skip to Main Content

এই শহর এই সময় I নৃত্যে চিত্রে

১৭ জুন ছিল পবিত্র ঈদুল আজহা। যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে আনন্দের এ দিন উদ্‌যাপনে অংশ নিয়েছেন এবং এর সাক্ষী হয়েছেন রাজধানীবাসী। ঈদের রেশের পাশাপাশি অন্যান্য আয়োজনেও জুন জুড়ে যথারীতি ব্যস্ত ছিল ঢাকার শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গন।
১১ জুন। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, পাংখোয়া, খাসিয়া, লুসাই, রাখাইন, গারো, হাজং, সাঁওতাল, ওঁরাও এবং মণিপুরী—বাংলাদেশের এই ১৩ ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উৎসব ২০২৪। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে। জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে। তাতে শিল্পীরা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরিবেশন করেন। শুরুতে পরিবেশিত হয় উদ্বোধনী নৃত্য। এরপর মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে মূল পর্বের আনুষ্ঠানিক সূচনা। এ আয়োজনে ছিল রাখাইন সম্প্রদায়ের আর কে রাখাইন গ্রুপের ‘প্রদীপ নৃত্য’; চাকমা সম্প্রদায়ের মনোঘর শিল্পীগোষ্ঠীর ‘চাকমাদের জীবনধারা’; ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের ‘হজাগিরি নৃত্য’; মণিপুরী সম্প্রদায়ের জ্যোতিনন্দনের ‘মন্দিরা নৃত্য’; পাংখোয়া সম্প্রদায়ের পাংখোয় শিল্পীবৃন্দের ‘শিং নৃত্য’; হাজং সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, বিরিশিরি নেত্রকোনার ‘জীবন ধারা’; মারমা সম্প্রদায়ের কালারস অব হিলের ‘উৎসব নৃত্য’; তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ফুকালাং শিল্পীগোষ্ঠীর ‘মাছ ধরা নৃত্য’; সাঁওতাল সম্প্রদায়ের হিহিড়ি পিপিড়ি শিল্পীগোষ্ঠীর ‘ঐতিহ্যবাহী নৃত্য’; লুসাই সম্প্রদায়ের তপস্যার ‘বাঁশ নৃত্য’; খাসিয়া সম্প্রদায়ের খাসিয়া স্টুডেন্ট ইউনিয়নের ‘একতাই বল’; ওঁরাও সম্প্রদায়ের কারসার ‘মাড়ুয়া নাচ’; গারো সম্প্রদায়ের আনসেংআ আচিক ক্লাবের ‘জীবন ও প্রকৃতি’ প্রভৃতি পরিবেশনা।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উৎসব

অপ্রিয় হলেও সত্য, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নারীদের অবদান ইতিহাসে ব্যাপক পরিসরে এখনো জায়গা পায়নি। তাদের অনেকে এখন আর বেঁচে নেই। সেই নারীদের কথা তুলে আনার প্রয়াসে আয়োজিত হলো বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী। ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে। ২১ থেকে ২৬ জুন। দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায়। আলোকচিত্রী মাশরুক আহমেদের গবেষণানির্ভর ছবি ও শব্দমালার এই প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’। তাতে বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী থেকে শুরু করে ময়মনসিংহের ময়মুনা খাতুন, সিরাজগঞ্জের রাহেলা বেগম, সুনামগঞ্জের কাঁকন বিবির মতো ৩০ জন নারী বীর মুক্তিযোদ্ধার আলোকচিত্র, যুদ্ধকালীন তাদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানের ছবি ও সাক্ষাৎকার স্থান পায়। প্রদর্শনীটির কিউরেটর এ এস এম রেজাউর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের যে বয়ান আমরা দেখি, তা অনেক বেশি পুরুষতান্ত্রিক। সেখানে নারীদের কণ্ঠস্বর খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই কাজটি গুরুত্বপূর্ণ।’
‘ছাপাইচিত্রের পরম্পরা’। ছাপচিত্র-শিল্প সৃজনীশক্তি ও নান্দনিকতায় জনপরিসরে প্রসারিত হওয়ার দাবি নিয়ে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। শুরু হয়েছিল ১১ মে; শেষ হয় ১১ জুন। ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ের কামরুল হাসান প্রদর্শনশালায়। এ দেশের পথিকৃৎ শিল্পী থেকে একেবারে সাম্প্রতিক সময়ের নবীন ছাপচিত্রীদের ৮০টির বেশি ছাপচিত্রকর্ম নিয়ে। শিল্পীরা হলেন অসিত মিত্র, আনিসুজ্জামান আনিস, আবু আল নাঈম, আবুল বারক্ আল্ভী, আবুল হোসেন ঢালী, আব্দুল্লাহ আল বশীর, আব্দুস সালাম, আমিনুল ইসলাম, আশরাফুল আলম রানা, আসমিতা আলম শাম্মী, আহমেদ নাজির, ঋতুরূপা তালুকদার সাথী, এস কে এম সাদী আহমেদ, ওয়াকিলুর রহমান, কাইয়ুম চৌধুরী, কামরুল হাসান, কামরুজ্জামান সাগর, কালিদাস কর্মকার, চিত্রম সাহা, জয়নুল আবেদিন, জয়া শাহরীন হক, জাফর ইকবাল, জাফরিন গুলশান, ঝোটন চন্দ্র রায়, তাহিয়া হোসেন, নিহাররঞ্জন সিনহা, নগরবাসী বর্মণ, নাজিব তারেক, নাসির বিশ্বাস, নিত্যানন্দ গাইন, পলাশবরণ বিশ্বাস, প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ, ফাওয়াজ রব, ফারেহা জেবা, ফারজানা আহমেদ, ফারজানা রহমান ববি, ফারহানা ইয়াসমিন, বনি আদম, মনিরুল ইসলাম, মাহমুদা সিদ্দীকা, মাহমুদুল হক, মুনতাকীম শাওন, মুর্তজা বশীর, মো. জসীম উদ্দিন, মো. নাজির হোসেন খান, মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হোসনে জামাল, মোখলেসুর রহমান, মোহাম্মদ কিবরিয়া, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মজুমদার, রফিকুন নবী, রশীদ আমিন, রশিদ চৌধুরী, রানিয়া আলম, রাফি হক, রাশীদা আক্তার, রুজভেল্ট বেঞ্জামিন ডি’রোজারিও, রুমানা রহমান, রুহুল আমিন তারেক, রুহুল করীম রুমি, রোকনুজ্জামান উজ্জ্বল, রোকেয়া সুলতানা, শহিদ কবির, শুভ সাহা, সফিউদ্দীন আহমেদ, সাইদুল হক জুইস, সাদেক আহমেদ, সুজিত সরকার, সুবর্না মোর্শেদা, সুলতান, সৌরভ চৌধুরী, স্বপন কুমার সানা, হাবিবুর রহমান, হামিদুজ্জামান খান ও হীরা সোবহান। ইতিহাস বলে, বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলা আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ছাপচিত্রের বিকাশ। শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদ ও মোহাম্মদ কিবরিয়ার হাতে এ দেশে ছাপচিত্রের শক্তিশালী ভিত গড়ে উঠেছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের শিল্পীরা এ মাধ্যমে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সূচনা করেছিলেন, তা সমসাময়িক শিল্পীদের চর্চায় প্রবহমান। ‘ছাপাইচিত্রের পরম্পরা’য় ঐতিহাসিক ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরম্পরা ও নিরীক্ষা প্রবণতা তুলে ধরতে, পঞ্চাশের দশক থেকে সমসাময়িককালের ছাপচিত্রীদের নির্বাচিত শিল্পকর্ম স্থান পায়।

 লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top