skip to Main Content

ফিচার I নিবিড়ের নিউইয়র্ক জয়

দেশের গণ্ডি পেরিয়েছেন বহু আগে। যুদ্ধাহত ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে হেঁটেছেন নিউইয়র্ক কতুর ফ্যাশন উইকের র‌্যাম্পে। অর্জনের সোনালি মুকুটে যুক্ত হলো নতুন পালক

দেশের মডেলিং ইন্ডাস্ট্রির দারুণ জনপ্রিয় মুখ নিবিড় আদনান নাহিদ। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে আন্তর্জাতিক রানওয়েতে পা রেখেছেন বহুবার। এবার নিবিড় মাতিয়েছেন নিউইয়র্ক। ফ্যাশন মান্থ হিসেবে পরিচিত সেপ্টেম্বরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাশন ইভেন্ট নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইক। ঝলমলে এই উৎসবের বিশেষ আয়োজন নিউইয়র্ক কতুর ফ্যাশন উইক। ঐতিহ্যবাহী এই ফ্যাশন সপ্তাহের ইতিহাস বহু পুরোনো। ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতিবছর আয়োজিত হচ্ছে ফ্যাশনের এই মহা আয়োজন। এবারের লালগালিচায় নিবিড় হেঁটেছেন ডিজাইনার মাজিদ লোদীর পোশাকে।
নিবিড়ের ভাষায়, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গন বর্তমান ফ্যাশন দুনিয়ার অলিগলি চিনতে সাহায্য করে। বিশ্বের ফ্যাশন-সচেতনদের চাহিদা, তাদের চিন্তা, ফ্যাশন বাজারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয়। নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইক থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা আমার পেশাগত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা। এখানে এসে দেখেছি কীভাবে একটি ফ্যাশন ইভেন্ট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হয়। ব্যাক স্টেজ থেকে শুরু করে রানওয়ে এবং প্রেস মিটে অনন্য অভিজ্ঞতা হয়েছে। আয়োজকেরা নিউইয়র্কসহ বিশ্বের বিখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিনের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে মডেলদের সরাসরি পরিচয় পর্ব এবং ফটোশুটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল; যা প্রত্যেক ফ্যাশন মডেলের জন্য আকাঙ্ক্ষিত। কারণ, একই ছাদের নিচে গুরুত্বপূর্ণ সব ফ্যাশন ম্যাগাজিনের উপস্থিতি যোগাযোগের পথ তৈরি করে দেয়। আমিও বেশ উপকৃত হয়েছি বলা যেতে পারে। বিশেষ করে নিউইয়র্ক বেইসড ফ্যাশন ম্যাগাজিন বিটিএন আমার বিষয়ে জানতে এবং ছবি তুলতে আগ্রহ দেখিয়েছে।’
আরও বলেন, ‘মূল মঞ্চের আলোকসজ্জা ডিজাইনার ড্রেসের এই প্রদর্শনের জন্য উপযোগী করে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যা দর্শকদের দৃষ্টিতে সৃজনশীল রূপে ধরা দিয়েছে। ভেন্যুর আকার ছিল বেশ বড়। সূচনায় অপেরা এবং সমাপ্তিতে ছিল ব্যালে শো। ফ্যাশনের সঙ্গে সংস্কৃতির সরাসরি সম্পর্ককে এই পর্বগুলো আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল। সুর, ফ্যাশন আর নৃত্যের সম্মিলন দর্শকদের পুরো সময় মাতিয়ে রেখেছে। সময়ের বিষয়েও দারুণ সচেতনতা দেখতে পেয়েছি। ব্যাক স্টেজের পেশাদারি মন কেড়েছে। হেয়ার ডু, মেকআপ ও ড্রেসআপের জন্য ভিন্ন ভিন্ন জায়গার ব্যবস্থা ছিল। ১০০ জন মডেলের জন্য ৫০ জন মেকআপ এক্সপার্ট ছিলেন। ঝক্কি ছাড়াই তাই মেকআপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে; যা আমাকে রেড কার্পেটে শতভাগ মনোযোগ দিতে সাহায্য করেছে। আয়োজনের সুবাদে নিউইয়র্কভিত্তিক মডেলদের সঙ্গে পরিচয় ও আলাপচারিতার সুযোগ ছিল। দেখতে পেয়েছি ফিটনেস সম্পর্কে তাদের সচেতনতা। একই সঙ্গে তাদের যোগাযোগের আন্তরিকতাও মুগ্ধ করেছে। মনে হয়েছে, ফ্যাশন বিশ্বের এই রাজত্বে মডেলরা একজন অন্যজনকে শুধু স্কিলের স্কেলেই মাপেন। দেশভিত্তিক কোনো পক্ষপাতিত্ব চোখে পড়েনি। ডিজাইনার, ফ্যাশন সাংবাদিক এবং মডেলদের সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। তাদের কাছে বাংলাদেশের মডেল অচেনা হলেও বাংলাদেশ অচেনা নয়। বাংলাদেশের ফ্যাশন দুনিয়াকে তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গর্বের সঙ্গে বলেছি, আমি একজন বাংলাদেশি।’
নিবিড় আরও জানান, এবারে নিউইয়র্ক কতুর ফ্যাশন উইক থেকে আয় করা সব অর্থ দেওয়া হবে ফিলিস্তিনের হতাহতদের সাহায্যে। এই মহতী উদ্যোগ তাকে আকর্ষণ করে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা তাকে বুঝতে সাহায্য করেছে ফ্যাশন বিশ্ব কীভাবে নিপীড়িতের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে। ঝলমলে এই জগতের একদম অন্যতর রূপ দেখতে পেয়েছেন তিনি; যা তাকে এই শোর অংশ হতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
এদিকে, নিউজার্সিতে ২২ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল দুলহান ব্রাইডাল এক্সপো। ফল ২০২৪ এর জন্য তৈরি বিয়ের পোশাক সেখানে প্রাধান্য পেয়েছে। এখানেও অংশ নিয়েছেন নিবিড়। এশিয়ান মডেলরা, বিশেষত পাকিস্তানি ও ভারতীয়রা এই আয়োজনে গুরুত্ব পেলেও তাতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবারই প্রথম। নিবিড়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বাংলাদেশেরও অর্জন বটে।
দেশের বর্ণিল ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ভারতেও সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন নিবিড়। সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু। করোনাকালের আগে টানা চার বছর ভারতীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির স্পটলাইটে ছিলেন তিনি।

 ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: নিউইয়র্ক ফ্যাশন ফটোগ্রাফার সামোরি এবং অর্চি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top