সাবেক মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রাশিয়ার বর্তমান রাজনীতিতে কমিউনিস্ট রাজনীতির নব-উত্থানের সম্ভাবনা নিয়ে অনেকেই আলাপ করে থাকেন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদকে রাশিয়া ফের আপন করে নেবে কি না, এটা লাখ টাকার প্রশ্ন। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে রাশিয়া যে ম্যাওবাদ নিয়ে মেতে থাকবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত। মাও সে তুং-এর চীন ধ্রুপদি মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বদলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাজার অর্থনীতির সঙ্গে সহাবস্থান করলেও রাশিয়ায় বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ম্যাওবাদের ভজনা।
তবে মাওবাদ আর ম্যাওবাদের ফারাক অনেক। মার্কস-লেনিনের দর্শনের বিকাশে মাওবাদ সমাজবিপ্লবের একটা পন্থা, কিন্তু রাশিয়ায় ম্যাওবাদ বিশ্বকাপ ফুটবলের ভবিষ্যদ্রষ্টা সম্পর্কিত একটি মার্জার বা বিল্লিকে কেন্দ্র করে প্রবল আলোচিত। সেই বিড়ালটির নাম অ্যাকিলিস। বাজার অর্থনীতির বিশ্বায়নের যুগে সাবেক কমিউনিস্ট দেশ রাশিয়ায় ফুটবলের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দেশগুলোর ভবিষ্যৎ নাকি আগাম বলে দিতে পারেন এই বিল্লি। তাই বিশ্বকাপের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ফুটবলের মতোই গোলগাল নাদুসনুদুস চেহারার অ্যাকিলিস।
২০১০-এর বিশ্বকাপে এখনকার অ্যাকিলিসের মতোই আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন পল নামের একটি অক্টোপাস। সেবারের বিশ্বকাপে একের পর এক ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি প্রমাণিত করে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিলেন পল। কিন্তু মাত্র ৩৩ মাসের জীবন সাঙ্গ করে সবাকে ছেড়ে চলে যান ওই অক্টোপাস। আর তারপর আবির্ভূত হয়েছেন ক্রীড়া জগতে নস্ত্রাদামুস অ্যাকিলিস নামের বিড়ালটি। ২০১৭ সালে কনফেডারেশন কাপে ভবিষ্যদ্বাণী করে নিজের স্বমূর্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করেছিলেন অ্যাকিলিস। আপাতত তাঁর বাসস্থান সেন্ট পিটার্সবার্গের হার্মিটেজ জাদুঘরে। সুন্দরী এই বিড়ালকে লোকজন খাইয়ে খাইয়ে বেশ মোটাসোটা করে তুলেছিল, কিন্তু সুস্থতার জন্য প্রয়োজন স্লিম-ফিগার। আর তার শারীরিক কসরতের পাশাপাশি তাকে ডায়েট করানোও হচ্ছে হার্মিটেজ জাদুঘরের পাশে পোষ্য প্রাণীদের এক দোকানে। বিশ্বকাপে যাতে ফিট থাকেন অ্যাকিলিস এবং ম্যাও-ম্যাও ডাক ছেড়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন, সেই দিকে তাকিয়ে গোটা রাশিয়া। তবে শুধু রাশিয়াই নয়, বিশ্বের সব কটা ফুটবল দেশ অ্যাকিলিসের দিকে তাকিয়ে। রাশিয়ার দেখানো পথে বিশ্বকাপের দেশগুলো আজ ম্যাওবাদী।