skip to Main Content

ফিচার I উৎসবোত্তর

উৎসবের পূর্বাপর যে উপদ্রব ত্বকে দেখা দেয়, সেটি থেকে তো রক্ষা পেতে হবে। তার জন্য রয়েছে সহজ কিছু দাওয়াই

বিয়ের ডামাডোলে আমরা ত্বকের কথা ভুলে যাই। অথচ এরই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। তা মূলত বিয়ের দিন কয়েকের উপর্যুপরি মেকআপের প্রভাবেই। এর ফলে ত্বকে টক্সিনের উপদ্রব বেড়ে যায়। এ ছাড়া ত্বক বিশ্রামও কম পায়; ফলে মলিন, অমসৃণ হয়ে ওঠে। তাই প্রয়োজন ডিটক্সিফিকেশন।
ড্রাই ব্রাশিং
এটি মৃতকোষ ঝেড়ে ফেলে এবং আটকে থাকা টক্সিন দূর করে। ত্বকের সেলুলাইট কমাতেও সাহায্য করে। এর ফলে লিমফেটিক সিস্টেম এবং ত্বকের নিচের রক্তসঞ্চালন ত্বরান্বিত হয়, যাতে করে সতেজ রক্তের প্রভাবে টক্সিন আরও দ্রুত বের হয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো ফলের জন্য গোসলের সময় ড্রাই ব্রাশিং করে নেওয়া যায়। একটি স্বাভাবিক ব্রিসলের ব্রাশ ব্যবহার করে আলতো করে ত্বকের ওপরে ঘষতে হবে। প্রতিটি অংশের ২-৩ মিনিটের ব্রাশিংই যথেষ্ট। তবে শরীরের কোনো অংশে র‌্যাশ কিংবা জ্বালাপোড়া থাকলে এই প্রক্রিয়া সেখানে প্রযোজ্য নয়।
স্টিমিং
ত্বকের পোর খুলে দিয়ে তার থেকে ময়লা বের করে আনার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। যদি স্টিম শাওয়ার না থাকে, তবে একটি স্পা স্যালনে যাওয়া যায়, যেখানে এটি নেওয়ার সুবিধা আছে। অন্তত ১০ মিনিট স্টিম নিতে হবে। ত্বকের আলগা হয়ে যাওয়া ময়লা কিংবা মৃতকোষ সরাতে এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে।
ডিপ ক্লিনজিং
মুখের আনাচকানাচে জমে থাকা ময়লা ভেতর থেকে পরিষ্কার করার জন্য ডিপ ক্লিনজিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাকৃতিক বা রাসায়নিকমুক্ত এবং পিএইচ ব্যালান্স-সমৃদ্ধ ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে। ডিপ ক্লিনজিং ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলে ত্বকের পোরগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
ডিটক্স বাথ
ইপসাম সল্ট ত্বকে লুকিয়ে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে সক্ষম। গোসল করার সময় শাওয়ার জেলের সঙ্গে খানিকটা এই লবণ যোগ করে দিতে হবে। আরও কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলো গোসলের সময় ডিটক্সিফিকেশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। আদা ত্বকের র‌্যাডিক্যাল ড্যামেজ কমাতে সাহায্য করে। তাই আদাকুচি করে তা ইপসাম সল্টে মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে গোসলের পানিতে মেশানোর আগে।
গেট মাডি
মাড মাস্ক আপনার ত্বকের পোরগুলো খুলে লুকানো ধুলো-ময়লা বের করতে সাহায্য করে। এর সবচেয়ে বড় গুণ হলো, এগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। ত্বকের ধরন এবং প্রয়োজন বুঝে প্যাকে দেওয়া নির্দেশনা বুঝে এটা ব্যবহার করতে হয়। দেহত্বকজুড়ে পুরু স্তর লাগিয়ে নিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্টিম নিতে হবে। এতে ত্বকের পোরগুলো খুলে মাড মাস্কের উপাদানগুলো প্রবেশ করবে এবং এগুলো ভেতর থেকে ত্বককে ডিটক্সিফাই করবে। ৫ মিনিট স্টিম নেওয়ার পরই মাস্কটি ধুয়ে ফেলতে হবে।
চুলের ডিটক্স
বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর সময়ই চুলে আমরা যত সব ফ্যান্সি স্টাইলিংয়ের চিন্তাভাবনা করি। সে কারণেই চুলে বিভিন্ন ধরনের মুজ, জেল কিংবা স্প্রের ব্যবহার করা হয়। আর শ খানেক ক্লিপ তো আছেই! এই সবকিছু খুলতেই চুলের স্বাস্থ্যের বেজে যায় বারোটা। তাই বিয়ের পর্ব মিটে গেলে কিছুদিনের জন্য চুলকে যেকোনো ধরনের কেমিক্যাল প্রডাক্ট বা স্টাইলিং থেকে দূরে রাখতে হবে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিও এড়াতে হবে। চুল এবং স্ক্যাল্পকে বিশ্রাম দিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন চুলের ডিটক্সিফিকেশন জরুরি।
৩-৪ দিন পরপর স্ক্যাল্পে তেল ম্যাসাজ করা চাই। অলিভ অয়েল কিংবা নারকেল তেল যেমন ক্ষতিগ্রস্ত চুলের ময়শ্চার ফিরিয়ে আনে, তেমনি জোজোবা অয়েল আবার স্ক্যাল্পের চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। ডিটক্সের জন্য সবচেয়ে কার্যকর নারকেল তেল আর ক্যাস্টর অয়েলের মিশ্রণ। একটি পাত্রে সমান পরিমাণে ক্যাস্টর অয়েল আর নারকেল তেল নিয়ে গরম করে নিতে হবে। এবার চুলের ডগায় এই মিশ্রণ খুব ভালো করে ম্যাসাজ করতে হবে। এবার একটি মোটা তোয়ালে নিয়ে তা গরম পানিতে চুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে নেওয়া চাই। এই ভেজা তোয়ালে দিয়ে এবার সম্পূর্ণ চুল পাগড়ির মতো ঢেকে রাখতে হবে। ৫ মিনিট। ৪-৫ বার এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি দরকার। এই হট টাওয়েল থেরাপি চুলের ডিটক্সের পাশাপাশি চুলের আগা ফাটার সমস্যাও কমিয়ে নিয়ে আসে।
সপ্তাহে এক দিন ৩:১ অনুপাতে গরম পানি আর বেকিং সোডার মিশ্রণ মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে। স্ক্যাল্পে জমে থাকা তেল দূর করার জন্য। ব্যবহার করা যেতে পারে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারও। এক কাপ গরম পানিতে ২ টেবিল-চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহারের পর এটি চুলে ঢালতে হবে। ধোয়া বারণ। স্বাভাবিক নিয়মে চুল শুকিয়ে নিতে হবে। হেয়ার ডিটক্সের খুব সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি এটি।

i শিরীন অন্যা
মডেল: সাথী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top