ইভেন্ট I লোকাল কালিনারি হেরিটেজ
ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী দেশি খাবারের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন, ‘দ্য লোকাল কালিনারি হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’। তাতে ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার প্রসিদ্ধ খাবারের উপস্থাপনা। হোটেলটির শেফদের তত্ত্বাবধানে এবং বিভিন্ন বিদেশি অতিথি ও ফুড ক্রিটিকের উপস্থিতিতে ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিদ হামিদ এফআইএইচ। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও এবং বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ আবু তাহির জাবের। মিস্টার শাহিদ হামিদ বলেন, ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলাদেশি হোটেল ব্র্যান্ড হিসেবে ঢাকা রিজেন্সি সব সময় স্থানীয় ও বিদেশি অতিথিদের কাছে বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রচার ও পরিচয় করিয়ে দিতে অনুপ্রাণিত।’ ইভেন্টটি চলে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। মিডিয়া পার্টনার ছিল ক্যানভাস।
ঐতিহ্যবাহী নানা খাবারে সাজানো এই বিশাল আয়োজনে খাবার মূল্য ছিল জনপ্রতি ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা। সঙ্গে সিলেক্টেড কার্ড হোল্ডার পেয়েছেন বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি! ঢাকা রিজেন্সির লয়ালটি প্রোগ্রাম—প্রিমিয়ার ক্লাব মেম্বাররা বুফে ডিনারে পেয়েছেন অগ্রাধিকার।
এই আয়োজনের সময়কাল ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে ঢাকা রিজেন্সির জনপ্রিয় গ্র্যান্ডডিওস রেস্টুরেন্টের মনোরম পরিবেশে বাংলা সংগীতের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাঁশি ও সেতারের মিষ্টি সুর-মূর্ছনার ছিল ব্যবস্থা। রেস্টুরেন্টের প্রবেশপথের পাশেই ‘হার কালা’, ‘ওরে নীল দরিয়া’র মতো কালজয়ী সব গানের ইনস্ট্রুমেন্টাল সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
জানা কথা, ভোজনপ্রিয় জাতি হিসেবে খ্যাতি আছে বাঙালির। আমাদের মা-নানি-দাদিদের রান্নার স্বাদ এখনো প্রশংসিত! যা মনে পড়লে অতীতের সেই স্বাদ ও ঘ্রাণের ঘোরে হারিয়ে যাই অনেকে। অতীতে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবার যা রান্না করার পর আনন্দ উৎসবে মেতে উঠতাম, আমাদের নানি-দাদিরা নিজ হাতে মসলা বেটে দেশীয় উপাদান যোগে যেগুলো রান্না করতেন, বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই তা ভুলতে বসেছে! তা আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিতেই ঢাকা রিজেন্সির এই উদ্যোগ। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, রিজেন্সি সব সময় দেশীয় ঐতিহ্যকে ধারণ করে। দেশীয় স্বাদকে প্রাধান্য এখানে সব সময়ই দেওয়া হয়। এখানকার শেফরা শতভাগ দেশীয় মসলা ও উপকরণ ব্যবহার করেন। বলে রাখা ভালো, আন্তর্জাতিক বা বিদেশি অতিথিদের কাছে এ ধরনের খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে বাঙালি আতিথেয়তার প্রচার ও প্রসার ঘটাতে হোটেল রিজেন্সি ভূমিকা রাখছে।
দ্য লোকাল কালিনারি হেরিটেজ অব বাংলাদেশ ইভেন্টটি এ দেশের যেসব ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক খাবারে সাজানো হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চট্টগ্রামের মেজবান ও কালাভুনা, সিলেটের সাতকড়া বিফ, খুলনার চুইঝাল, কক্সবাজারের লইট্টা ভাজি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কালাইয়ের রুটি ইত্যাদি; সঙ্গে পুরান ঢাকার খাসির লেগ রোস্ট, নেহারি-তেহারি আর বিরিয়ানি তো ছিলই! মিষ্টি-মন্ডার মধ্যে ছিল নাটোরের কাঁচাগোল্লা, নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি, বরগুনার চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা ও মুইট্টা পিঠা, বগুড়ার দই, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, মেহেরপুরের রসকদম্ব ইত্যাদি; সঙ্গে হরেক রকমের ভর্তা!
ফুড ডেস্ক
ছবি: ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট-এর সৌজন্যে