ছুটিরঘণ্টা I হিমালয় কন্দরে
পেশায় সাংবাদিক। ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় কাজ করেন। নেশা পাহাড় ডিঙানো। সমুদ্র কিংবা জঙ্গলেও অরুচি নেই। প্রথম বাংলাদেশি দলের সদস্য হিসেবে হিমালয়ের মানাসলু গিরিশ্রেণি ট্রেকিংয়ের অনন্য অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন পাহাড়পাগল রিয়াসাদ সানভী
কান পাতলেই যে শোনা যায় সুযোগসন্ধানী ল্যামারগিয়ারের চিৎকার। সম্ভবত খাদ্যসন্ধানী কোনো মর্মটের দেখা পেয়েছে। বেশি দিন আগের কথা নয়, হিমালয় তখনো স্বপ্ন-কল্পনা। সারা দিন তার কাছে ছুটে যাবার আকুলি-বিকুলি। একদিন সুযোগ এসেও গেল। জানতে পারলাম, বাংলাদেশ থেকে একটি পর্বতাভিযান দলে আমাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিএমটিসি দেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং নামি পর্বতারোহণ সংগঠন। সেই ক্লাবের ২৯তম হিমালয়ান অভিযানের অংশ আমিও। নেতৃত্বে দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এবং সফল, সেই সঙ্গে দুবারের এভারেস্ট আরোহী প্রথম বাংলাদেশি এম এ মুহিত। এবারের লক্ষ্য ৬ হাজার ২৪৯ মিটারের লারকে পর্বতচূড়া। হিমালয়ের মানাসলু অঞ্চলে এটি অবস্থিত। রূপে, বৈচিত্র্যে মানাসলু সার্কিটের তুলনা মেলা ভার। উচ্চতার নিরিখে অত্যন্ত নিচে থেকে ট্রেকিং শুরু করার সুযোগ থাকায় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর সবুজ বনভূমির মুখরতা পেরিয়ে সুউচ্চ হিমালয়ের রুক্ষ পরিবেশে বেঁচে থাকার সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করার এক দুর্লভ সুযোগ এটি। আর আমার লক্ষ্যও মানাসলু পরিক্রমা সম্পন্ন করা। হিমালয়ান জীবনের সঙ্গে পরিচিত হবার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতায় শরীর কতটা কাজ করে, তা দেখে নেওয়াও আমার প্রধান একটি লক্ষ্য।
দেখতে দেখতে এসে যায় যাত্রা শুরুর দিন। হিমালয়ের দেশে আমরা চলেছি দেশের পতাকাবাহী বাংলাদেশ বিমানে। পাইলটের ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের বিমান তখন উড়ছে ৩৬ হাজার ফুট উপর দিয়ে। আকাশ আজ বেশ অশান্ত। পাইলট সিট বেল্ট বেঁধে বসতে বলেছেন। ক্ষণে ক্ষণে মেঘের দমক এসে ধাক্কা মারছে আমাদের আকাশযানটাকে। মৃদু কাঁপছে বিমান। প্রথম অভিজ্ঞতা বলেই আমি ভয়ে কাঁপছি। হঠাৎ করেই মেঘের দঙ্গল ফুঁড়ে আমরা উপস্থিত হই এক চিলতে নীল উঠোনে। একেবারে পরিষ্কার আকাশ। আরও অবাক করে দিয়ে ছোট্ট জানালা গলে একটু নিচেই রংধনু দেখা যাচ্ছে। এয়ার ট্রাফিকের কারণে কাঠমান্ডুতে নামতে কিছুটা বিলম্ব হয়। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আসতে বিকেল পাঁচটা গড়িয়ে যায়।
কাঠমান্ডুতে আমাদের আবাস থামেলে। এ জায়গার একটা কসমোপলিটন রূপ আছে। পৃথিবীর প্রায় সব কোণ থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসে হিমালয়ের ভুবন ভোলানো সৌন্দর্যে মজে যেতে। থামেল হচ্ছে সেই সব মানুষের আড্ডাখানা। ফলে এখানকার খাবার থেকে পোশাক-আশাক-ভাষা- সবকিছুতেই একটা আন্তর্জাতিক সৌরভ আছে। আমার প্রথম মোমো খাওয়ার অভিজ্ঞতা হলো থামেলেই। মুলা সেদ্ধ থেকে শুরু করে মোষের মাংসের পুর দেওয়া গরম গরম মোমো। কাঠমান্ডুতে এলে চেখে দেখতেই হয়।
পরের দিনটি কাটে ব্যস্ততায়। অভিযানের যাবতীয় কেনাকাটা সারা হলো এক দিনে। কোনো কিছু মিস হলে আর রক্ষা নেই। পর্বতাভিযানে ছোট্ট একটি জিনিসের অভাবও ভোগাতে পারে। তাই সুই-সুতা পর্যন্ত সব জিনিস লিস্টের সঙ্গে মিলিয়ে কেনা হলো। এর মাঝেই আমাদের এজেন্সি ক্লাইম্বালায়ার অফিসে গিয়ে পরিচয় হয়েছে অভিযানের শেরপা গাইডদের সঙ্গে।
পরদিন আমরা রওনা দিই আরুঘাটের উদ্দেশে। আরুঘাট মূলত নেপালের দান্দিং এবং গোর্খা জেলার মাঝে পড়েছে। মানাসলু অঞ্চলের পর্বত অভিযানে এলে অথবা মানাসলু সার্কিট ট্রেকিং করতে হলে বুড়ি গন্ধাকী নদীতীরবর্তী এ জনপদ থেকেই হাঁটা শুরু করতে হয়। ঘণ্টা আড়াই-তিনেক পোখারা হাইওয়ে ধরে চলার পর বাস বলা যায় জাহান্নামের রাস্তা ধরে চলা শুরু করলো। কখনো বাম কাত হচ্ছে, তো কখনো তার উল্টো দিকে। শুধু পথের দুই ধারে জনপদ আর জীবন দেখবার আকুলতাটা ছিল বলে রক্ষা। সেসব দেখতে দেখতে বিকেল নাগাদ পৌঁছে গেলাম আরুঘাট। এখানে গুরুং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। শহুরে হাওয়া তাদের মাঝে লাগতে শুরু করেছে। আরুঘাটের চেহারা আমাদের যেকোনো মফস্বলের মতোই। বিকেলে আমরা ঘুরতে বেরোলাম। সামনেই তাদের নিজস্ব কোনো উৎসব আছে বোধ হয়। নানা রঙের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানি। বুড়ি গন্ধাকী নদীর ঝুলন্ত ব্রিজ পার হয়ে ওপারেও গেলাম। গিরিশ্রেণির গভীর থেকে বরফগলা জল বয়ে নিয়ে চলেছে এ নদী। আগামী কয়েক দিনে আমরা বুড়ি গন্ধাকীর উজান ধরেই চলবো। স্থানীয়দের খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে আমাদের আশ্চর্য মিল। রাতে ডাল, ভাত, মুরগির সঙ্গে পাঁপর ভাজা এবং মজাদার আচার সহযোগে জম্পেশ খাওয়া হলো। নেপালজুড়ে প্রচলিত খাবার এটা। একটি প্রবাদ এ দেশে খুব জনপ্রিয়। ডাল-ভাত পাওয়ার টোয়েন্টিফোর আওয়ার, অল ডে ওয়াক, নো শাওয়ার। হিমালয়ে যারা ট্রেকিং করতে আসবেন, এই আপ্তবাক্য মেনে চলতেই হবে।
পরদিন শুরু হয় আমাদের আসল ট্রেকিং। আরুঘাটের উচ্চতা মাত্র ৬২৪ মিটার। বাংলাদেশের মতোই আবহাওয়া। এখান থেকে আমরা ট্রেকিং করতে করতে পৌঁছে যাই লারকে পাসের কাছে পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতায়। ধীরে ধীরে উচ্চতা অতিক্রম করি এবং এর সঙ্গে নানা জনগোষ্ঠী, তাদের সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচিত হই। এই যেমন আরুঘাটের গুরুং জনগোষ্ঠী। অপেক্ষাকৃত নিচে বাস করার সুবাদে তাদের জীবনে এখন শহুরে হাওয়া। অনেক সুযোগ-সুবিধাই তাদের হাতের নাগালে। আবার হিমালয়ের অনেক উপরে বাস করা শেরপাদের অনেকেই হালে শহরমুখী হলেও এদের গায়ে এখনো হিমালয়ের আদি গন্ধ। ক্রমেই আমরা পরিচিত হচ্ছি এই ট্রেকে। বুড়ি গন্ধাকীর তীর ধরে প্রথম দিন আমরা পৌঁছাই লাপুবেসি। চারদিকে সবুজের অবারিত রাজত্ব। আর দারুণ সব ঝর্না। একেকটার আকার দেখলে ভিরমি খেতে হবে। নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে খরস্রোতা নদী। রাতের নির্জনতা তো ছার, দিনের কোলাহলও চাপা পড়ে যায় তার গর্জনে। দ্বিতীয় দিনের গন্তব্য ছিল খোরলা বেসি। এখানে হলো দারুণ এক অভিজ্ঞতা। একেবারে বলা যায়, গ্লেসিয়ার-গলা ভয়ংকর ঠান্ডা জলে গোসল করতে নেমেছিলাম। প্রথম ডুবে শরীর যেন অবশ হয়ে এলো। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই টের পেলাম আর ক্লান্তি কিংবা ব্যথা নেই। পুরো টনিকের মতো কাজে দিয়েছে এই আইস বাথ থেরাপি। তৃতীয় দিন জগৎ হয়ে পরের দিন পেওয়াতে থাকি আমরা। চতুর্থ দিন ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতার নামরুং। পরদিন আমরা যাত্রা করি সামাগাওয়ের পথে। সামাগাওয়ের আগ পর্যন্ত পুরো পথেই ছিল সবুজের রাজত্ব। কিন্তু তিন হাজার মিটার উচ্চতার সীমা অতিক্রম করতেই চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ আর তাদের সংস্কৃতিও যেন ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল। নামরুং থেকেই তিব্বতি মানুষদের গ্রাম শুরু হলো। এরা সাধারণত উচ্চ হিমালয়ে অঞ্চলে বাস করে। তাদের জীবনযাপন বেশ কঠিন। ফলে প্রাকৃতিকভাবেই অনেক পরিশ্রমী হয় নারী-পুরুষ সবাই। এই পথে প্রথমবারের ট্রেইলে চোখে পড়ে বিশ্বের অষ্টম উচ্চতম শিখর মানাসলু। পৃথিবীর ১৪টি আট হাজার মিটারি পর্বতের অধিকাংশকে কেন্দ্র করে পরিক্রমার পথ আছে। যেমন অন্নপূর্ণা সার্কিট কিংবা ধবলগিরি সার্কিট। মানাসলুর চারপাশ ঘিরে ট্রেক করা যায়। আমাদের অভিযানের একটি লক্ষ্যও কিন্তু মানাসলু সার্কিট ট্রেক করা। সামাগাওতে পরদিন আমাদের বিশ্রাম। এদিন আমরা হাইট গেইনের জন্য গেলাম মানাসলু বেসক্যাম্পের দিকে। চার হাজার মিটার উচ্চতায় যাওয়ার পর সেখানেই থামলাম। এখান থেকে চারপাশের পৃথিবী অন্য রকম। মাথার ঠিক উপরে মানাসলু শিখর। নিচে তাকালে দেখা যাচ্ছে পান্না-সবুজ জলের বীরেন্দ্র তাল। লেককে তাল বলা হয় হিন্দিতে। দূরে বিন্দুর মতো সামাগাও দেখা যাচ্ছে। আমরা যেখানটায় বসে আছি, তার চারপাশেই হরেক রকমের নাম না জানা ফুল। বৈচিত্র্যের অমূল্য ভান্ডার হিমালয়ের এ গোপনপুরে। মনে পড়ে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের হিমালয় ভ্রমণ নিয়ে লেখা। এখানকার নিসর্গে মোহিত হয়ে তিনি দিওয়ান হাফিজের কবিতা আওড়াতে আওড়াতে বলেছিলেন, এই সৌন্দর্য যেন আমরা কখনোই বিস্মৃত না হই।
এই উচ্চতা থেকে আমরা গো হাই, লো স্লিপ নীতি অনুসরণ করি। অর্থাৎ যত দূর পর্যন্ত যাবো তার চেয়ে নিচে ঘুমানোর পরিকল্পনা। এতে উচ্চতাজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি কমে। সামাগাও থেকে পরদিনের গন্তব্য সামদো। সামাগাওতেই আমরা ট্রি লাইন শেষ করে এসেছি। এখানে ছোট ঝোপঝাড়ও প্রায় বিরল। রুক্ষ পাহাড়ি উপত্যকায় শোঁ শোঁ শব্দে হাওয়ার দাপট চলছে সমানে। চমরি গাইয়ের গলায় বাঁধা ঘণ্টার আওয়াজ ভেসে আসছে নিচের উপত্যকা থেকে। এখানকার স্থায়ী বাসিন্দারা তিব্বতি। জানা গেল অদূরেই তিব্বত সীমান্ত। এই বৃষ্টিবিরল অঞ্চলের ট্রেডমার্ক তিব্বতি আবহাওয়া পুরো মাত্রায় সক্রিয়। ঠিক মাথার উপরেই ছয় হাজার মিটারি সামদো পিক। পরদিন সকালে ঘুম ভাঙে কিছুটা টেনশন নিয়ে। আমাদের আজকের গন্তব্য ধরমশালা। উচ্চতা ৪ হাজার ৪৬০ মিটার। এর আগে এত উঁচুতে রাত কাটানো হয়নি। যদি কোনো অসুস্থতায় আক্রান্ত হই; তবে সব দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে তৈরি হয়ে নিলাম। নাশতা সেরে ধরমশালার পথে আস্তে আস্তে এগিয়ে চলি। অবশেষে বারোটা-সাড়ে বারোটা নাগাদ সুস্থভাবেই এসে পৌঁছাই ধরমশালায়। লারকে বেসক্যাম্প এবং পাসের আগে এটিই শেষ আশ্রয় আমাদের। এখানে কোনো স্থায়ী বসতি নেই। কিছু পাথুরে ঘর আর বেশির ভাগই অস্থায়ী তাঁবু। প্রথমবারের মতো আজ তাঁবুতে থাকার অভিজ্ঞতা হবে আমার। এই প্রথম ল্যামার গিয়ারের সঙ্গেও দেখা হলো। ল্যামার গিয়ার হিমালয়ের প্রবাদপ্রতিম এক প্রজাতির শকুন। বিশাল ডানা মেলে সে খাবারের খোঁজে বের হয়েছে।
ধরমশালা থেকে পরদিন আমরা যাত্রা করি বেসক্যাম্পের পথে। টানা নয় দিন ট্রেকিংয়ের পর ২২ অক্টোবর আমরা এসে পৌঁছাই ৫ হাজার ৮৬ মিটার উঁচু বেসক্যাম্পে। ট্রেকিংয়ের শুরু থেকে এ পর্যন্ত চমৎকার আবহাওয়া পেয়েছি। ২৩ অক্টোবর ৫ হাজার ৬৫০ উঁচুতে হাইক্যাম্প স্থাপন করা হলো। সেদিন থেকেই আবহাওয়া বিরূপ হতে থাকে। প্রচন্ড তুষারপাত ও বাতাস শুরু হয়। এর মাঝেই সঙ্গীরা আরও উপরে চলে গেলে আমি বেসক্যাম্পেই থেকে যাই। সঙ্গে একজন পোর্টার অন্য আরেকটি তাঁবুতে। বেলা কিছুটা বাড়তেই আবহাওয়া আরও খারাপ হয়ে আসে। নির্জন এ প্রান্তরে ভয়ংকর বেগে বইতে থাকা বাতাস আর তার সঙ্গে ছিটকে আসা বরফের টুকরোই আমার সঙ্গী। বেশ ভীতিকর পরিবেশ। একলা তাঁবুতে; এর মাঝেও রোম্যান্টিকতা ভর করলো। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। নেই গান শোনার ব্যবস্থা, একটা ম্যাগাজিন আছে সঙ্গে। সেটিই পড়া শুরু করলাম। চারপাশে মনোযোগ নষ্ট করার মতো অনেক কিছুই ঘটতে পারে। কিন্তু একবার নিজের মাঝে ডুব দিতে পারলে দারুণ কিছু সময় কাটানো যায়। একলা এ নির্জন প্রান্তরে দুর্যোগময় আবহাওয়াতেও খুব অসুবিধা হলো না। রাত কেটে গেল। পরদিন ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতে বেরিয়েছি। দূরে হাইক্যাম্পের পথে কিছু কালো বিন্দুকে নেমে আসতে দেখলাম। চিনতে ভুল হলো না। পানি আর চকলেট নিয়ে ছুটে গেলাম। অভিযাত্রীদের মুখে শোনা গেল ভয়ংকর ব্লিজার্ড সব পরিকল্পনা ভন্ডুল করে দিয়েছে। ফলে অভিযান বাতিল করে নেমে আসতে হয়েছে। পরদিন আমরা লারকে পাস অতিক্রম করে নেমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। বেসক্যাম্প থেকে বিশ-পঁচিশ মিনিট হাঁটলেই ৫ হাজার ১০৬ মিটারের লারকে পাস। যারা মানাসলু সার্কিট ট্রেক করতে আসবেন, তাদের জন্য প্রধান বাধা এ পাস। এ পরিক্রমার সবচেয়ে উঁচু জায়গাও এ গিরিপথ। অসংখ্য প্রেয়ার ফ্ল্যাগে বর্ণিল। সবাই নামফলকের কাছে এসে ছবি তুলছে। মুহিত ভাই জাতীয় পতাকা হাতে আমাকে দাঁড় করিয়ে দিলেন। এটিই এখন পর্যন্ত আমার সর্বোচ্চ উচ্চতা ডিঙানো। লাল-সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে শরীরজুড়ে শিহরণ খেলে গেল। আত্মতুষ্টিতে নয়, ভবিষ্যতের আরও বড় রোমাঞ্চের আশায়। পরবর্তী দুদিনে লারকে পাস অতিক্রম করে অন্নপূর্ণা অঞ্চলের দারাপানি এলাকায় শেষ হলো এই ট্রেকিং। তার আগেই অবশ্য রচিত হয়েছে ইতিহাস। প্রথম কোনো বাংলাদেশি দল হিসেবে টিম লারকে মানাসলু সার্কিট সম্পন্ন করেছি আমরা।
ছবি: লেখক