skip to Main Content

ই-শপ I কথার দোকান

একজন শিল্পীর কাজ কতভাবে যে ফুটিয়ে তোলা যায়, তার একটি অসাধারণ উদাহরণ ‘কথার দোকান’। আজমাইন আজাদ কথা, ইউডার ফাইন আর্টস ডিপার্টমেন্ট থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষে ভালোবাসার ছবি আঁকা নিয়ে নিজের মতো করে ব্যতিক্রমী কিছু করতে চেয়েছিলেন শুরু থেকেই। আজকের ‘কথার দোকান’ সেই চাওয়া আর চেষ্টার ফসল।
গত বছর জিনিসপত্র তৈরির কাজে নামলেও অনলাইন পেজ চলছে এই বছরের জানুয়ারি থেকে। কিন্তু ব্যবসা একমাত্র উদ্দেশ্য নয় কথার দোকানের। একে বলা চলে কথার শখ, কিংবা কথার আনন্দ। হয়তো এ কারণেই কয়েক মাসে পেজটির ফলোয়ারের সংখ্যা দুই হাজারের কাছাকাছি। একজন পেইন্টার হওয়ায় বিভিন্ন রঙ নিয়ে খেলা করতে করতে কথা নিজেই তৈরি করেন এই ই-শপের প্রতিটি প্রডাক্ট।
কথার দোকানের মূল প্রডাক্ট হলো গয়না। গয়না বললে কিঞ্চিৎ ভুল হতে পারে। কারণ, এগুলোর একেকটা আর্টপিসের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। গয়নার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন আকৃতির টিপ নিয়ে কাজ করছেন। কথা বলেন, ‘বাঙালির সংস্কৃতির অনেক বড় একটি উপাদান টিপ। যা বাঙালিরা কিছু সামাজিক বা ধর্মীয় কারণে ভুলতে বসেছিল। সেই টিপই আমার ক্যানভাস।’ এই টিপগুলোর কোনোটায় হয়তো পেইন্টিং, কোনোটা তৈরি কাটাকুটি করে আবার কোনোটায় কাপড় জুড়ে দেয়া।
গয়নার মধ্যে রয়েছে গলার মালা থেকে শুরু করে কানের ছোট-বড় দুল, আংটি, চুড়ি- আরও কত কী! সবকিছুতেই লেগেছে রঙের ছোঁয়া। বেশ কিছু গয়নায় রয়েছে তারই মিনিয়েচার পেইন্টিং। গয়না তৈরির মূল উপাদান হিসেবে তিনি ব্যবহার করে থাকেন তামা, লোহা, কড়ি, শুকনো ফুলপাতা, কাঠের টুকরা, পমপম কিংবা গামছা। এ ছাড়া কুড়িয়ে পাওয়া পাথর, প্লাস্টিক, আইসক্রিমের কাঠি বা অন্য সব ফেলে দেয়া জিনিস নিয়েও তিনি তৈরি করেন রিসাইকলড প্রডাক্ট। ম্যাটেরিয়াল নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন কথা। তার ইচ্ছা, কথার দোকান পেজে ঢুকলেই যে কারও মনে হয়, যেন তিনি বাস্তবিকই একটা পেইন্টিং দেখছেন। পেজটির ফেসবুক লিঙ্ক: https://www.facebook.com/Kotha.Dokan/

পেজটি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে কথা বলেন, খুব শিগগির গয়নার পাশাপাশি পাওয়া যাবে নিজের ডিজাইন করা ক্লদিং। তার তৈরি প্রডাক্টগুলোকে তিনি বলে থাকেন হ্যান্ডমেইড আর্ট। পরিধেয় হওয়ায় এদের ওয়্যারেবল আর্টও বলা যায়। কথার দোকান বেশ সাজানো একটি পেজ। তার লক্ষ্য, ধীরে ধীরে এর পরিসর বড় করে তোলা। এবং হ্যান্ডমেইড বিভিন্ন জিনিস নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে যাওয়া। তবে কথা সবচেয়ে বেশি চাইছেন তার প্রডাক্টগুলোর মাধ্যমে বাঙালির রুচির সংস্কার ঘটাতে।
তিনি সবচেয়ে বড় প্রেরণা হিসেবে দেখেন তার মাকে। ছোটবেলা থেকেই যিনি এমন বিভিন্ন জিনিস ও টিপ তৈরি করে পরতেন এবং পরিবারের সবাইকেও পরাতেন। এরপর তিনি অনুপ্রেরণা পান ডিজাইনার বিবি রাসেলের কাজ থেকে। পেজটির মজাদার একটি বিষয় হচ্ছে ‘কথার দোকানের চিঠি’। এই চিঠির কথায় পেয়ে যাবেন কথার দোকানের খুঁটিনাটি বেশ কিছু বিষয়।
সাধারণত সব ক্ষেত্রেই হ্যান্ডমেইড প্রডাক্টের দাম অনেক। তবে কথার দোকানের প্রডাক্টগুলোর দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে। তবে তারতম্য লক্ষ করা যায় ম্যাটেরিয়াল কিংবা সাইজভেদে। মালা পাচ্ছেন ২০০ থেকে ১০০০ টাকায়, আংটি ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। কানের দুলের দামও একই মাত্রায়। আর টিপের পাতা পাওয়া যায় ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়।

 শিরীন অন্যা
মডেল: সাজিয়া ঋতু
ছবি: ওমর ফারুক ও আসিফ চৌধুরী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top