আড্ডা I নতুন চ্যালেঞ্জে ফ্যাশন ব্র্যান্ড
কোভিডের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংঘাত ও অন্যান্য কারণে নতুন করে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে বিশ্ব। ঈদ ও বৈশাখের প্রাক্কালে কীভাবে তা সামাল দিচ্ছে দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো। এই নিয়ে বিশেষ আড্ডা সঞ্চালনা করেছেন রুদ্র আরিফ
রুদ্র আরিফ: করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাব যখন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছিল, তখন বিভিন্ন সংঘাত ও নানা কারণে নতুন করে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সারা বিশ্ব। এই বাস্তবতায় আমাদের দেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির চিত্র কেমন? চ্যালেঞ্জ মূলত কোনগুলো? আপনারা কীভাবে কাজ করছেন?
মো. শাহরুম আলী সিকদার [এজিএম—সেলস, মার্কেটিং অ্যান্ড অনলাইন, ফিট এলিগ্যান্স]: প্যানডেমিক সিচুয়েশনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো। যাদের আগে থেকে অনলাইন সার্ভিস ছিল, তারা মোটামুটি সার্ভাইভ করতে পেরেছে। কিন্তু যারা শুধু অফলাইনে ছিল, তাদের জন্য টাফ হয়ে গেছে। বিশেষ করে, কর্মী ব্যবস্থাপনা করা একটু ঝামেলার হয়ে গিয়েছিল। অনলাইনের দিকে আগে কখনোই ফিট এলিগ্যান্সের ফোকাস ছিল না। ‘প্রচারেই প্রসার’—এমন বার্তায় আমরা বিশ্বাস করতাম না। বিশ্বাস করতাম দুটি ইস্যুতে—কাস্টমার সার্ভিস ও কোয়ালিটি। প্যানডেমিক সিচুয়েশনে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, সব কর্মীকে নিয়ে একসঙ্গে সার্ভাইভ করব। নিজেরা তো সার্ভাইভ করেছিই, প্রচুর ত্রাণও দিয়েছি। আর তা শুধু আমাদের কর্মীদেরই নয়, তাদের আশপাশের লোকজনকেও দিয়েছি। তখনই উপলব্ধি এসেছে, অনলাইনে অবশ্যই ফোকাস করতে হবে। ফিট এলিগ্যান্সের অনলাইন সার্ভিস এখনো আন্ডারডেভেলপিং।
দ্বিতীয়ত, ফিট এলিগ্যান্স সাধারণত স্যুট ও ব্লেজারের জন্য বেশি পরিচিত। অন্য প্রডাক্টও রয়েছে। স্যুটের বাইরে নারীদের ক্ষেত্রে আরও প্রয়োজন রেগুলার ওয়্যার; যেমন সালোয়ার, কামিজ, কুর্তি। এ জন্য ‘ফিমে’ নামে আরেকটি সাব-উইং তৈরি করেছি। মানে রেগুলার ওয়্যারেও জোর দিয়েছি। তৃতীয়ত, ‘জাদিদ’ নামে একটি এথনিক লাইন ক্রিয়েট করেছি, পাঞ্জাবির। এবার ঈদে আমাদের হিউজ একটা কালেকশন থাকবে সব আউটলেটে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা অনেকেই জানি না, ক্রাইসিসটা কী হবে, কী হচ্ছে। এখন যে রিসোর্সে আছি, সেটিকে আরেকটু ডেভেলপের পাশাপাশি সব ব্র্যান্ড একসঙ্গে কাজ করতে পারলে সার্ভাইভ করা সহজ হবে বলে মনে করি। প্যানডেমিকের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা কর্মীদের নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রস্তুত থাকার প্রশিক্ষণ দিচ্ছি মোটিভেট করার জন্য, স্কিল ডেভেলপের জন্য। অন্যদিকে, এবার ‘প্রচারেই প্রসার’ মন্ত্রের দিকে পা রাখব! কী হবে, কী হচ্ছে—চিন্তা না করে নেগেটিভটাই ধরে নিলে আমাদের প্রস্তুতি ভালো থাকবে বলে মনে করি। কেননা, পজিটিভ তো আমরা এখনো আছি। প্যানডেমিক এখনো পুরোপুরি রিকভার করতে পারিনি। তাই নতুন সংকট আরও খারাপ হবে ধরে নিয়েই প্রস্তুতি রাখছে ফিট এলিগ্যান্স।
শরিফুল ইসলাম [এজিএম, হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড হোম ডেলিভারি সার্ভিস; গ্রামীণ ইউনিক্লো]: প্যানডেমিক এখনো যায়নি। তবু তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই চলে গেছে, এখন নতুন আরেকটা চ্যালেঞ্জ চলে এসেছে। প্যানডেমিক সিচুয়েশনে সার্ভাইভ করার জন্য প্রতিটি ব্র্যান্ডই নিজ থেকে স্ট্যান্ড নেওয়ার চেষ্টা করেছে। গ্রামীণ ইউনিক্লোর মন্ত্র হচ্ছে কমফোর্টেবল। কমফোর্টেবল শপ, কমফোর্টেবল ক্লথ এবং কমফোর্টেবল লাইফ—এই তিন বিষয় নিশ্চিতে চেষ্টা করি। এ কারণে কয়েকটি আউটলেট বন্ধ করে দিয়েছি। কেননা কমফোর্টেবল শপকে যেখানে নিশ্চিত করতে পারব, সেখানেই বিজনেস কন্টিনিউর সিদ্ধান্ত আমাদের। কমফোর্টেবল ক্লথ নিশ্চিত করার চেষ্টা গ্রামীণ ইউনিক্লোর সব সময়ই থাকে। অন্যদিকে, কমফোর্টেবল লাইফের বিষয়টি কর্মী থেকে শুরু করে ক্রেতা—সবার জীবনের সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট। এ কারণে প্রত্যেক কর্মীর স্কিল ডেভেলপ করাটাও আমাদের স্ট্র্যাটেজির মধ্যে রয়েছে।
কোভিড বলি কিংবা বর্তমান পরিস্থিতি, শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপীই বেসিক ও ডেইলি—এই বিষয়গুলোর প্রতি ফোকাস বেশি চলে এসেছে। মানুষ কতটুকু বেসিক ওয়্যার পরবে, কতটুকু ডেইলি ওয়্যার পরবে, আবার অনেকে সাসটেইনেবিলিটির দিকেও চলে গেছে … এ জায়গাগুলো আগেও ছিল, তবে কোভিডের সময় থেকে ফোকাসে চলে এসেছে। সেই ট্রেন্ড এখনো এক্সটেন্ড হবে। যদি তা না করা যায়, তাহলে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষে টিকে থাকা চ্যালেঞ্জিং হবে।
এখন ইকোনমিক ক্রাইসিসের মোমেন্ট। হয়তো আমরা এবার সারা বছর এই পরিস্থিতিতে স্ট্রাগল করব। মানুষ এখন ফ্যাশনের চেয়ে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় প্রডাক্টে বেশি গুরুত্ব দেবে। ডেইলি ক্লদিংগুলোর ওপর বেশি ফোকাস করবে। এ জায়গা থেকে, কমফোর্টেবল তো আমাদের ব্র্যান্ড কনসেপ্ট ছিলই, এর সঙ্গে ক্যাজুয়াল, সিম্পল পোশাকগুলোও নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। যেমন প্রতিবছর থাকলেও এ বছর গ্রামীণ ইউনিক্লোর ঈদ কালেকশনে কোনো পাঞ্জাবি থাকছে না। আমরা টোটালি ক্যাজুয়াল ওয়্যারে ফোকাস করছি। ক্যাজুয়ালই আলটিমেটলি কমফোর্টেবল। মেয়েদের ক্ষেত্রেও সিম্পলিটিকে ফোকাস করেছি। সামনের দিনগুলোতেও ডেইলি ওয়্যারকে প্রমোট করব। কর্মীদেরও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে দক্ষ করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আমরা সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির ওয়েতে আগানোর স্ট্র্যাটেজি নিয়েছি এবং নিচ্ছি, যেন ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা যায়।
শাহীন চৌধুরী [ডিজাইনার ও স্বত্বাধিকারী; বালুচর]: বালুচরের ব্যবসা শাহবাগের আজিজ মার্কেটকেন্দ্রিক। একসময় ওই দিকে বৈশাখ ঘিরে বেশ ভিড়ভাট্টা ছিল। এখন বৈশাখ ও ঈদ একসঙ্গে হওয়ায় ওই অকেশনগুলো মিস হয়ে গেল। ফলে বৈশাখের যেসব আয়োজন, সেগুলোতে নাকি ঈদে ফোকাস করব, এ নিয়ে দোটানায় পড়ে গেছি। ঈদকেই বেশি প্রায়োরিটি দিচ্ছি। একটা সময় ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরাই আজিজ মার্কেটে শপিং করতেন। এখন কেমন যেন প্রডাক্ট লাইনটি অন্যদিকে চলে গেছে। একসময় দেশি কাপড়, তাঁতের কাপড়, খাদি কাপড় নিয়ে কাজ করা হতো। এখন এসব প্রডাকশন অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে হয়। এ ক্ষেত্রে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের যে রকম এফোর্ট দেওয়ার কথা ছিল, সেভাবে দেয়নি। ফলে আজিজ মার্কেটকেন্দ্রিক দেশীয় পোশাকের পসরার জোয়ার একটু থেমে গেছে। বৈশাখ বা উৎসবকেন্দ্রিক পোশাক মূলত এই মার্কেটেই পাওয়া যেত, ফলে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন; এখন তা ছড়িয়ে, ডিসেন্ট্রালাইজড হয়ে গেছে। তা ছাড়া এখন ওই সব প্রডাক্ট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে আমাদের ব্যবসার যে মূল বেইজ ছিল, সেটা হারাতে বসেছি। আমাদের ওখানকার অনেক পুরোনো ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। তা ছাড়া লক্ষ করছি, মানুষ এখন আর তাঁতের কাপড়, দেশি কাপড় পরতে চায় না। ঈদ মানেই যেহেতু অন্য রকম উৎসব, তারা চায় গ্লসি পোশাক পরতে। ফলে বিদেশি কাপড়গুলো চলে এসেছে। চীনা কাপড়, ভারতীয় কাপড়। আমাদের দেশি কাপড়গুলো ওই কাপড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারছে না। ওই কাপড়ের সঙ্গে আমাদের দেশি কাপড়ের দামে বেশ পার্থক্য থাকায় প্রডাক্ট লাইনে দেশি কাপড়ের দাম অনেক বেড়ে যাচ্ছে। অনেক ক্রেতা তাতে অভ্যস্ত হতে পারছেন না; কেননা, তারা ধরেই নেন, আজিজ মার্কেটে অনেক সস্তায় পোশাক পাওয়া যাবে। ফলে একটা সংকটের মুখে পড়ে গেছি আমরা। বড় বড় অনেক কোম্পানি চলে এসেছে ক্লদিং বিজনেসে। তার চাপ পড়েছে ছোট ছোট উদ্যোক্তার ওপর।
তা ছাড়া কোভিডের পরে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, দেশে ডলার ক্রাইসিস, ইমপোর্ট-এক্সপোর্টে তার নেচিবাচক প্রভাব—সব মিলিয়ে বেশ সংকটের মুখে আমরা। তবে আমি মনে করি, বিদেশ থেকে অবৈধ পথে রেডিমেড পোশাক যদি দেশে না ঢোকে, দেশীয় যে বাজার রয়েছে, আমরা ভালো করব। যদি তিন থেকে পাঁচ বছর দেশের ভেতরে শুধু দেশীয় প্রডাক্টগুলো বিক্রি করা গেলে ছোট ছোট উদ্যোক্তা দাঁড়াতে পারবেন। এদিকে সরকারের নজর দেওয়া দরকার। কেননা অবৈধভাবে যেসব পোশাক দেশে ঢোকে, সেগুলোর সঙ্গে প্রাইসিংয়ে প্রতিযোগিতা করে উঠতে পারব না।
ইয়াসমিন আক্তার [সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, মার্কেটিং; ক্লাবহাউস]: ক্লাবহাউস সব সময়ই সিজন বেইজড, থিম বেইজড কাজ করে। কোভিড সিচুয়েশনে ক্লাবহাউসের অনলাইন সার্ভিস থাকলেও অত ডেভেলপ ছিল না। কোভিড আসার কারণে আমাদের সব অফলাইন স্টোর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবকিছু অনলাইনে চলে আসে। কিন্তু অত জনবল কিংবা প্রসেস ডেভেলপ ছিল না বলে শুরুতে হিমশিম খেতে হয়েছে। আস্তে আস্তে অনলাইন ডেভেলপ করেছি। এখনো ডেভেলপ করছি, যেন স্টোরের পাশাপাশি অনলাইন থেকেও সহজেই কাস্টমার আমাদের প্রডাক্ট কিনতে পারেন।
এখন যে বাস্তবতা ফেস করছি, সাপ্লাই চেনের প্রবলেম হচ্ছে, ম্যাটেরিয়ালের প্রাইস বেড়ে গেছে, কিন্তু প্রডাক্টের দাম সেভাবে বাড়াতে পারছি না। পরিস্থিতির কারণে ম্যাটেরিয়ালের প্রাইস বাড়লেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তেমন বাড়েনি। যেহেতু কাস্টমার নিয়ে কাজ করি, তাই প্রডাক্টের দাম তাদের সাধ্যের মধ্যে রাখতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অন্য দিক থেকে খরচ কমাতে হচ্ছে আমাদের।
অন্যদিকে, এবার যেহেতু বৈশাখ আর ঈদ একই সময়ে পড়েছে, তাই ক্লাবহাউসে থিম বেইজড তো থাকছেই, সঙ্গে সামার ফ্রেন্ডলি ফ্যাব্রিকও ব্যবহার করছি, যেন কাস্টমার ফ্যাশনও পান, কমফোর্টও পান। আমাদের অলরেডি এথনিক ওয়্যার, ফরমাল, ক্যাজুয়াল ওয়্যার আছে; সঙ্গে নতুন একটি প্রডাক্ট লাইন চালু হয়েছে—অ্যাকটিভ ওয়্যার। যারা ওয়ার্কআউট করেন, তাদের জন্য এই নতুন প্রডাক্ট লাইন লঞ্চ করেছি। সঙ্গে ম্যাটারনিটি ওয়্যার, কিডস ওয়্যারও রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কিছু প্রডাক্ট লাইন লঞ্চ করার আশা রাখি, যেন সব রেঞ্জের মানুষের কাছে পৌঁছতে পারি।
নাজিয়া মুনমুন পিয়া [স্বত্বাধিকারী; সিরাত]: আমি একটি অনলাইন পেজ চালাই। এই পেজ স্টার্ট করেছি কোভিডের পরে। কোভিডের সময় দেখেছি, নতুন নতুন অনেক অনলাইন পেজ গজিয়ে উঠেছে। আমার মনে হয়, এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমি যে স্টাইলে কাজ করতে চাই, যে প্রফিট রাখছি, হয়তো আরেকজন একই কাপড়কে কপি করে একটি লোয়ার বাজেটে অল্প টাকায় বিক্রি করছেন। এভাবে হয়তো ছয় মাস ব্যবসা করে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু আমার বাজার তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমার ধারণা, কোভিডের সময় সবাই যখন ঘরে বসে, সে সময়ে এটা বেশি ঘটেছে। এই নতুন গজানো অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি প্রোপার লাইসেন্স, নির্দিষ্ট নিয়মশৃঙ্খলা থাকা উচিত। অন্যথায় সত্যিকারের উদ্যোক্তা, যারা অনলাইনে বিজনেস করতে চান, তাদের টিকে থাকা মুশকিল হবে। কেননা, যিনি ছয় মাসের জন্য কিংবা সিজনাল বিজনেস করতে এসেছেন, তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা ডিফিকাল্ট।
অন্যদিকে, আমি কিছু এক্সিবিশন করি। আগে প্রচুর সাড়া পেতাম। আগে সেখান থেকে যে ক্লায়েন্ট পাঁচটি প্রডাক্ট কিনতেন, অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় এখন কেনেন একটি। ফলে এই ঈদের মৌসুমেও অনেক কিছু কাটডাউন করতে হয়েছে। আমি নিজে প্রডাক্ট অনেক কমিয়ে এনেছি। হয়তো একই ডিজাইনের পঞ্চাশ বা এক শ কাপড় করতাম, তা বিশটিতে এসেছে। কারণ, সেল করতে পারব কি না জানি না। তা ছাড়া কোভিডের পর পাকিস্তান ও ভারতের কাপড় যখন আবারও দেশে ঢুকতে শুরু করল, আমরা চাপে পড়ে গেলাম। আমাদের অনেকের একধরনের মানসিকতা রয়েছে, পাকিস্তানি বা বিদেশি থার্ড বা ফোর্থ গ্রেডের পোশাক পরতে পছন্দ করি, অথচ ভালো মানের দেশি পোশাকের প্রতি অনীহা। ক্রেতার এই মানসিকতার জায়গায় পরিবর্তন দরকার। ধরুন, ঈদে হয়তো দুটি কাপড় কিনব, অন্তত একটি কাপড় যেন দেশি কিনি। সবাই এভাবে ভাবতে পারলে অনেক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
নুসরাত মারজিয়া [স্বত্বাধিকারী; কারুতন্ত্র]: আমার ব্র্যান্ডের থিম একটু আলাদা। কাজ করি এক্সক্লুসিভ জামদানি নিয়ে। একদম ভরা কোভিডে আমি বিজনেস স্টার্ট করেছি। মূলত অনলাইনেই। ভাবনায় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার ব্যাপারটি ছিল। মানুষ যেন কারুতন্ত্র বলতে প্রিমিয়ার ও এক্সক্লুসিভ কোয়ালিটির জামদানির দেশীয় প্রডাক্ট লাইন বোঝে। কোভিডে সবাই যেখানে বাজে সিচুয়েশনে ছিল ব্যবসা নিয়ে, আমি ছিলাম আপারহ্যান্ডে। কারণ, এটি লোকাল মেড। তখন বিদেশ থেকে প্রডাক্ট আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মানুষজনের বাইরের একসেস কমে গিয়েছিল। তারা লোকাল প্রডাক্টকে অ্যাপ্রিশিয়েট করতে শুরু করেন। লোকাল প্রডাক্টকে যখন আমরা অ্যাপ্রিশিয়েট করতে পারব তখন সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ কিছু যদি চিন্তা করি, জামদানির কথা আসে। আগে তারা হয়তো এত টাকা দিয়ে জামদানি কেনার চেয়ে বরং বিদেশি, ধরা যাক ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানি কোনো ডিজাইনারের ড্রেস কিনতে চাইতেন। কিন্তু কোভিডের কারণে তারা যখন বিদেশে যেতে পারছেন না, তখন জামদানির দিকে ফোকাসড হয়েছেন। আস্তে আস্তে ক্রেজটা বেড়েছে। এখন দেখবেন, বেশির ভাগ ব্রাইডই জামদানি পরেন। আমাদের এক্সক্লুসিভ জামদানি যে কত আরামদায়ক হতে পারে, আস্তে আস্তে ক্রেতা তা বুঝতে পারছেন। এটাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করছেন।
আমি আমার ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রচার-প্রসারে অত ফোকাস করিনি। ফোকাস করেছি কাস্টমার সার্ভিস ও কোয়ালিটির ওপর। এ দুটি নিশ্চিত করলে এক দিনে লাফ দিয়ে আমি হয়তো দশটি সিঁড়ি উঠে যেতে পারব না; কিন্তু ধীরে অথচ পাকাপোক্ত হয়ে আগাব। আমার মূল ভাবনা সেটাই। আমি ছয় মাসের মধ্যে হারিয়ে যেতে আসিনি। আমরা জানি, বাংলাদেশের মানুষ খুব শৌখিন। তাই সাধ্যের মধ্যে থাকার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছি। ইনস্টলমেন্ট ইন্ট্রোডিউস করেছি। চাইলে ৫০ হাজার টাকার শাড়ি আস্তে আস্তে ইনস্টলমেন্ট দিয়ে কিনুন; তবু ভালো জিনিস কিনুন, যেটি সারা জীবন ক্যারি করতে পারবেন। রিইউজ করতে পারবেন। রিইউজিবিলিটি, সাসটেইনেবিলিটিকে আমরা প্রমোট করি।
হেদায়েত উল্লাহ মাহমুদ [হেড অব ডিজাইন; টেড গ্রুপ, ক্লোদেন]: আমাদের ক্লোদেন ব্র্যান্ডটি লঞ্চ করেছি গত বছর, করোনার পরে। আমরা মার্কেটে নতুন। আমি অবশ্য এই সেক্টরে নতুন নই; ২২-২৩ বছর ধরে কাজ করছি। দেশে ১৫-২০ বছর আগেও এ রকম কোনো ব্র্যান্ড ছিল না। ২০০৪ সালে আমরা স্বপ্ন দেখি, দেশে যদি কোনো ইনোভেশন ও ডিজাইন টিম না থাকে, তাহলে পিছিয়ে পড়ব। এ নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। তাতে আজকের এই অবস্থায় দাঁড়িয়েছে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো। দেড় বছর হলো, আমি টেড গ্রুপের ইনোভেশন টিমে হাত দিয়েছি। একটু ডিফারেন্ট ওয়েতে কাজ করছি আমরা।
আশঙ্কার কথা হলো, নানা কারণেই আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি শিগগির বড় ধরনের চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে। তাই টিকে থাকার জন্য আরঅ্যান্ডডি ও ইনোভেশনের ওপর ফোকাস করতে হবে। লোকাল মার্কেটের ক্ষেত্রে হয়তো ঠিক আছি, কিন্তু গ্লোবালি অনেক পিছিয়ে। আমাদের দেশি ব্র্যান্ডগুলোর বিদেশে বলতে গেলে কোনো স্টোর নেই। আমরা যদি প্রডাক্ট এক্সপোর্ট করতে না পারি, ইকোনমি কখনোই স্ট্রং হবে না। মার্কেট বসে যাবে। আমাদের দেশে টাকা ঢোকানোর জন্য এক্সপোর্ট বাড়ানো দরকার। অন্যদিকে, ব্র্যান্ডের যদি আরঅ্যান্ডডি ও ইনোভেশন না থাকে, এক্সপোর্ট হবে না। ধরুন, আপনার ৬০-৭০ লাইনের ফ্যাক্টরি। ১০০ মিলিয়ন এক্সপোর্ট থাকলে আমরা ৩০ মিলিয়ন ইনোভেশনে নিয়ে আসি। যত বড় হয়, রেশিও তত বাড়তে থাকে। ডিজাইন টিম বাড়তে থাকে। এখানে ১০-২০ বছর ধরে এ জায়গায় কাজ করছি। এর পাশাপাশি যদি আমাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড থাকে, সেটিও বিল্ডআপ হয়ে যায়।
গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা প্যারিসে একটি শো করে এলাম। এই করোনার মধ্যেও ৩৫টি বায়ার পেয়েছি। ফাইনালি হয়তো ১০টি বায়ার টিকবে। ইনোভেশন ও আরঅ্যান্ডডি দেখেই তারা সম্পৃক্ত হয়েছে। ৮০-৯০ ভাগ কাজ আমরা এখান থেকেই করে দিচ্ছি। তারা জাস্ট এখান থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং করে শিপমেন্ট চলে যাচ্ছে। টাকা ঢুকছে দেশে। তাই আমি বলব, গার্মেন্ট ট্রেডে যারা আছেন, তাই আগামী দশ বছরে হয়তো দেখবেন, প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই দেশের বাইরে কোনো না কোনো স্টোর রয়েছে। আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। অন্যদিকে, যারা লোকাল ব্র্যান্ড করছি, শুধু লোকাল চিন্তা করলে এখানেই আটকে থাকব। কিন্তু এটাকে স্ট্যান্ডারাইজ তো করতে হবে। ধরুন, আমাদের দেশে লোকাল ব্র্যান্ড আছে ৫০০। এর ভেতরে যদি ২০০টি মিলে কম্পিটিশন করি—ইনোভেশনের দিক থেকে কে কার চেয়ে ভালো, তাহলে তা অন্যদেরও আকৃষ্ট করবে। যদি আমি ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে আজকে কাজ শুরু করি, পাঁচ বছর পরে কিন্তু ওই ব্র্যান্ডগুলো অটোমেটিক্যালি ওই লেভেলে চলে আসবে। আমাদের এভাবে ভাবা উচিত।
মাশিয়াত তৌহিদ [মার্কেটিং অ্যান্ড পিআর এক্সিকিউটিভ; ফেস্টিভাইব]: আমাদের ব্যবসা শুরু হয়েছে কোভিডের পরে। আমরা দেখে থাকি, ওয়েডিং ড্রেস হোক কিংবা পার্টি ড্রেস, অনেকেই বিদেশ থেকে কিনে আনেন। লোকাল ড্রেস অ্যাভয়েড করেন। ফেস্টিভাইব চেষ্টা করছে, বাংলাদেশের মানুষ যেন এই ইনভেস্টটা দেশের ইকোনমিতেই করুক। আমাদের ব্রাইডাল একটি সেগমেন্ট রয়েছে; মডার্ন বলতে ওত কতুর, গাউন—এগুলোতেও যাচ্ছি। কেননা, অনেকেই, বিশেষত সেলিব্রিটিরা পার্টি ড্রেস সাধারণত বিদেশ থেকেই আনান। তাই আমরা এবং আরও কয়েকটি ব্র্যান্ড এমনভাবে দাঁড়াচ্ছি, যেন তারা আমাদের কাছ থেকেই কেনেন।
বাংলাদেশে এখন বড় বড় তারকা ইভেন্টে ফেস্টিভাইবের কাপড় পরছেন। এটা আমাদের অ্যাচিভমেন্ট। আমরা নতুন একটি সাব-ব্র্যান্ড খুলেছি, হেলাসিয়া। গাউন নিয়ে। নিউইয়র্কে এর একটি সেটআপ করতে যাচ্ছি। আমাদের ওয়েবসাইটে সব প্রডাক্টের দাম ডলারে রাখছি, যেন বিদেশ থেকে কেনা যায় এবং দেশে ডলার ঢোকে। শিগগির ওয়েবসাইটটি লঞ্চ করতে পারব, আশা করছি। আমরা খুবই লিমিটেড কাপড় বানাচ্ছি। ব্রাইডাল ছাড়াও আমাদের রেডি টু ওয়্যার রয়েছে।
হাসিবুর রহমান [অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং; র ন্যাশন]: মানুষ নিজের আর্থিক অবস্থা নিয়ে বেশ দ্বিধায় রয়েছে এখনো। খুবই টাফ একটা সিচুয়েশন পার করছি। এই প্রাইস হাইকের মধ্যেও র ন্যাশন চেষ্টা করছে প্রডাক্টের দাম না বাড়াতে। সব ক্ষেত্রে যে পারছি, তা নয়। তবে আগের প্রাইসে রাখার ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে, যেন মানুষের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
মো. শাহরুম আলী সিকদার: ক্রেতার মানসিকতার ক্ষেত্রে বলব, শুধু অকেশনালিই নয়, সারা বছরই আমাদের এই চাহিদা থাকা উচিত, আমরা দেশি পোশাকই কিনব। আমাদের ব্র্যান্ডগুলোরও কিছু প্রবণতায় পরিবর্তন আনা উচিত। ধরুন, যদি আমার কারিগরকে একটি প্রোপার প্রাইসিং দিই, তাহলে তিনি ইন্টারেস্টেড হবেন। আমরা বেশির ভাগই প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কথা চিন্তা করে তাকে কতটা কমে দিতে পারব, কতটা বেশি কাস্টমারদের কাছ থেকে নিতে পারব, এমনটা ভাবি, যা ঠিক নয়।
নাজিয়া মুনমুন পিয়া: আমাদের কিন্তু দক্ষ কারিগরের অভাবও রয়েছে। তাই একটি স্কিল বেইজ তৈরি করতে হবে, প্রোপার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে যেন আরও কারিগর উঠে আসেন।
রুদ্র আরিফ: নতুন কী করছেন?
মো. শাহরুম আলী সিকদার: আমরা সামনের কথা চিন্তা করছি, অথচ অলরেডি সবকিছুরই দাম বেড়ে গেছে। সার্ভাইভের প্রশ্নে কম-বেশি সব শপের মধ্যেই একটি প্রবণতা রয়েছে। সেল হচ্ছে না? ঠিক আছে থার্টি, ফোর্টি, ফিফটি পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট দেওয়া হোক! একটা সেল অফার দিয়ে বসতাম। আমার ব্র্যান্ড তা করছে না। আমাদের প্রডাক্টে কোনো ডিসকাউন্ট নেই। কারণ, আমাকে সার্ভাইভ করতে হবে। প্রতিটি কোম্পানিকেই নিজের সার্ভাইভনেস নিজেকে করতে হবে। সে ক্ষেত্রে এডিশনাল সব ডিসকাউন্ট অফ করে দিচ্ছে ফিট এলিগ্যান্স।
মাশিয়াত তৌহিদ: বৈশাখকে মাথায় রেখে একেবারেই লিমিটেড কালেকশন করছি। আমরাও এবার কোনো পাঞ্জাবি রাখছি না। ঈদ কালেকশনের কাজ চলছে। মেয়েদের পোশাকের ওপর বিশেষ ফোকাস রাখছি। একেবারেই নতুন, এক্সক্লুসিভ একটি কালেকশন আনতে যাচ্ছি, সেটি এখনো ডিসক্লোজ করিনি। সময়মতো ক্রেতাদের জানাব।
শাহীন চৌধুরী: আমি বেসিক্যালি পাঞ্জাবি নিয়েই কাজ করি। এবারের ঈদ ও গ্রীষ্মের কালেকশনেও ব্যতিক্রম হবে না। শুধু ঈদ নয়, সারা বছর পাঞ্জাবি নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট ভালো লাগে। এবার পাঞ্জাবির মধ্যে জামদানির ফিউশন করেছি। এমব্রয়ডারি, কারচুপি, ডিজিটাল প্রিন্ট… নানা কাজ থাকছে। দেশীয় কাপড় নিয়ে আমি ঈদে কাজ করি না। এই মৌসুমে একটু জমকালো পোশাকে আগ্রহ থাকে ক্রেতার। সেদিকে খেয়াল রাখছি।
নুসরাত মারজিয়া: কারুতন্ত্র বৈশাখকে ওভাবে ফোকাস করছে না। তবে অনেকে পয়লা বৈশাখে জামদানি পরেন, তাই আমরা কালারটা এমন রাখি; অফ হোয়াইট, হোয়াইট বেইজড শাড়ি যেন থাকে, শুভ্রতার ব্যাপারটা যেন থাকে। তার ওপর যেহেতু সামার, বেশি ফোকাস দিচ্ছি প্যাস্টেল কালারে। কারণ, এটা ট্রেন্ডিং এখন। সামার, ঈদ, পয়লা বৈশাখ—যেন সব প্রোগ্রামই ধরা যায়।
ইয়াসমিন আক্তার: পয়লা বৈশাখে ক্লাবহাউসের কিড, ওম্যান, মেটারনিটি সেকশনে কিছু বিশেষ কালেকশন থাকবে। ঈদে সব রেঞ্জের মানুষের কাছে যেন পৌঁছতে পারি, তাই সব ক্যাটাগরিতেই নতুন কালেকশন থাকছে। এথনিক ওয়্যারে ওয়ান পিস, টু পিস, থ্রি পিস, ফিউশন টপস আছে; প্লেন থেকে এক্সক্লুসিভ—সব ধরনের পাঞ্জাবি থাকছে। নিউবর্ন বাচ্চাদের জন্যও কালেকশন রয়েছে। ম্যাটারনিটি ড্রেসে ফেস্টিভ তুলে ধরছি।
শরিফুল ইসলাম: ছেলেদের পোশাকে আমাদের মূল প্রাধান্য পোলো শার্টে। অন্যান্য শার্টও আছে। গ্রামীণ ইউনিক্লো জিনসের ওপর সব সময় প্রাধান্য দেয়। এ ক্ষেত্রে হাইলাইট করছি জাপানিজ ডেনিমের ওপর। ক্যাজুয়ালে ছেলেদের ক্ষেত্রে টি-শার্ট, পোলো শার্ট, শার্ট রয়েছে। শার্টের মধ্যে প্রিন্টেড শার্ট, বিজনেস শার্ট। মেয়েদের ক্ষেত্রে মূলত টপসই বেশি প্রায়োরিটি পাচ্ছে। কামিজও আছে। কামিজের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রিন্টকে হাইলাইট করা হয়েছে। এ ছাড়া ছেলেদের ক্ষেত্রে ক্রেতারা ইনারওয়্যার বেশি পছন্দ করেন। সে জায়গাটিও অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
কাস্টমার কেন ড্রেসটা পরবেন—আমরা তার একটা কারণ হাজির করার উত্তর খুঁজেছি। আমরা চাই তিনি কমফোর্ট অনুভব করুন। তাই ‘ওয়্যার হেপিনেস’ ভ্যালুটাকে কমিউনিকেট করতে চাচ্ছি। ফেস্টিভ্যালে মানুষ যেন হেপিনেসকে ‘পরতে’ পারে। এ কারণে ক্যাজুয়ালের জায়গা থেকে একে ফোকাস করেছি। কথা আসতে পারে, ঈদে তো মানুষ পাঞ্জাবি পরবে, তাহলে আমরা নতুন কালেকশন রাখছি না কেন? হ্যাঁ, পরবে, কিন্তু পাঞ্জাবি তো সারা দিন পরে থাকবে না! ড্রেসটা আমি প্রতিদিনের জন্য দিচ্ছি, শুধু এক দিনের জন্য। কালারের ক্ষেত্রে রেগুলার কালারে চলে গেছি; তবে ফেস্টিভ্যালের বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রেখে। বৈশাখ ও ঈদকে আলাদা করিনি; তবে ঈদই প্রাধান্য পেয়েছে।
নাজিয়া মুনমুন পিয়া: ফোকাস করেছি সামারে। ব্রিদেবল ও কালারফুল কাপড়ে। যেন বৈশাখ ও ঈদ—দুটোকেই কভার করতে পারি। আনারকলির ওপর মূল ফোকাস রাখছি। ফ্যামিলি কম্বো নিয়েও কাজ করছি।
হাসিবুর রহমান: ঈদের জন্য বিশেষ কিছু থাকবেই। র ন্যাশন আসলে বৈশাখে আগে থেকেই খুব বেশি ফোকাস করে না। তাই ঈদ ও বৈশাখ কাছাকাছি হয়ে যাওয়ার তেমন প্রভাব আমাদের ব্র্যান্ডের ওপর পড়বে না। বৈশাখের চেয়েও চ্যালেঞ্জিং হলো, এবার সামার ও ঈদ একসঙ্গে পড়েছে। ফলে মার্কেটিংয়ের পরিকল্পনা, ফটোশুট—সবকিছু নিয়েই বেশ হিমশিম সময় পার করেছি।
ছবি: ক্যানভাস