সেলুলয়েড I মেমোরিয়া
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা:
আপিচাটপং ভিরাসেথাকুল
অভিনয়: টিলডা সুইনটন, এলকিন ডিয়াজ, হুয়ান পাবলো উরেগো
সময়ব্যাপ্তি: ১৩৬ মিনিট
ভাষা: ইংরেজি, স্প্যানিশ
দেশ: থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া
পাম ডি’অরজয়ী থাই মাস্টার ফিল্মমেকার আপিচাটপং ভিরাসেথাকুলের সর্বশেষ উপহার ‘মেমোরিয়া’। এই প্রথম নিজ দেশের বাইরে ফিচার ফিল্ম বানিয়েছেন তিনি। শুটিং করেছেন কলম্বিয়ায়। এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র জেসিকা হল্যান্ড (টিলডা সুইনটন) এক্সপ্লোডিং হেড সিনড্রোম (ইএইচএস) বা ঘুমের মধ্যে জোরালো আওয়াজ শোনার বিরল মানসিক রোগে আক্রান্ত। সেই শব্দের উৎসের খোঁজে তার বিচরণ। সেই অন্বেষণ তাকে নিয়ে যায় কলম্বিয়ার শহুরে জীবন থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তাকে মুখোমুখি করে এক মহাজাগতিক বিস্ময়ের। শুধু মানবজীবন নয়, স্বয়ং মহাজগতেরই কী তাৎপর্য, কীভাবে কাজ করে এর মৌলিক নিয়মগুলো, কোথা থেকে আসে আর কোথায় মিলিয়ে যায় সবকিছু—এমন অমীমাংসিত নিগূঢ় প্রশ্নের অনুসন্ধান চলে ‘মেমোরিয়া’জুড়ে।
চলচ্চিত্রকারের এক সাক্ষাৎকারসূত্রে জানা গেছে, তিনি নিজেও একসময় ইএইচএসে ভুগেছেন। আর সেই অসুখই তাকে জুগিয়েছে এমন সিনেমা বানানোর প্রেরণা। ‘মেমোরিয়া’য় জেসিকার মগজে গেঁথে থাকা উচ্চকিত শব্দটিকে শ্রবণযোগ্য করে তোলার প্রয়াস চালিয়েছেন আপিচাটপং, যেন ওই নারীর সংবেদনের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করতে পারেন দর্শকও।
শব্দের উৎসের সন্ধানে একসময় জেসিকাকে দেখা যায় এক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকেন্দ্রে হাজির হতে। সেখানে বহুকাল আগের মৃত এক মানুষের খুলির সামনে দাঁড়িয়ে, খুলিটির ফুটোয় নিজের আঙুল রেখে যেন কাল-মহাকালের এক সংযোগ অনুভব করে সে। এ প্রসঙ্গে আপিচাটপং জানান, সিনেমাটি বানানোর সময় প্রেম, বিচ্ছেদ, মৃত্যু ও অসুস্থতা ঘিরে নিজের বিষয়-আশয়ের ভেতর দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। ‘অতীতকালে লোকে বিশ্বাস করত, মন্দ আত্মাগুলো আপনার মাথার ভেতরে আটকা পড়ে থাকে, তাই মৃত ব্যক্তির খুলি ফুটো করে দিয়ে সেগুলোকে মুক্তি দেওয়া দরকার। ইএইচএসে আক্রান্ত হলে আপনার মনে হতে থাকবে, যদি নিজের মাথাটা একদম খুলে ফেলে, ভেতরে আটকা পড়া ভয়ংকর জিনিসগুলো বের করে দেওয়া যেত! সেই একই ধরনের গরজবোধের অনুভূতি দর্শককে দিতে চেয়েছিলাম আমি,’ বলেছেন ফিল্মমেকার।
মগজে থাকা শব্দের উৎস-সন্ধান জেসিকাকে সিনেমাটির শেষার্ধে নিয়ে যায় এক প্রত্যন্ত জঙ্গলে। সেখানে বসবাস এক রহস্যময় লোকের। জীবনে কোনো দিনও শহরে যায়নি সে। প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্যে, প্রাকৃতিক উৎসের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জীবনকে বোঝার চেষ্টায় করে যাচ্ছে যাপন। তার সঙ্গে অল্প আলাপ আর অধিক নৈঃশব্দ্যযাপনের মধ্য দিয়ে মহাজাগতিক বোধের উন্মেষ ঘটাতে থাকে জেসিকা। এ-সংক্রান্ত কোনো উত্তর না দিয়ে, প্রশ্নের বোধ আরও গাঢ় করে তুলে শাশ্বত সত্যের বারতা রেখে শেষ হয় তারকোভস্কিধর্মী ল্যান্ডস্কেপ শটে সমৃদ্ধ ‘মেমোরিয়া’।
আরিফুল ইসলাম
কুইজ
১। আপিচাটপং ভিরাসেথাকুল কোন দেশি চলচ্চিত্রকার?
[ক] তাইওয়ান
[খ] কলম্বিয়া
[গ] থাইল্যান্ড
[ঘ] স্পেন
২। ‘মেমোরিয়া’র শুটিং হয়েছে কোন দেশে?
[ক] কলম্বিয়া
[খ] চীন
[গ] ভারত
[ঘ] ব্রাজিল
৩। চলচ্চিত্রটির কেন্দ্রীয় চরিত্র কোন রোগে আক্রান্ত?
[ক] ওসিডি
[খ] ইএইচএস
[গ] ক্যানসার
[ঘ] ডিপ্রেশন
গত পর্বের বিজয়ী
১. ফারজানা লিসা, বাড্ডা, ঢাকা
২. শাহরিয়ার আলম, বনানী, ঢাকা
৩. সুপ্রিয়া রায়, ওয়ারী, ঢাকা।