রতিটি দিন। ক্লান্তিহীন। নিয়মিত অনুষ্ঠান করছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে। সুর দিচ্ছেন নিত্যনতুন লিরিকে। তিনি অর্জন করেছেন একুশে পদক। এই ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দিয়েছেন ক্যানভাসকে। বলেছেন তার সংগীতজীবন, এই সময়ের সংগীত নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ
কোটি মানুষের হৃদয়ে গেঁথে থাকা অসংখ্য গানের সুরকার শেখ সাদী খান। ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপনের রাত’, ‘ডাকে পাখি খোলো আঁখি,’ ‘জীবন মানে যন্ত্রণা’, ‘তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে ফুল নিতে আসতে’- কালজয়ী এসব গান আছে এ তালিকায়।
মুখোমুখি বসে বললেন, ‘প্রতিদিনই কমবেশি রেকর্ডে যেতে হয়। করোনার কারণে অনেক দিন বাইরে যাওয়া হয়নি। জমে থাকা কাজগুলো এখন করতে হচ্ছে। কী নিয়ে কথা বলতে চাও?’
ক্যানভাস: আপনার সংগীতজীবন সম্পর্কে শুনতে চাই শুরুতে। সুরের তারে বাঁধা পড়লেন কীভাবে?
শেখ সাদী খান: সংগীত পরিবারের সন্তান আমরা। সে কারণে ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি আকর্ষণ ছিল। এ ছাড়া আমার ধমনিতে সংগীতের রক্ত বইছে। জন্মগতভাবে এটাও সুরের প্রতি আগ্রহের অন্যতম কারণ। পরিবারের ছেলেদের সংগীতের রেওয়াজটা নিতে হবে- এটা ছিল পারিবারিক ঐতিহ্যের ব্যাপার। আমাদের বলা হতো, তুমি যা কিছুই করো, সংগীতটা শিখো। ছোটবেলা থেকেই তালিম পেয়েছিলাম বাবার কাছে। তবলায়। এটা সবারই প্রয়োজন। তালের তালিম। তাল যদি জানা না থাকে, সংগীতের যেকোনো শাখায় বিচরণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। তাল না থাকলে বেতাল হয়ে যেতে পারে। সে জন্য পরিবারে প্রথমেই আমাদের তালযন্ত্রে হাতেখড়ি দেওয়া হয়।
ক্যানভাস: আপনি যখন বাবার কাছে তবলার তালিম নিলেন, সেটি কত বছর বয়সে?
শেখ সাদী খান: এটা ১৯৫৭-৫৮ সালের কথা। তখন আমি স্কুলে যাই, কুমিল্লায়। আমার জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এর কিছুদিন পরেই বাবা কুমিল্লায় বসবাসের সিদ্ধান্ত নিলেন। সেখানে বাড়ি কিনলেন। ওখানে, বাসাতেই একটি সংগীতের স্কুল করলেন। সেখানে অনেক ছাত্র-ছাত্রী উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নিত। ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের প্রতিযোগিতায় তবলা বাজিয়ে প্রথম হয়েছিলাম। বই পুরস্কার পেয়েছিলাম। বই দুটোর নাম এখনো মনে আছে- ‘আজব দেশে এলিস’ ও ‘পাহাড়ের বন্ধু’।
ক্যানভাস: বেহালায় তালিম নিলেন কখন?
শেখ সাদী খান: কিছুদিন পর, আমি যখন অষ্টম শ্রেণি পাস করি, তখন আমাকে বলা হলো, দেখো, আমাদের পরিবারের কেউ বেহালা বাজায় না। যন্ত্রটা শেখো তুমি। আমার ভাইদের মধ্যে কেউ বেহালা বাজাতেন না।
ক্যানভাস: আপনার ভাইদের সংগীতচর্চা সম্পর্কে শুনতে চাই…
শেখ সাদী খান: আমার বড় ভাই ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান সেতার বাজাতেন। পরে তিনি সরোদ ও ম্যান্ডোলিন বাজিয়েছেন। ওস্তাদ বাহাদুর খান সর্বভারতীয় প্রখ্যাত সরোদবাদক। পরলোকগমন করেছেন। পরের দিকে তিনি আমার গুরু। আমাকে বেহালা শিক্ষা দেন। চলচ্চিত্রের গানের ভালো কম্পোজারও ছিলেন। ঋত্বিক ঘটকের সব ছবিতে তিনি সংগীত পরিচালক ছিলেন। যেমন ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘সুবর্ণ রেখা’, ‘গরম হাওয়া’, ‘যে যেখানে দাঁড়িয়ে’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উল্লেখযোগ্য। আমার তৃতীয় ভাই মোবারক হোসেন খান। তিনিও সংগীতের তালিম পেয়েছিলেন। সুর বাহার বাজাতেন। রেডিওতে অনুষ্ঠান করতেন। কিন্তু তিনি সংগীতকে পেশা হিসেবে নেননি। সরকারি চাকরি করতেন। তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে তিনি শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হয়েছেন। লেখালেখিতে পারদর্শী ছিলেন। শ খানেক বই লিখেছেন সংগীত ও সংগীতসাধকদের নিয়ে। তিনি একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন। তার পরের ভাই আমি। আমার পরে আরেকটি ছোট ভাই ছিল। তানসেন খান। সে-ও ভালো সুরকার ছিল। ১০/১২ বছরের বেশি হয়ে গেল, পরলোকগমন করেছে। গিটার বাজাত ভালো। এ ছাড়া কি-বোর্ড, রিদম বক্সও বাজাতে পারত। কয়েকটি চলচ্চিত্রেও সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছে। শেষে আরেকটা ছোট ভাই আছে। বিটোফেন খান। তারও বয়স ৫৬ বছর হয়ে গেছে। সে বাংলাদেশ বেতারে চাকরি করে। স্টাফ আর্টিস্ট। গিটার বাজায়। আমি আর সে-ই বেঁচে আছি।
ক্যানভাস: উচ্চাঙ্গসংগীতের পাশাপাশি লোকসংগীতে এলেন। এর পেছনের গল্পটা যদি বলতেন…
শেখ সাদী খান: উচ্চাঙ্গসংগীত থেকে আমি লোকসংগীতে আকৃষ্ট হয়েছিলাম। কারণ, এ দেশে উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রতি যে মূল্যায়ন বা সম্মান, সেটুকু আমি কম দেখতে পেয়েছি। এ কারণে আমার একটা ভয় ছিল, উচ্চাঙ্গসংগীত নিয়ে সাধনা করলে হয়তো অর্থকড়ির দিক থেকে প্রকৃত সম্মান পাব না। তখন মিডিয়া ছিল দুটি। স্বাধীনতার পরের কথা বলছি। প্রথম মিডিয়া ছিল বেতার। স্বাধীনতার আগে পাকিস্তান বেতার। সেখানে আমি যোগ দিয়েছিলাম। ক্ল্যাসিক প্লেয়ার হিসেবে। ভায়োলিনিস্ট হিসেবে। চট্টগ্রাম রেডিওতে। তিন থেকে চার বছর চাকরি করি সেখানে। তারপর ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান টিভিতে যোগ দিলাম।
ক্যানভাস: টিভিতে কোন পদে যোগ দিলেন?
শেখ সাদী খান: ভায়োলিন-বাদক ও সুরকার হিসেবে। চলচ্চিত্রে কাজ করতাম। ছবির গানে যন্ত্র বাজাতাম। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করতাম। আস্তে আস্তে ওখানে বেশি আগ্রহী হলাম। কারণ, ওখানে প্রতিদিন রেকর্ড হলে ভালো আয় হতো। ওই সময় টেলিভিশনে বেতন পেতাম আড়াই শ টাকা। ছবিতে দুটো দল ছিল। মিউজিশিয়ানস গ্রুপ। একটা ছিল ঢাকা অর্কেস্ট্রা। এটা পরিচালনা করতেন ধীর আলী মিয়া। আরেকটা গ্রুপ ছিল আলাউদ্দিন অর্কেস্ট্রা। এটা পরিচালনা করতেন ওস্তাদ খাদেম হোসেন। তিনি আমার চাচাতো ভাই। সেতার বাজাতেন। তো ওই সময় ছবিতে বাজাতে গিয়ে সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশের বাসনা তৈরি হলো।
ক্যানভাস: আপনার প্রথম সুর করা গানের রেকর্ড বের হয় কবে?
শেখ সাদী খান: স্বাধীনতার আগেই বেরিয়েছে। পাকিস্তান এইচএমভি থেকে। মোবারক হোসেন খানের স্ত্রী ফৌজিয়া খানের কণ্ঠে। তিনি ওই সময়ের একজন জাঁদরেল গায়িকা ছিলেন। তারা পাঁচ বোন। ফরিদা ইয়াসমীন সবার বড়। তারপর ফৌজিয়া ইয়াসমীন (ফৌজিয়া খান), মঞ্জু, নীলুফার ইয়াসমীন এবং শেষ বোন সাবিনা ইয়াসমীন। ১৯৬৭ সালের দিকে আমার ভাই যখন করাচিতে প্রশিক্ষণে গেলেন, সঙ্গে ভাবিও গিয়েছিলেন, তখন পাকিস্তান এইচএমভি থেকে তার রেকর্ড বের হয়। এক পিঠে ছিল আমার, আরেক পিঠে দেবু ভট্টাচার্যের একটা গান। গানটি ছিল, ‘আমি নূপুর পরা ঝরনাধারা’। আমার সুর করা গানটি লিখেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ‘যা যারে যা পাখি; কেন তোরে বেঁধে রাখি’। আমার গানের মিউজিক করেছিলেন পাকিস্তানের অনেক বড় পন্ডিত নার্থু খান। তিনি খুব ভালো কম্পোজার ছিলেন। সারেঙ্গি বাজাতেন।
ক্যানভাস: পরে আরও কয়েকটি গান করার সুযোগ পেয়েছিলেন পাকিস্তান এইচএমভি থেকে…
শেখ সাদী খান: হ্যাঁ, ১৯৬৯ সালে হিজ মাস্টার ভয়েস (এইচএমভি) পাকিস্তান-ইস্ট পাকিস্তান আমাকে আরও চারটি গান করার সুযোগ দেয়। ওই সময় মুজিবুর রহমান সাহেব আমাকে ভালোবাসতেন। তখন আমার বয়স ১৯ বছর। যেহেতু মাঝেমধ্যে এইচএমভিতে বাজাতে যেতাম। তখন তাকে বললাম আমাকে একটু সুযোগ দেওয়ার জন্য। তখন তিনি বললেন, আপনি সুর করে শোনান। পরে আমি চারটি গান সুর করি। এর মধ্যে ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের দুটি গান ছিল। তখন শওকত হায়াত খানকে দিয়ে গান করাই। তারপর মৌসুমী কবিরকে দিয়ে দুটি গান করালাম। একটা গান লিখেছিলেন মোহন লাল দাস। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের, সংগীত প্রযোজক। আবার গানও লিখতেন। আরেকটা গান নিয়েছিলাম আমার বন্ধু কাওসার আহমেদ চৌধুরীর কাছ থেকে। এই চারটি গান দিয়েই প্রথম আমার ডিস্ক এইচএমভি থেকে বের হয়। তখন থেকেই আমি সুরকার হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকি।
ক্যানভাস: টিভিতে আপনার প্রথম অনুষ্ঠান হয় কবে?
শেখ সাদী খান: ১৯৬৯ সালের শেষ দিকেই টেলিভিশনে প্রথম প্রোডাকশন করি। তখন সুরবিতান এবং সুরসাগর নামে দুটি গানের অনুষ্ঠান হতো। সুরসাগর অনুষ্ঠানে প্রযোজককে অনেক বলে-কয়ে একটা অনুষ্ঠান নিলাম। শিল্পী ছিলেন আব্দুল জব্বার ও আরতি ধর। এর মধ্যে আব্দুল জব্বারের একক গান করেছিলাম দুটি। গান দুটি লেখা ছিল গাজী মাজহারুল আনোয়ারের। আর আরতি ধরকে দিয়ে দুটি। দুজনকে দিয়ে একটা যৌথ গানও করিয়েছিলাম। ওইটাই আমার টেলিভিশনে প্রথম অনুষ্ঠান। এটা তখনকার অবজারভার পত্রিকার জরিপে সেরা সংগীতের অনুষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল।
ক্যানভাস: রেডিও, টেলিভিশন ছাড়া অন্য মাধ্যমে কাজ করেছেন কি না?
শেখ সাদী খান: আমি ডান্স ড্রামার মিউজিকও করেছি। শিল্পকলা একাডেমিতে যুদ্ধের ওপরে- ‘অম্লান সেই দিন’। শহিদুল ইসলামের লেখা। এটা মঞ্চায়নও হয়েছে। যার ইংরেজি নাম দিয়েছিলাম ‘দোস আর দ্য ডে’স।’ আরও একটা কম্পোজিশন করেছিলাম ১৮-২০ বছর আগে। এটা লাইভ করেছিলাম। রেডিওতে ব্রডকাস্টিং করেছিলাম। ‘দ্য সিজনস অব বাংলাদেশ’। বাংলার ষড়ঋতুকে আমি এক প্ল্যাটফর্মে সুর-ঝংকারে উপস্থাপন করেছি। সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিভিশনে এটি নতুন আঙ্গিকে সম্প্রচার করা হয়েছে।
ক্যানভাস: নতুন আরও কিছু করার পরিকল্পনা কি আছে?
শেখ সাদী খান: অবশ্যই আছে। কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতাটা ডান্স ড্রামা করতে চাই। কবিতাও থাকবে, ডান্স থাকবে। এ জন্য আমার আর্থিক পৃষ্ঠপোষণ দরকার। এর বাইরে যন্ত্রসংগীত নিয়ে কিছু কাজ করে যেতে চাই।
ক্যানভাস: এখন বাংলা আধুনিক পুরোনো গানের যে ফিউশন হচ্ছে, প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের সঙ্গে গাওয়া হচ্ছে। এটিকে কীভাবে দেখছেন?
শেখ সাদী খান: এটা একটা গিমিক (চটকদার বিষয়) তৈরি হচ্ছে। আমরা ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ ব্যবহার করছি। কিন্তু গানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় অর্কেস্ট্রেশনে। একটা গানকে পূর্ণতা এনে দেয় অর্কেস্ট্রেশন। যেমন আমি একটি কন্যাকে যখন বিয়ে দিব, বিয়ের আসরে যখন নিয়ে যাই, তখন সৌন্দর্য পরিপূর্ণভাবে প্রকাশের জন্য সাজাই। গানটাও এমন। গানের মেলোডিকে পরিপূর্ণ সাজানোর জন্য অর্কেস্ট্রেশন করা হয়। এতে ড্রামাও থাকে। এখানে একটা ইলেকট্রিক গিটার দিয়ে ধুম-ধাড়াক্কা বাজিয়ে দিলাম, এটা তো নয়েজ তৈরি হলো। গান তো নয়েজ নয়। গান হচ্ছে প্রশান্তির ব্যাপার। গান শোনার পর যদি মানুষের হৃদয়ে না লাগে, ইন্দ্রিয়গ্রাহী না হয়, তাহলে তো এর সার্থকতা নেই। গানের কথাগুলো তো মানুষের জীবনকথা। কোনো না কোনো মানুষের জীবনের সঙ্গে মিলে যায়। গান তো হতে পারে সমাজের কথা, উদ্দীপনার কথা। এটা যদি ব্যাহত হয়, তাহলে আমি কবিতা পড়লেই পারি! বাংলা গান মেলোডি নিয়ে তৈরি করতে হয়। এই মেলোডি যদি মানুষ ইন্দ্রিয়তে নিতে পারে, সেটা মনেও থেকে যায়, হৃদয়েও থাকে। মাথায় এ নিয়ে একটা চিত্রকল্পও তৈরি হয়। এটাই গানের সার্থকতা।
ছবি: মো. রাকিবুল হাসান