skip to Main Content

অ্যাডভার্টোরিয়াল I ফিট এলিগ্যান্সের জয়যাত্রা

ফিট এলিগ্যান্স লিমিটেড। বাংলাদেশের প্রথিতযশা ফ্যাশন ব্র্যান্ড। এগিয়ে চলছে ওয়াহিদা শারমিনের নেতৃত্বে। ক্লান্তিহীন পরিশ্রমের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। কলেবর বাড়িয়েছেন ব্র্যান্ডটির। বাংলাদেশের তিনটি বড় শহরে বারোটি আউটলেট নিয়ে চলছে জয়যাত্রা।
ওয়াহিদা শারমিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে ২০০৪ সালে ফিট এলিগ্যান্স লিমিটেডে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি যখন দায়িত্ব নেন, তখন ফিট এলিগ্যান্স ঢাকায় দুটি আউটলেট নিয়ে একটি ছোট্ট ব্র্যান্ড। এ ছাড়া তিনি ফিমে এবং জাদীদ নামে দুটি সাব-ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন।
বর্তমানে তিনি ফিট এলিগ্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর বাইরে প্রতিশ্রুতিশীল বুটিক ব্র্যান্ড মেহউইশ ক্লজেটের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের পোশাক ও ফ্যাশনশিল্পে রয়েছে তার অবদান। রেডিমেড ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি মানসম্পন্ন খাবার তৈরির শিল্পেও তিনি বেশ পারদর্শী। শৈল্পিক মন দিয়ে খাদ্যপ্রেমীদের জন্য দ্য উইকেন্ড কিচেন তৈরি করেছেন। দেশ-বিদেশে নানান পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এগুলোর মধ্যে এশিয়া বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪, ডিআইটিএফ সেরা ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড, ফ্যাশনের জন্য মিরর রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড, আর্ট ফ্যাশন অ্যান্ড বিয়ন্ড অ্যাওয়ার্ড ২০২২ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
জয়রথ কাব্যে ওয়াহিদা শারমিন বলেন, ‘ফিট এলিগ্যান্সের সূচনাপর্ব ২০০১ সালের ২৬ মার্চ, তেজগাঁও শিল্প এলাকায় মাত্র ৫ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে। সিগনেচার প্রোডাক্ট স্যুট। আন্তর্জাতিক বাজারের চিরকালীন আবশ্যক ফরমাল পোশাক। আর সে সময়ে স্যুট পরিচিত কেতাদুরস্ত, বিলাসী, আনুষ্ঠানিক পোশাক হিসেবে; আবশ্যিক হিসেবে নয়। টেইলর মেইড সার্ভিসের তখন রমরমা। রেডিমেড স্যুটের প্রতি আগ্রহ ছিল শূন্যে। ফিটফাট ফিটিং সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে গ্রাহকের মনে চলত দোলাচল। রেডিমেড স্যুটের বিষয়ে ক্রেতাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করি। একই সঙ্গে সংকল্প ছিল স্যুটের গায়ের বিলাসী পণ্যের তকমা মুছে দিয়ে বাজেট ফ্রেন্ডলি ডেইলি ওয়্যারে পরিণত করার।’
জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ডের নামকরণের সঙ্গে প্রোডাক্ট লাইনের রয়েছে দারুণ মিল। এর পেছনের গল্প জানালেন ওয়াহিদা শারমিন, ‘প্রথম থেকেই স্যুট, ব্লেজার ও ট্রাউজার—প্রোডাক্ট লাইনে এই তিন পণ্য ছিল মুখ্য ভূমিকায়। স্যুট, ব্লেজার পোশাকের আভিজাত্য ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পারফেক্ট ফিটিং এবং পোশাকের আভিজাত্য ফুটিয়ে তোলা। এই লক্ষ্যে, সময়োপযোগী ও সঠিক ফিটিংয়ের মানসম্মত অভিজাত পোশাকের চাহিদা পূরণে নামকরণ করা হয়েছিল ফিট এলিগ্যান্স।’
প্রোডাক্ট লাইনের বিস্তারিত বয়ানে ওয়াহিদা শারমিন বলেন, ‘আমাদের মূল পণ্য স্যুট, ব্লেজার ও ট্রাউজার। বিভিন্ন ডিজাইন ও প্যাটার্নে তৈরি করি যত্নের সঙ্গে। ফরমাল ও ক্যাজুয়াল—দুই ধরনের পোশাক আছে আমাদের। রেগুলার ফিট, টাক্সিডো, প্রিন্স স্যুট, শেরওয়ানি, ওভার কোট—এসবের আয়োজন রয়েছে। ট্রাউজারের মধ্যে ফরমাল, কটন, জিনস, রিলাক্স ওয়্যার, শর্ট প্যান্ট ইত্যাদি। সব পণ্যই বিভিন্ন সাইজে রেডিমেড পাওয়া যায়; পাশাপাশি টেইলর মেইড সার্ভিসও রয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাক্ট লাইন কলেবরে বাড়িয়েছি। পুরুষদের পোশাকে যোগ করেছি শার্ট, পাঞ্জাবি, কাবলি; অনুষঙ্গ হিসেবে আছে টাই ও মোজা। লেদার জ্যাকেটও ব্র্যান্ডটির একটি বিশেষ পণ্য। ফিট এলিগ্যান্স কাজ করে নারীদের জন্যও। ফিমেল কালেকশনে আছে কুর্তি। হালের ফ্যাশনে যার গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। মানুষের ব্যক্তিত্ব এবং তার প্রকাশের জন্য সুগন্ধি দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। সেকথা মাথায় রেখেই পারফিউম লাইন রেখেছে ফিট এলিগ্যান্স।’
নকশায় সব সময় যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছে এই ব্র্যান্ড। ওয়াহিদা শারমিন জানালেন তাদের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের পেছনের আখ্যান। ‘সহজ-সরল নকশা নিয়ে কাজ করি আমরা। বাহুল্য এড়িয়ে। ক্রেতার সন্তুষ্টিকে শতভাগ গুরুত্ব দেওয়া হয়। আরামদায়ক কাট আর মানসম্পন্ন সেলাইয়ের কদর করি সব সময়; পাশাপাশি সব বয়সের সম্ভাব্য গ্রাহকের জন্যই পোশাক তৈরির চেষ্টা থাকে; যাতে ফিট এলিগ্যান্সের ঠিকানা আস্থার জায়গা হয়ে উঠতে পারে। কনটেম্পরারি আর কমফোর্ট—এই দুয়ের গুরুত্ব আমাদের কাছে অনেক বেশি। এগুলোর মিশেলে তৈরি করা হয় পোশাক।’
ক্রেতারা তাদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে বেছে নেন ব্র্যান্ড। তাই হাজার ব্র্যান্ডের ভিড়ে ফিট এলিগ্যান্স আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ফরমায়েশি পোশাক তৈরি ব্যবস্থাকে যত্নের সঙ্গে ধরে রেখেছে এই লেবেল। মনের ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক তৈরির সুবন্দোবস্ত রয়েছে এখানে।
ওয়াহিদা শারমিন এ বিষয়ে বলেন, ‘ফিট এলিগ্যান্সের রয়েছেন নানা বয়সী গ্রাহক। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সব বয়সী পুরুষ ও নারী। এর অন্যতম কারণ তাদের চাহিদার প্যারামিটার এগিয়ে রাখা। কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্সকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে ফিট এলিগ্যান্স টিম। কারণ, তারা জানে, ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্টের জন্য কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাস্টমার সার্ভিস, কোয়ালিটি মেইনটেইন এবং নতুন পণ্য সংযোজন একটি ব্র্যান্ডের জন্য একেকটি সিঁড়ি। এর প্রতিটি ধাপ পার হতে প্রয়োজন কাস্টমারের ইতিবাচক অভিজ্ঞতা। তাদের ঘিরেই সব পরিকল্পনা সাজায় আমাদের টিম। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, একটি ব্র্র্যান্ড তৈরি হতে ক্রেতা আবশ্যক। কাস্টমার না থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠান কখনোই ব্র্যান্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে না। তাই প্রত্যেক গ্রাহকের মতামত ও চাহিদাকে বিশ্লেষণ করে ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্টে সর্বোচ্চ ফোকাস করা সম্ভব হয়।’
ছোট একটি শোরুম থেকে যাত্রা শুরু করা ফিট এলিগ্যান্সের এখন আউটলেট ১২টি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট শহরের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাশন ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। ঢাকার তেজগাঁও, ধানমন্ডি, বেইলি রোড, এলিফ্যান্ট রোড, বনানী, যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুর, উত্তরা, বসুন্ধরা সিটি এবং চট্টগ্রামের জিইসি সার্কেলে ও সিলেটের আম্বরখানায় শোরুমগুলো রয়েছে। এ ছাড়া এথনিক ওয়্যার নিয়েও কাজ করে ফিট এলিগ্যান্স। শিরোনাম দিয়েছে জাদীদ। পান্থপথের বসুন্ধরা সিটিতে রয়েছে একটি শোরুম।
শেষ কথায় এই সফল নারী উদ্যোক্তা বলেন, ‘ফিট এলিগ্যান্স সবার জন্য কাজ করতে চায়। তাই পণ্যের বহর বিশাল। দাম বিভিন্ন রকমের। যখন যেমন প্রয়োজন, সে অনুযায়ী পোশাক বেছে নেওয়া যাবে এখান থেকে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে, ফিট এলিগ্যান্সকে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করা এবং বাংলাদেশি ব্র্যান্ড হিসেবে বিশ্বদরবারে জায়গা করে দেওয়া; যাতে আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে অবস্থান দৃঢ় হয় এ দেশের।’

 ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: ফিট এলিগ্যান্সের সৌজন্যে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top