হোমগ্রোন I আড়ং আর্থ
পারসোনাল কেয়ার ও রূপচর্চা নিয়ে সৌন্দর্যসচেতনদের ধারণা পাল্টেছে। সম্প্রতি সৌন্দর্যবিশ্বের ঝোঁক পুরোটাই প্রকৃতিপ্রাণিত। গবেষণার মাধ্যমে ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক ও হারবাল পারসোনাল কেয়ার শিল্পবাজারের আকার ২৫ দশমিক ১ মিলিয়ন ইউএস ডলারের কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছাবে।
স্পষ্টতই এর প্রভাব পড়েছে দেশের সৌন্দর্য খাতেও। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড আড়ং আশির দশক থেকেই প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হারবাল স্কিন ও হেয়ার কেয়ার পণ্য বিক্রি করে আসছে। ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করার পাশাপাশি গুণগত মান এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক—উভয় জায়গায় ভোক্তাদের প্রয়োজন পূরণের পাশাপাশি বিশ্বস্ততা অর্জন করে নিয়েছে ইতিমধ্যেই। ভোক্তাদের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে আড়ং বরাবরই পণ্যের নতুন লাইন এবং সাব-ব্র্যান্ডের সংযোজনে এগিয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় বাজারে আসে আড়ংয়ের হারবাল হেয়ার এবং স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড ‘আড়ং আর্থ’। মূলত সৌন্দর্যসচেতন সব বয়সের নারী-পুরুষদের কথা মাথায় রেখেই চালু করা হয়েছে সেগমেন্টটি।
এই লাইনের প্রতিটি পণ্য প্রকৃতি ও মাটি থেকে প্রাপ্ত উপাদানে সমৃদ্ধ। যার পণ্যে রয়েছে প্রাচীন ও বহুল পরিচিত প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হলুদ, চন্দন, নিম ও অ্যালোভেরার মতো বহুল উপকারী উপাদানের ব্যবহার। তাই ‘ন্যাচারাল ও হারবাল’ পণ্যের এ লাইনের নাম রাখা হয়েছে ‘আড়ং আর্থ’।
আড়ং আর্থের হেয়ার ও ফেস প্যাক তৈরিতে শতভাগ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া অন্যান্য পণ্য যেমন সাবান, ফেসওয়াশ, ফেস মাস্ক, বডি স্ক্রাব, হেয়ার অয়েল ও শ্যাম্পুতে ব্যবহার করা হয় ত্বকবান্ধব প্রিজারভেটিভ; যা প্রাকৃতিক উপাদানের সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মিশিয়ে, উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে, নিরাপদ ও কার্যকরভাবে পণ্যগুলো উৎপাদন করা হয়। পণ্য তৈরিতে সর্বোচ্চ প্রাধান্য পায় ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যে উপাদানের পরিমাণ এবং কোন ফর্মুলায় ব্যবহার করা হয়েছে, তা সর্বাধিক গুরুত্ব পায়। পণ্য তৈরিতে সর্বোচ্চ মানের প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। তবে কোনো নির্ভরযোগ্য বা কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান পাওয়া না গেলে সে ক্ষেত্রে সিনথেটিক ডেরিভেটিভ (কৃত্রিম উপাদান) ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে আড়ং আর্থের ৭টি ক্যাটাগরির মোট ৩৪টি পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলোর কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রসেসিং, উৎপাদন, বিপণনসহ প্রতিটি পর্যায়ে কাজ করেন দক্ষ কর্মীরা। আড়ং আর্থের প্রতিটি পণ্য পাওয়া যাচ্ছে ৮০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।
সাবান পাওয়া যাবে ১০০-১৫০ টাকায়, বডি কেয়ারের নানা পণ্য মিলবে ৮০-২২০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া ফেস মাস্ক ২২০ টাকা, ফেস প্যাক ৮০-১০০ টাকা, হেয়ার প্যাক ১০০-১২০ টাকা, হেয়ার অয়েল ১৮০-৩০০ টাকা আর শ্যাম্পুর দাম রাখা হয়েছে ১৮০ টাকা।
আড়ং আর্থের পণ্যের প্যাকেজিংয়েও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি প্যাকেজিংয়ে এখনো কিছু সীমাবদ্ধতা আছে ব্র্যান্ডটির। সাধারণত ভার্জিন প্লাস্টিক এবং রিসাইকেল করা যায় এমন কাঁচামাল থেকে তৈরি হয় আড়ং আর্থের প্যাকেজিং। পাশাপাশি দু-তিনটি ধাপে নিশ্চিত করা হয় পণ্যের গুণগত মান এবং শেলফ লাইফ। তবে বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক এবং প্যাকেজিং নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। খুব শিগগির এই প্রযুক্তিগুলো প্যাকেজিংয়ে সম্পৃক্ত হবে বলে আশাবাদী আড়ং আর্থ।
ব্র্যান্ডটির প্রতিটি পণ্য রোজকার সৌন্দর্যচর্চায় দারুণ উপযোগী। প্রকৃতি ও মাটি থেকে প্রাপ্ত নিম, হলুদ, চন্দন, অ্যালোভেরা, আমলকী, রিঠা, শিকাকাই, মধু এবং কমলার মতো অসংখ্য উপকারী প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ এগুলো। কিছু পণ্য আবার সম্পূর্ণ হাতে তৈরি। যেমন প্রতিদিন ব্যবহার করা সাবানের কথাই ধরা যাক। হাতে তৈরি সাবানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার। লেমন গ্রাস, মধু, হলুদ, কমলা, আদা, নিমপাতা, রিঠা, নারকেল, ল্যাভেন্ডার ও দারুচিনি—এসব উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় সাবানগুলো। কাঁচামাল সংগ্রহের পর থেকে দু-তিন ধাপ পেরিয়ে। এতে ব্যবহৃত গ্লিসারিন সাধারণত সাবানের ভেতরেই রয়েছে। ফলে ত্বকের কোমলতা বজায় থাকে।
আড়ং আউটলেটের পাশাপাশি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম aarong.com-এর মাধ্যমে দেশ এবং দেশের বাইরে বিশ্বের ৬টি দেশে আড়ং আর্থের পণ্যগুলো পাওয়া যায়। ভোক্তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্র্যান্ডটিকে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ভবিষ্যতে নতুন নতুন ক্যাটাগরি ও পণ্য সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে ব্র্যান্ডটির। এ ছাড়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে একটি যুগোপযোগী রিজিওনাল হারবাল হেয়ার এবং স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আড়ং আর্থ।
বিউটি ডেস্ক
ছবি: আড়ং আর্