skip to Main Content

সেলুলয়েড I ব্লু ভেলভেট

চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: ডেভিড লিঞ্চ
চিত্রগ্রহণ: ফ্রেডেরিক এলমস
সম্পাদনা: ডুয়াইন ডানহ্যাম
অভিনয়: কাইল ম্যাকল্যাচলান, ইজাবেলা রোজেল্লিনি, ডেনিস হপার, লরা ডার্ন
সময়ব্যাপ্তি: ১২০ মিনিট
ভাষা: ইংরেজি
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র
মুক্তি: ১৯৮৬

বাবার অসুখের খবরে বাড়ি ফেরে কলেজপড়–য়া তরুণ জেফ্রি। একদিন হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে, এক জমিনে পড়ে থাকতে দেখে একটি কাটা কান। মানুষের। কার কান? কোত্থেকে এলো? কী তার রহস্য? উৎসুক জেফ্রি জানায় পরিচিত গোয়েন্দাকে। তা নিয়ে ছিমছাম শহরতলিতে গুঞ্জন। এই ফাঁকে নিজেই গোয়েন্দাগিরি শুরু করে জেফ্রি। তার অংশ হিসেবে, একদিন ঢুকে পড়ে এক অ্যাপার্টমেন্টে। যেখানে এক গায়িকার বাস। আলমিরায় লুকিয়ে দেখতে থাকে সেই অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে চলা সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড। সেখানে গায়িকার ওপর বিকৃত নিপীড়ন চালায় এক গুন্ডা সর্দার।
ইতোমধ্যে তার উপস্থিতি ধরা পড়ে যায় গায়িকার কাছে। ঘটনাক্রমে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে একধরনের প্রাগৈতিহাসিক সখ্য। তাতে জেফ্রির সম্মতি যতটা, তার চেয়ে বেশি ওই গায়িকার জবরদস্তি। এরই ভেতর দিয়ে জেফ্রি বুঝে যায়, ওই কাটা কান গায়িকাটির স্বামীর। যে বন্দি রয়েছে গুন্ডা সর্দারের কাছে, পুত্রসমেত। স্বামী ও সন্তানের জীবন রক্ষায় এই গায়িকা বস্তুত ওই গুন্ডা সর্দারের যৌনদাসীতে পরিণত এখন।
এদিকে এই গোয়েন্দাগিরিতে জেফ্রি শুরু থেকে সহায়তা নেয় নিজ কলেজেরই এক ছাত্রীর, যে তার প্রতিবেশী গোয়েন্দার কন্যা। নাম স্যান্ডি। তার প্রেমিক রয়েছে। তবু চলতে চলতে প্রেম হয়ে যায় স্যান্ডি ও জেফ্রির। আগাগোড়াই জেফ্রিকে সতর্ক করতে থাকে মেয়েটি। বারণ করতে থাকে এমন গোয়েন্দাগিরি চালানোর। তবু একদিকে কৌতূহল, অন্যদিকে গায়িকাকে বিপদ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার তারুণ্যদীপ্ত হিরোইজম জেফ্রিকে চালিত করতে থাকে বিপৎসংকুুল প্রবণতার দিকে।
অবশেষে একদিন ধরা পড়ে যায় সে গুন্ডা সর্দারের হাতে, যার রয়েছে গ্যাং, যাদের কাজ অবৈধ মাদক ব্যবসা ও অপরাপর অপরাধকর্ম। সে বেলা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে, গায়িকার কল্যাণেই প্রাণে বেঁচে যায় জেফ্রি। আর গোয়েন্দা বিভাগে হাজির হয়ে বুঝতে পারে, এদেরই একজন ওই গুন্ডা সর্দারের দলে যুক্ত। ইতোমধ্যে গায়িকার সঙ্গে জেফ্রির মেলামেশা ঘিরে স্যান্ডির মনে সন্দেহ জাগে। তবু আবারও গায়িকার অ্যাপার্টমেন্টে হাজির হয় জেফ্রি। এবার পড়ে যায় ভয়ানক বিপদে। গিয়ে দেখে, সেখানে গায়িকার এক কানবিহীন স্বামীকে মেরে বসিয়ে রাখা হয়েছে চেয়ারে। আবারও ধরা পড়ে যায় জেফ্রি। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে তাকে এবার বাঁচিয়ে আনে স্যান্ডি ও তার বাবা। এখানেই শেষ ‘ব্লু ভেলভেট’-এর কাহিনি।
তবে যতটা সরল মনে হলো, মোটেই ততটা নয় এর নির্মাণশৈলী। কেননা, এর নির্মাতা পরাবাস্তব ও ফিল্ম নোয়্যা ধারার মিশ্রণে নিজস্ব ফিল্মি ভাষা সৃষ্টিকারী আমেরিকান মাস্টার ফিল্মমেকার ডেভিড লিঞ্চ। এই সিনেমাতেও তিনি ফিল্ম নোয়্যার সঙ্গে মাস্টারফুল মিশ্রণ ঘটিয়েছেন সাইকোলজিক্যাল হররের। এর ফ্রেমে ফ্রেমে, ইমেজে ইমেজে ছড়িয়ে রয়েছে গা ছমছমে আবহ। আরও রয়েছে প্রতীকীবাদের দারুণ সমাহার। মুক্তির পর থেকেই ‘ব্লু ভেলভেট’ একই সঙ্গে বহু প্রশংসা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তা থামেনি এখনো। সব মিলিয়ে লিঞ্চের সিনে-দুনিয়ার একটি পরীক্ষাযোগ্য উদাহরণ হয়ে আছে এটি।

 আরিফুল ইসলাম

কুইজ
১। ‘ব্লু ভেলভেট’ কোন ধারার সিনেমা?
[ক] বডি হরর
[খ] মিস্টেরি
[গ] সাইকোলজিক্যাল হরর
[ঘ] রোম্যান্টিক

২। কোন ঘটনা ঘিরে সিনেমাটির কাহিনির বিস্তার ঘটেছে?
[ক] জমিনে পড়ে থাকা কাটা কান
[খ] হারিয়ে যাওয়া কানের দুল
[গ] ভুলক্রমে গুলি ছোড়ার ঘটনা
[ঘ] অ্যাপার্টমেন্টে চুরির ঘটনা

৩। স্যান্ডির বাবা কে?
[ক] চিকিৎসক
[খ] সাংবাদিক
[গ] পেশাদার খুনি
[ঘ] গোয়েন্দা পুলিশ

গত পর্বের বিজয়ী

১. সুমাইয়া সুমি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
২. মনি, নাজিরপাড়া, চট্টগ্রাম।
৩. হাফিজ, বাড্ডা, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top