ছুটিরঘণ্টা I তরল সোনা ও গেছো ছাগলের রূপকথা
প্রাগৈতিহাসিক শহর। চলার পথে, ইতিহাসের বাঁকে বর্তমানের চমক। মরক্কোর এসাওয়েরা ভ্রমণের গল্প শোনাচ্ছেন এলিজা বিনতে এলাহী
‘লা গ্র্যান্ড ব্যালকন দু ক্যাফে গ্ল্যাশিয়ার’, ‘ফ্রান্স দু ক্যাফে’—মারাকেশ শহরের সিটি সেন্টারের দারুণ জনপ্রিয় দুটি রেস্তোরাঁর নাম দেখে আমি অবাক। ফরাসি শাসন শেষ হয়েছে সেই ১৯৫৬ সালে, অথচ এখনো চলছে ফরাসি নাম। এই ভূখণ্ডের উত্তরে দেখেছি স্প্যানিশ সংস্কৃতির প্রভাব আর দক্ষিণে ফরাসির।
মারাকেশ বিশ্ব পর্যটকদের কাছে মরক্কোর ভীষণ জনপ্রিয় একটি শহর। এখানে পৌঁছানো পর্যন্ত দেশটির সাতটি শহরে ঘুরে, মরক্কোর মিশ্র সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা জন্মেছিল আগেই। তবে মারাকেশে এসে সেই ধারণা অনেকটা প্রকট হলো। মরক্কো সম্পর্কে একটি কথা না বললেই নয়। এখানে এলে মনেই হবে না আপনি আফ্রিকায় রয়েছেন। শহরগুলো ঘুরে আমার কখনো মনে হয়েছে স্পেনের কোনো শহরে আছি কিংবা গ্রিসে; আবার কখনো কখনো ফ্রান্সের শহরগুলোর কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে মরক্কো। তবে এ দেশের বৈচিত্র্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে, এ কথা হলফ করে বলা যায়।
এই ভ্রমণরচনায় অবশ্য ঠিক মারাকেশের গল্প বলছি না; বলছি শহরটি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের, ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বন্দরনগরী এসাওয়েরার ডে ট্যুরের অভিজ্ঞতা।
ডে ট্যুরের প্রস্তুতি
মারাকেশ থেকেই অনলাইনে একটি ট্যুর প্যাকেজ ঠিক করে নিয়েছিলাম। গ্রুপ ট্যুর। প্রাইভেট ট্যুরেরও ব্যবস্থা আছে। আপনি চাইলে একা একটি গাড়ি ভাড়া নিতে পারেন। তাতে খরচা বেশি। তাই দশজনের একটি গ্রুপের প্যাকেজ কিনেছি। কথামতো সকাল ৭টার একটু আগে হাজির হলাম জালি এল ফানা স্কয়ারে, ফ্রান্স দু ক্যাফে রেস্তোরাঁর সামনে। একটিই সিটি সেন্টার। ওমা! হাজার হাজার পর্যটক আর শখানেক গাড়ি হবে। বুঝলাম, শহরের মিটিং পয়েন্ট এটিই। এখান থেকেই পর্যটকেরা বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা করেন।
মোবাইল থেকে নিজের ট্যুর কোম্পানির নাম দেখে নিয়ে, সেই কোম্পানির গাড়ি তালাশ শুরু করলাম। চোখে পড়ল একই কোম্পানির অন্তত দশটি গাড়ি। আমি যখন ইতস্তত, একজন এসে আমার আর কোম্পানির নাম জানতে চাইলেন। নিজের পরিচয় দিলেন স্থানীয় ম্যানেজার হিসেবে। তারপর আমাকে একটি নির্দিষ্ট স্থান দেখিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করতে বললেন। দশ মিনিট পরই গাড়ি এলো, একদম সাতটায়। ভিন্ন ভিন্ন দেশের দশজন পর্যটকের আজকের গন্তব্য ঐতিহাসিক এসাওয়েরা শহর। ড্রাইভারের সঙ্গে একজন গাইড রয়েছেন। সবাই সবার সঙ্গে পরিচিত হলাম। ট্যুরের আদ্যোপান্ত বুঝিয়ে দেওয়া হলো আমাদের। যেতে যেতে পথে চার স্থানে বিরতি রয়েছে। একটি কফি বিরতি, অন্য দুটি প্যানোরামিক ভিউ ও আরগান তেলের ফ্যাক্টরি; অন্যটি বিশেষ স্থান। সেটির নাম উল্লেখ করলেন না গাইড। বুঝলাম, পর্যটকদের জন্য সারপ্রাইজ রাখছেন। মূল আকর্ষণ তো বন্দরনগরী। সেখানকার গেটে পৌঁছে দেওয়ার পর আমরা ৪ ঘণ্টা যে যার মতো ঘুরতে পারব। তারপর আবার শহরের প্রবেশমুখে গাড়ির কাছে দেখা হবে সবার।
যাত্রাপথে
গাড়ি ছুটছে আপন গতিতে। মরক্কোর সড়ক বেশ উন্নত। খানাখন্দ নেই। ট্রাফিক রুলও বেশ কড়া। সিট বেল্ট বাঁধার বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। গাড়িতে মিউজিক বাজছে। এই ভূখণ্ডের আদিবাসী বারবার সম্প্রদায়। বিশ্ব পর্যটক ইবনে বতুতাও ছিলেন এই সম্প্রদায়ের।
সপ্তাহব্যাপী বেশ ধকল গেছে বলে গাড়িতে চোখ বুজে এসেছিল অল্পক্ষণের জন্য। চোখ খুলল গাইডের ডাকে। আমরা আরগান তেল তৈরির কারখানায় এসে পড়েছি। সেখানে গাড়ির কাছে চারজন নারী এলেন। পর্যটকেরা যে ভাষায় স্বচ্ছন্দবোধ করেন—ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ ও আরবি জানা চার নারীর সঙ্গে কারখানা ঘুরে দেখবেন। আমি ও দুজন পর্যটক গেলাম ইংরেজি জানা গাইডের সঙ্গে। এই কারখানা বিভিন্ন বয়সের নারীদের হাতে পরিচালিত। আরগান তেলের কারখানায় সাধারণত নারীরাই বেশি কাজ করেন। তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য এ রকম সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারি ও বেসরকারিভাবে। এই কারখানার নাম ফরাসি ভাষায় লেখা। গাইড মেয়েটি বললেন, ‘দ্য নেম অব আওয়ার ফ্যাক্টরি ইজ মারজানা’।
প্রথমে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হলো আমাদের, যেখানে নারীরা ফল থেকে তেল তোলার প্রক্রিয়ার পদক্ষেপগুলো প্রদর্শন করছিলেন। কর্মরত সব নারীই মধ্যবয়সী। একে নারীদের জনশক্তিতে রূপান্তর করার দারুণ একটি পদ্ধতি মনে হলো আমার। মনে পড়ে, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় দেখেছিলাম, যুদ্ধে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের জনশক্তিতে পরিণত করার দারুণ কিছু উদ্যোগ রয়েছে কারুশিল্প, দারুশিল্প, পোশাকশিল্প, ভাস্কর্য ও স্যুভেনির কারখানাগুলোতে।
অনেকেই হয়তো জানেন, তবু এই ফাঁকে আরগান ফলের সঙ্গে একটু পরিচয় করিয়ে দিই। আটলান্টিক মহাসাগরের তীর ঘেঁষে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। আরগান এখানকার চিরহরিৎ বৃক্ষ বা গুল্ম। এ গাছের ফলের শক্ত খোলস ভাঙলেই পাওয়া যায় বাদামজাতীয় দানা। তারই শাঁস থেকে তেল বের করে যুগ যুগ ধরে রান্না ও রূপচর্চায় ব্যবহার করছেন মরক্কোবাসী। শুধু মরক্কোবাসী নয়, এই তেল ব্যবহার করে পুরো বিশ্ব। কেউ একে বলে ম্যাজিক অয়েল; কেউ বলে তরল সোনা।
তেল তৈরির পুরো প্রক্রিয়ার প্রদর্শনীর পর আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো ভিজিটর সেন্টারে, যেখানে রয়েছে আরগান তেলে তৈরি প্রসাধনী ও রন্ধনপণ্যের সমাহার। সেখানে আমরা রন্ধনসম্পর্কীয় পণ্যের স্বাদও পেলাম। বলে রাখি, আরগান ফল থেকে মাখন, মধু ও খাবার তেল তৈরি হয়। রুটির সহযোগে এর স্বাদ গ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এ ছাড়া আরগান থেকে তৈরি বিশাল বিউটি প্রডাক্টের সমারোহ তো রয়েছেই।
আমাদের দেশে পাটকে যেমন একসময় মনে করা হতো গোল্ডেন ফাইবার অব বাংলাদেশ, তেমনি মরক্কোর গোল্ডেন ফ্রুট হলো আরগান। আমাদের দেশের সেই অর্থকরী ফসলকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারিনি। কিন্তু মরক্কোর অর্থকরী এই ফলে তৈরি পণ্য সারা দুনিয়ায় সমাদৃত। গোটা মরক্কোর অর্থনীতিতে আরগান, অলিভ আর পর্যটন পালন করছে বিরাট ভূমিকা। এখানে এসে জানা হলো, চেনা হলো তরল সোনা।
এসাওয়েরার মেদিনা
আবারও ছুটে চলা। এবার গাড়ি থামল এমন এক জায়গায়, যেখান থেকে পুরো শহর দেখা যায়। আমরা নেমে যে যার মতো ছবি তুললাম। এর পরের গন্তব্য হেরিটেজ শহর এসাওয়েরা। মহাসাগরের তট ধরে আমাদের বাহন এসে থামল মেদিনার গেটে। উঁচু দেয়াল ঘেরা শহর। মেদিনা অর্থ পুরোনো শহর। মরক্কোর প্রতিটি শহরে রয়েছে মেদিনা। মরক্কোর মেদিনাগুলোর মাঝে ফেজ আর মারাকেশ মেদিনা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এখানেই আমাদের ফ্রি টাইম, ৪ ঘণ্টা মেদিনা ঘুরে দেখবার। একসময় এটিই ছিল মূল শহর। মেদিনাগুলো উঁচু দেয়ালে ঘেরা থাকত, বন্য প্রাণী ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
আমরা দশজন এবার ছড়িয়ে পড়লাম মেদিনার গলি ও তস্যগলিতে। আমার সঙ্গে জুটি বাঁধলেন আমেরিকান পর্যটক মানডিনা ইয়াং। তিনিও আমার মতো এখানে সলো ট্রাভেলার। শহরের প্রবেশমুখে আমরা বেশ কয়েকটি কামান দেখতে পেলাম। ততক্ষণে প্রায় দুপুর হয়ে এসেছে। গুগল করে খাবারের দোকানের খোঁজ করছেন মানডিনা। আমি রেস্তোরাঁর খাবারের পক্ষপাতী নই; তার ওপর পর্যাপ্ত বাজেট নেই। তাই মানডিনাকে জানালাম, পথের ধারের খাবারই খাব। পথের ধারেই খেতে খেতে মানডিনার সঙ্গে গল্প হলো। বিশেষ করে নারীর একা ভ্রমণ ঘিরে।
মেদিনার অলিগলি
আজকের মেদিনা ভীষণ ব্যস্ত, মাছ ধরা নিয়ে। এই শহরের অনেক বাসিন্দা সমুদ্র থেকেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। এসাওয়েরার এই প্রাচীর ঘেরা মেদিনা অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে নির্মিত। ২০০১ সালে এটি ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তার মূল কারণ, মেদিনাটি বেশ ভালোভাবে সংরক্ষিত। এটি উত্তর আফ্রিকায় ইউরোপীয় সামরিক স্থাপত্যের এক অসামান্য উদাহরণ।
মেদিনার সরু রাস্তায় ঘুরছি। উপভোগ করছি অলংকৃত দরজা ও জানালার সৌন্দর্য। রাস্তার বিক্রেতারা ছড়িয়ে রয়েছেন চারদিকে। তাজা কাটা ক্রিমযুক্ত আখরোট থেকে শুরু করে হাতে বোনা চমৎকার রঙিন কার্পেটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। আমার কাছে এসাওয়েরাতে উপভোগ করার অন্যতম সেরা বিষয় মনে হলো বন্দরের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো। অবশ্য, মাছ কেনাবেচার জায়গায় একটু ভিন্ন গন্ধ থাকাই স্বাভাবিক। ছোট নৌকাগুলো উজ্জ্বল নীল রঙে আঁকা, ব্যক্তিমালিকানাধীন; বড় ট্রলারগুলোর ফাঁকে জায়গা করে নেওয়ার জন্য লড়ছে। মাথার ওপর বৃত্তাকারে চক্কর দিচ্ছে অসংখ্য গাঙচিল। ওদের বিকট চিৎকারের শব্দে কারও কথা ঠিকমতো শোনা দায়। তাই আমি আর মানডিনা চুপচাপ বেশ কিছুক্ষণ ওদের কাণ্ড দেখলাম। তারপর হাঁটতে হাঁটতে গেলাম দুর্গের দিকে। যদিও মূল প্রাচীরগুলো এখন আর অক্ষত নেই, তবু এগুলোর বেশির ভাগের চারপাশ দিয়েই হাঁটা সম্ভব। সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে এখানকার ‘সাকা দে লা ভিলে’ মঞ্চ।
ইতিহাসে উঁকি
প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা যায়, এসাওয়েরা একটি প্রাগৈতিহাসিক শহর। কয়েক শতাব্দী ধরে শহরটিকে মরক্কোর উপকূলের অন্যতম সেরা বন্দর হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর প্রথম দিকে কার্থাজিনিয়ান নেভিগেটর হ্যানো এখানে একটি বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। রোমান সাম্রাজ্যকালে রঞ্জক উৎপাদনের জন্য পরিচিত হয়ে ওঠে এসাওয়েরা। পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, ডাচ, ইংরেজ ও ফরাসিরা বিভিন্ন মাত্রায় সাফল্যের সঙ্গে এসাওয়েরার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালায়। বেশির ভাগ সময়কালেই বন্দরটি চিনি ও গুড় রপ্তানির কেন্দ্র ছিল; আর ছিল জলদস্যুদের হাতে নিয়ন্ত্রিত। ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে সুলতান সিদি মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ, যিনি তৃতীয় মোহাম্মদ নামেও পরিচিত, নিজে এসাওয়েরায় বসবাস শুরু করেন এবং ইউরোপীয় ও মরক্কোর শৈলীর সমন্বয়ে একটি আধুনিক শহর ও দুর্গ তৈরি করতে ফরাসি স্থপতি থিওডোর কর্নাটকে নিয়োগ দেন। এরপর শহরটি দ্রুত মরক্কোর প্রধান বন্দর ও ব্যবসাকেন্দ্র হয়ে ওঠে।
ফেরার চমক
চার ঘণ্টা হেঁটে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ধীরে ধীরে গেটের দিকে এগোতেই দেখলাম, বাকি সবাই উপস্থিত। গাড়ি মারাকেশের দিকে মুখ ঘোরাল। ঘণ্টা তিনেক লাগবে। গাইড মনে করিয়ে দিলেন, পথে একবার থামতে হবে আমাদের। যথারীতি সেই স্থানে এসে গাড়ি থামল। পথের ওপাশে তাকিয়ে আমি তো থ! সবারই এক অবস্থা। সবাই হুলুস্থুল করে গাড়ি থেকে নামলাম। কী দেখলাম! গাছের মগডালে ছাগল! গাছজুড়ে ছাগল! মনে হচ্ছে এ যেন ছাগলের গাছ; মানে এই বৃক্ষ ছাগল উৎপাদন করে!
এ প্রসঙ্গে আবার ফিরছি আরগান তেলের কথায়। এক লিটার আরগান অয়েলের দাম প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আমাদের গাইড এমনটিই জানালেন। এই মূল্যবান আরগান তেল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এক বিশেষ প্রজাতির ‘গেছো ছাগল’। স্থানীয় বাসিন্দারা আরগান গাছের চাষ করে থাকেন। দেখতে ডিম্বাকার আরগান ফল অবশ্য কিছুটা তেতো। এই ফলের বীজ থেকে পাওয়া তেল ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় ব্যবহার করা হয়। এই তেলের বিশেষ অ্যান্টি-এজিং কার্যকারিতার জন্যই গোটা বিশ্বে এর চাহিদা তুঙ্গে। কিন্তু এই তেল প্রস্তুতকরণে এসব ছাগলের ভূমিকা কী? এই ছাগলগুলো গাছে চড়ে বীজসমেত পাকা ফল খেয়ে ফেলে। কিন্তু বীজগুলো হজম না হওয়ায় তা তাদের মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেই বীজ শুকিয়ে তেল বের করেন। মরক্কো ছাড়াও পশ্চিম আলজেরিয়ায় এমন ‘গেছো ছাগল’ দেখা যায়।
সারা দিনের ক্লান্তি কেটে গেল গেছো ছাগলের কার্যকলাপ দেখে। আরও কিছুক্ষণ থাকতে ইচ্ছে করছিল সেখানে। মনে হচ্ছিল, ঠায় বসে থেকে ছাগলের আরগান ফল খাওয়া থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়া দেখি। গরু-ছাগলের মল দিয়ে জ্বালানি তৈরি হয় আমাদের দেশে; সার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মরক্কোর ছাগলের মল দিয়ে তো তৈরি হয় তরল সোনা!
গ্রুপ ট্যুরে ঘড়ি ধরে ফেরার তাড়া থাকায় পুরো প্রক্রিয়া দেখার সুযোগ পেলাম না। সে যা হোক, ভ্রমণ শুরু হয়েছিল মূল আকর্ষণ এসাওয়েরা দেখার জন্য। মেদিনা মুগ্ধ করেছে আমাকে। মেদিনাকে ছাড়িয়ে আনন্দ দিয়েছে গেছো ছাগল!
ছবি: লেখক