skip to Main Content

সঙ্গানুষঙ্গ I 4C সার্টিফাইড

গুণমান যাচাইয়ের এই মানদণ্ড সমাদৃত বিশ্বজুড়ে। পারফেক্ট এনগেজমেন্ট বাছাইয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র। সম্যক জ্ঞান প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা কমায়

কালার
ডায়মন্ডের রং আসলে কিছুটা হলুদাভ। তবে হীরা যদি রংহীন বা একদম এর কাছাকাছি পর্যায়ের হয়, তবে বুঝতে হবে, এটি বিলুপ্ত গোত্রের। সাধারণত ডায়মন্ড বলতে সাদা রঙের অথবা স্বচ্ছগুলোকেই বোঝায়। খুব বেশি সাদা রঙের হীরা আবার মিল্কি হোয়াইট হয় বলে বিখ্যাত ডায়মন্ড জুয়েলার্সরা একে এড়িয়ে চলেন। আলোর বিচ্ছুরণ হয় না, তাই ক্রেতাও আকৃষ্ট হন কম।
ডায়মন্ডের কালারকে ইংরেজি বর্ণমালার ২৬টি অক্ষর অনুসারে প্রকাশ করা হয়। এ থেকে জি পর্যন্ত কালারের ডায়মন্ড সাধারণত অতি উচ্চ মূল্য হওয়ায় তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এইচ থেকে কে কালারের তুলনামূলক কম দামি ডায়মন্ডের চলই বেশি। এল থেকে ডায়মন্ডের কালার হলুদ হতে শুরু করে। জেড পর্যন্ত নানা ধরনের গাঢ় রঙা হীরা দেখা যায়।
কাট
হীরার মান নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কাটই নির্দেশ করে হীরার সঙ্গে আলোর মিথস্ক্রিয়া। এ রত্নের ভিন্নরূপী কাটই এর অনন্যতা প্রকাশ করে। তাই শুধু হীরার ওজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলে চলবে না, খেয়াল রাখতে হবে কাটেরও। কারণ, আঙুলে আলো বিচ্ছুরণের খেলা বুঝিয়ে দেবে পরিহিত হীরা কতটা অসাধারণ।
আঙুলের গোড়ায় ঝলমল করা হীরাটি শুধু ঠাটবাটের জানান দেয় তা কিন্তু নয়, বরং শৌখিনতার পরিচয়ও দেয়। তাই হীরার কাট হতে হবে স্বচ্ছ।
বিখ্যাত সব ডায়মন্ড হাউসে একে সঠিক শেপ দিতে নিয়োগ দেওয়া হয় স্পেশালিস্ট কিংবা বিশেষ কারিগরদের। যাদের মূল কাজ ডায়মন্ডকে এমন আকারে রূপান্তর করা, যেন তা থেকে সুনিপুণভাবে আলো ছড়াতে এবং আলো প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।
হীরকপ্রেমীদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত আংটি হলো ট্রিপল এক্সিলেন্ট কাট ডায়মন্ডে গড়ানো। সেলিব্রিটিদের আঙুলে থাকা বাগদানের আংটিগুলো তারই উদাহরণ। শুধু এক্সিলেন্ট স্ট্যান্ডার্ড প্রাপ্ত ডায়মন্ডগুলোই ট্রিপল এক্সিলেন্ট কাটের অন্তর্ভুক্ত। এই কাটের ডায়মন্ড থেকে আলোর বিচ্ছুরণ হয় সবচেয়ে বেশি, তাই এটি লক্ষণীয়ও।
মূলত ব্রিলিয়ান্ট, স্টেপ, মিক্সড—এই তিন কাটে ডায়মন্ডের আংটিগুলোকে ক্রেতাপ্রিয় আকার দেওয়া হয়। ব্রিলিয়ান্ট কাটে আলোর প্রবেশ এবং বের হওয়াটা সবচেয়ে বেশি ইউনিক। কুশন, ওভাল, মারকিস, পিয়ার, হার্টশেপড ডায়মন্ড এই কাটের মাধ্যমে সৃষ্ট। স্টেপ কাট ব্যবহারে কাটা হয় জনপ্রিয় এমারেল্ড কাট ডায়মন্ড।
ক্লারিটি
ডায়মন্ডের ক্লারিটি বলতে বোঝায় হীরাটি কতটা মূল্যবান আর ইউনিক। হীরার গায়ে কোনো আঘাত, আঁচড় কিংবা দাগ না থাকলে বুঝতে হবে, এটি আন্ডার-১০ পাওয়ার ম্যাগনিফিকেশনের মূল্যবান পাথর। অর্থাৎ এটি ত্রুটিহীন অটুট ডায়মন্ড।
ডায়মন্ডের ক্লারিটি কম থাকার অর্থ হলো, এতে আলোর প্রতিফলন-প্রতিসরণ সঠিকভাবে হবে না; অর্থাৎ ডায়মন্ড পরিহিত অবস্থায় আলোর যে ঝলমলে ভাব তৈরি হওয়ার কথা, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আলো বাধাপ্রাপ্ত হয় বলে এই ধরনের হীরা ফ্যাকাশে দেখায়।
ক্যারেট ওয়েট
আলিয়া ভাট, ঐশ্বরিয়া রাই অথবা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—সেলিব্রিটিরা বিগ ডায়মন্ড জুয়েলারি শো-অফ করতে ভোলেন না কখনোই। আর কেনই-বা ভুলবেন, যত বেশি ক্যারেট ওয়েট, তত বেশি রেয়ারিটি। রাউন্ড, প্রিন্সেস, পিয়ার, এমারেল্ড, হার্ট ইত্যাদি শেপের ওপর নির্ভর করে ডায়মন্ডের ক্যারেট ওয়েটের তারতম্য হতে পারে। আবার ক্যারেট ওয়েট যে ডায়মন্ডের সাইজকে নির্দেশ করে, তা কিন্তু সব সময় নয়।
ডায়মন্ডের ক্যারেট ওয়েটের কালার, কাট এবং ক্লারিটির জন্যও ভিন্ন রকম হতে পারে। তবে বেশি ক্যারেট ওয়েটের ডায়মন্ডের আংটি কিনতে গেলে বাজেট মাথায় রাখাই শ্রেয়।
ডায়মন্ডের আবেদন চিরকালই স্থায়ী। নারীদের মধ্যে মূল্যবান এ রত্ন কেনা নিয়ে যে একটা আকাঙ্ক্ষা, তা যেন কোনোভাবেই অস্বীকারের উপায় নেই। তাই ডায়মন্ড কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এই 4C এর কথা। আর সঙ্গে যদি একজন ডায়মন্ড লাভারকে নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে তো কথাই নেই।

 বিদিশা শরাফ
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top