skip to Main Content
গণমানুষের অধিকার উপজীব্যে আর্নির জয়

দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন উইক মঞ্চে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করেছেন প্রতিশ্রুতিশীল ফ্যাশন ডিজাইনার তাসমিত আফিয়াত আর্নি। দেশের ঐতিহ্য, রাজনৈতিক চেতনা আর সংস্কৃতির দৃপ্ত প্রকাশ দেখিয়েছেন নিজের নকশায়।

১২০টি দেশের প্রতিযোগীদের ডিঙ্গিয়ে ১০ জন ডিজাইনার নির্বাচিত হন চীনে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন উইক সাংহাই ২০২৪-এ। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর। সেই মেধাবী ১০ ডিজাইনারের একজন আমাদের দেশের আর্নি । শতভাগ টেকসই ফ্যাব্রিক ব্যবহারে লাক্সারি ওয়্যার প্রদর্শন করেছেন তিনি। হাত-তাঁতে বোনা জামদানি, খাদি, রাজশাহী সিল্ক ব্যবহারে পোশাক তৈরি করেছেন। প্যাটার্নে গুরুত্ব পেয়েছে চলমান সময়ের চাহিদা। অর্থাৎ, ট্র্যাডিশনের সঙ্গে কনটেম্পোরারির এক দারুণ সন্ধি।

সংকলনটির দর্শনে ছিল জুলাই অভ্যুত্থান। গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে এই তরুণী পোশাকে তুলে ধরেছেন। শহিদ ছাত্রদের মুখায়বব ইলাস্ট্রেশনে তিনি একটি সম্পূর্ণ পোশাক অলংকরন করেছেন। শহিদ মুগ্ধর আবেগঘন উচ্চারণ, ‘পানি লাগবে? পানি?’কে টাইপোগ্রাফিতে তুলে এনেছেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতার লাইন ‘বল বীর বল উন্নত মম শীর’ তিনি প্রস্ফুটিত করেছেন পোশাকে। যা অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে উৎসাহিত করেছে তরুণ প্রাণদেরকে।

অনুষঙ্গকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন এই ডিজাইনার। সোনালি অক্ষরে লিখেছেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।

চীন সরকারের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং তাদের পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের কাছে পেয়েছেন প্রশংসা। বাংলাদেশ আর সারা বিশ্বের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনে তার এ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন। ক্যানভাসকে আর্নি বলেন, ‘আমি আমার নিজের দেশকে ধারণ করি। বিশ্বের সবখানে পৌঁছে দিতে চাই আমাদের জয়জয়কার। আমি চেয়েছি গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করতে।’

আগস্ট মাসে আগ্রাসী বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এ দেশ। সেই দুঃসময়ও ধরা পরেছে আর্নির সংগ্রহে।

দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন উইকের মাধ্যমে এক বছরের চুক্তিতে চীনে পাওয়া যাবে বাংলাদেশি এই ডিজাইনারের পোশাক। বিনামূল্যে একটি ফিজিক্যাল শো রুম পাচ্ছেন তিনি। একই সঙ্গে চীনা বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ থাকছে। এ সুবর্ণ সুযোগে আর্নির হাত ধরে বাংলাদেশের ফ্যাশন পণ্য চীনা বাজারে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বলে রাখা ভালো, অল্প বয়স থেকেই ফ্যাশনের প্রতি সহজাত প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন আর্নি। ১৬ বছর বয়স থেকে দেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। দক্ষিণ এশীয় প্রাণবন্ত রং, উপাদান ও মোটিফকে আধুনিক ও গতিশীল শৈলীতে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের ফ্যাশন-দর্শনের উন্মেষ ঘটিয়েছেন।

অন্যদিকে, স্ট্রাইড ফ্যাশন ওয়্যারের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার হিসেবে, লাক্সারিয়াস ও সাসটেইনেবল ম্যাটেরিয়াল ব্যবহারের মাধ্যমে আর্নি বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। হাই-এন্ড ফ্যাশনের সীমারেখা পেরিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য তার।

ফ্যাশনকে ক্ষমতায়নের একটি বাহন হিসেবে ব্যবহার করে নারীদের আত্মমর্যাদাকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন আর্নি। ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন উইক সাংহাই ২০২৪-এ তার নকশাকৃত পোশাকের উপস্থাপন দেশি ও আন্তর্জাতিক দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে।

  • সারাহ্ দীনা/ ক্যানভাস অনলাইন
    ছবি: তাসমিত আফিয়াত আর্নি’র সৌজন্যে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top