কুন্তলকাহন I মারমেইড ওয়েভ
তরঙ্গায়িত চুল। ঝটপট লুক বদলে ফেলার সহজ উপায়। তাতেই আবেদনময়
পুরোনো হলেও নতুন করে আলোড়ন তুলেছে মারমেইড হেয়ারস্টাইল। অনেকেই চান অভ্যস্ততা থেকে বেরিয়ে চুলে নতুন লুক তৈরি করে নিতে। সে ক্ষেত্রে পুরোনো হেয়ারস্টাইল হলেও ক্ষতি নেই।
মারমেইড হেয়ারস্টাইল চুলকে তরঙ্গায়িত করার পদ্ধতি। ১৯৭২ সালে জেরি কুজেনজার ক্রিম্পিং আয়রন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে এর শুরু হয়। তবে ১৯৮০ সালের মধ্যভাগে এটি মূলধারার জনপ্রিয়তায় আসে। আর এখন পর্যন্ত তা নানান আঙ্গিকে নতুন নতুন রূপে ট্রেন্ডে টিকে আছে। বিচ ওয়েভও বছরের পর বছর ট্রেন্ডের চূড়ায় থেকে গেছে। তবে এই গরমে সমুদ্রপ্রাণিত এই নতুন স্টাইল এসেছে সব কেতা নাড়িয়ে দিতে।
দ্য লিটল মারমেইড, অ্যাকোয়ামারিন, স্প্ল্যাশ- মারমেইডের কথা এলেই মন আচ্ছন্ন হয় আর ফিরে যায় অতীতে। একটা সময় অনেকেরই স্বপ্ন থাকে পৌরাণিক কাহিনিতে বর্ণিত সুন্দর লম্বা, ঢেউ খেলানো চুল, সিশেল জুয়েলারি- এমন লুকে নিজেকে দেখার। গ্রীষ্মে শৈশবের সেই স্বপ্ন অনুভব করা যেতে পারে, অন্তত চুলের স্টাইলিংয়ে। সৌন্দর্য ও ফ্যাশন জগতে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়। কিন্তু কিছু স্টাইল কখনো পুরোনো হয় না। এখন মারমেইড ওয়েভস বছরের অন্যতম বড় হেয়ারস্টাইল ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। এটি ন্যাচারাল, ফ্লার্টি ও লম্বা বা ছোট যেকোনো চুলেই মানিয়ে যায়।
চুলের অবয়বে আর বিন্যাসে এটি যোগ করে ভিন্নমাত্রা। চুলের ভলিউম বাড়িয়ে দেয় বলে মুখাবয়বের লুক এই স্টাইলিংয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মুখের গঠনের সঙ্গে কোন স্টাইলটি ভালো দেখাবে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার একটা সেরা উপায়ও বলা যায় একে। যদিও ছোট এবং ডিম্বাকৃতির মুখাবয়বের জন্য মারমেইড হেয়ার আদর্শ। তবে যেকোনো ধরনের ফেসের সঙ্গে এটি ভালো মানাবে, যদি সঠিকভাবে স্টাইলটি প্রয়োগ করা যায়। সম্পূর্ণ বা কয়েক গোছা চুল নিচের দিকে বাঁকিয়ে স্টাইলটি করে নেওয়া যায়। শুধু খেয়াল রাখতে হবে মুখাবয়বের সঙ্গে তা মানানসই কি না। মারমেইড হেয়ার যে সব সময় খোলা রাখতে হবে, তা নয়। বিভিন্ন স্টাইলে বেঁধে নিলেও পাবে ভিন্নমাত্রা। রং করা এবং ব্যাংস কিংবা অন্য কোনো স্টাইলে চুল কাটা থাকলে সেই অংশ মারমেইড স্টাইলে টপনট কিংবা পনিটেইল করলে লুকটাই বদলে যাবে। পুরো চুল ঢেউয়ের মতো করে নিয়ে খোঁপা, বেণি বা যেকোনো ধরনের নট বেঁধে নেওয়া যায়। স্থায়ী কোনো পদ্ধতি নয় বলে এটি নিশ্চিন্তে করা চলে। মারমেইড হেয়ারের জন্য হট টুলস বা হাতবেণির সাহায্যে করে নেওয়া যেতে পারে। এই লুকে ভালো মানাবে। যদি হেয়ার ওয়েভার না থাকে, তবে লুকটি পেতে স্ট্রেইটনার ব্যবহার করা যায়। সাধারণত ক্রিম্পিং আয়রনে স্টাইলটি করা হয়। এর সঙ্গে সরু, মোটা বিভিন্ন ডিজাইনের ক্রিম্পিং প্লেট থাকে। এগুলো থেকে পছন্দেরটি বেছে নেওয়া যায়। অনুসরণ করতে হবে কিছু নিয়ম-
মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ব্যবহার করতে হয় ভালো কোনো ময়শ্চারাইজিং কন্ডিশনার
ঠান্ডা পানিতে চুল ধুয়ে ফেলার পর তোয়ালে দিয়ে যতটা সম্ভব শুকনো করে মুছে নিতে হবে
চুল ভেজা থাকা অবস্থায় ভালো ব্র্যান্ডের হিট-প্রটেক্টেড স্প্রে দিয়ে সম্পূর্ণ চুলে স্প্রে করে নিতে হবে। বেশি ভলিউম চাইলে এনহ্যানসিং জেল ব্যবহার করা যেতে পারে
এরপর চুল শুকিয়ে নিতে হবে
এবার ক্রিম্পিং আয়রন দিয়ে ছোট ছোট ভাগে, একটু পরপর কিংবা নির্দিষ্ট কোনো অংশে পছন্দমতো স্টাইলে চুলে ঢেউ করে নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে আয়রনের বড় ভাঁজের প্লেটটি ব্যবহার করতে হবে
ক্রিম্পিং আয়রনটি কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত আয়রনটির নির্দেশিকা মেনে চলা জরুরি
চুলে হিট দিতে না চাইলে বেণি করে বা রোলার ক্লিপ দিয়েও কাজটি করে নেওয়া যায়। ক্লিপ আটকে বা বেণি করার পর হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করতে হবে
এবার চুল ছেড়ে রাখা কিংবা বেঁধে নেওয়া যায় পছন্দের কোনো স্টাইলে। হেয়ার অ্যাকসেসরিজের সংযোজন একে করে তুলবে আরও অনবদ্য।
তাসমিন আহমেদ
মডেল: জুই
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ইভান সরদার