ফিচার I বান ফান
আটপৌরে নয়, তবে স্টাইলিশ। সেরে নেয়া যায় সহজেই। গরমের দিনে দারুণ স্বস্তিদায়ক
কেয়ারফুলি কেয়ারলেস হয়ে ওঠার সময় এখন। হেয়ারস্টাইলিংয়ে। রানওয়ে থেকে রেড কার্পেট- সবেতেই চুলের স্বাভাবিকতা বজায় রেখে তৈরি হচ্ছে স্টাইল স্টেটমেন্ট। সঙ্গে মূল আকর্ষণ হিসেবে মুখ্য হয়ে উঠেছে পারিপাট্যের অভাব। তবে গরম বলেই হয়তো পনিটেইল আর ব্রেইডের বদলে ভক্তি বেড়েছে বান অর্থাৎ খোঁপায়। তাতেও চুলের স্বাভাবিক টেক্সচার আর আলুথালু বা অগোছালো ভাবটাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। মাথায় আস্ত একটা খোঁপার পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আধা খোঁপার চল। কেউ কেউ তো সাহস করে দুটো খোঁপাও বেঁধে নিচ্ছেন মাথায়। সহজ এবং সুন্দর সব সামারপ্রুফ স্টাইলে।
বানানা বান
লেটেস্ট লেজি গার্ল হেয়ারস্টাইল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ট্রেন্ডে। মূলত পার্সিয়ানদের পারদর্শিতায় তৈরি এ খোঁপা মেসি শিনন স্টাইলের সমকালীন সংস্করণ। যা লুকে আরও বেশি অগোছালো, আরও বেশি আলসে ভাব তৈরি করে দেয় নিমেষেই। দেখতে দারুণ স্টাইলিশ আর শ্রমসাধ্য মনে হলেও বানানা বান তৈরিতে পনিটেইলের চেয়েও কম সময় লাগে। সে জন্যই ওয়েব অ্যাপ পিনটারেস্টের মতে এ বছর পনিটেইলকেও পেছনে ফেলে দেবে বানানা বানের বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা। সটান সোজা, ঢেউ খেলানো কিংবা কোঁকড়ানো- সব ধরনের চুলেই করে নেয়া যায় এ খোঁপা। চুলের দৈর্ঘ্য কিংবা ঘনত্ব- কোনোটার হেরফেরই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে না এতে। মূলত পনিটেইল বেঁধে সেটি টুইস্ট এবং টার্নের পর রোল করে তৈরি হয় বানানা বান। মাথার সোজাসুজি পেছন কিংবা সামান্য পাশে করা যায় এই খোঁপা। তারপর আটকে দেয়া হয় ববি কিংবা ইউ পিন দিয়ে। আড়ম্বরপূর্ণ কিন্তু অনায়াস লুকের জন্য।
স্পেস বান
নাম দেখে মহাশূন্যের বিষয় মনে হলেও এর জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। সৌন্দর্যবিশ্বে নব্বইয়ের ট্রেন্ডের ঘোরাফেরার ফলে এর ফিরে আসা অনিবার্যই ছিল। হেয়ারস্টাইলিস্টদের মতে বছরজুড়ে থাকবে স্পেস বানের দাপট। তবে নতুন রূপে। সেই সময়ের স্পাইস গার্ল থেকে শুরু করে এ সময়ের কেন্ডেল জেনার, কেটি পেরি আর হাদিদ সিস্টারদের সুবাদে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা স্পেস বান এখন সৌন্দর্যসচেতন নারীদের পছন্দের শীর্ষে। স্টাইলটা অভিনব, সেই সঙ্গে গরমে আরামও দেবে বেশ। মাথার মাঝ বরাবর সিঁথি করে দু’পাশের চূড়ায় দুটি খোঁপা বেঁধে করা হয় ক্ল্যাসিক স্পেস বানের স্টাইলিং। যাদের চুল বড় ও ঘন, তাদের মাথায় বড় বুফোঁ স্টাইল ভলিউমনাইজিং স্পেস বানই বেশি মানানসই। ছোট চুলে আস্ত খোঁপা না হলে নট স্টাইলে একই ইফেক্ট দেয়া যেতে পারে। এ ছাড়া গরম নিয়ে খুব হাপিত্যেশ না থাকলে ছোট চুলে হাফ আপ হাফ ডাউন স্পেস বান স্টাইলটাও কিন্তু দারুণ দেখাবে। এ ক্ষেত্রে পেছনের দিকের চুল ছাড়া রেখে সামনের সামান্য অংশ নিয়ে চূড়াতে বান বাঁধা হয়। যাদের বেণি পছন্দ তারা ডাচ স্টাইল ব্রেইডের পর করে নিতে পারেন স্পেস বান। জাঁকালো লুক দেবে নিমেষেই। খোঁপার আটপৌরে বাঁধনের বদলে টুইস্টেড কিংবা ব্রেইডেড টপ নট বেঁধেও তৈরি করা যায় নিরীক্ষাধর্মী স্পেস বান স্টাইল। তবে যারা চূড়ায় খোঁপা বাঁধতে চান না, অপশন রয়েছে তাদের জন্যও। স্পেস বানের নতুন এ সংস্করণের নামটাও আলাদা। ম্যাকারন নামের এ সামার বান স্টাইল লুককে করে তোলে কেয়ার ফ্রি, কিন্তু কেতাদুরস্ত।
স্কার্ফ বান
সাম্প্রতিক স্প্রিং সামার রানওয়ের সালতামামি অনুযায়ী সময়ের হটেস্ট ট্রেন্ড হেয়ার অ্যাকসেসরিজ। বিভিন্ন ধরনের ব্যারেটস, এমবেলিশড হেয়ার পিন আর টাই, স্ক্রাঞ্চি থেকে হেডব্যান্ডের ব্যবহার বাড়বে এ বছর। যা সাদামাটা লুককেও আকর্ষণীয় করে তুলবে গ্রীষ্মজুড়ে- এমনটাই আভাস মিলেছে। তবে সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে নজর কেড়েছে স্কার্ফের ব্যবহার। তা-ও আবার বানের সঙ্গে। হেয়ারস্টাইলটি সামারের জন্য স্বস্তিদায়ক। করে নেয়া যায় নিমেষেই। পলকেই দেয় পারফেক্ট র্যাম্প রেডি লুক। স্কার্ফ বানের জন্য প্রথমেই মাথার সব চুল টেনে চূড়াতে পনিটেইল করে নেয়া হয়। তারপর পনিটেইলের গোড়ায় স্কার্ফ বেঁধে নেয়া হয় শক্ত করে। পনিটেইলকে দুভাবে ভাগ করা হয়। স্কার্ফের দুটি অংশ নিয়ে পেঁচিয়ে নেয়া হয় চুলের সঙ্গে। যা টুইস্ট করে বেঁধে নেয়া হয় বানে। সবশেষে ববি পিন দিয়ে আটকে দেয়া হয়, যাতে খোঁপা খুলে না যায়। টুইস্ট করতে না চাইলে চুল আর স্কার্ফ দিয়ে প্রথমে বেণির মতো বেঁধে তা-ও পেঁচিয়ে নিয়ে করা যায় স্কার্ফ বান। বাহুল্যবর্জিত বোল্ড লুকের জন্য।
জাহেরা শিরীন
মডেল: বর্ণ, রিফা ও শ্রাবণী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন