ই-শপ I অর্নেট বাই অনা
শীত ছাড়া সব ঋতুতেই কমবেশি গরম পড়ে। আর এই গরমে মেয়েদের জন্য স্বস্তিদায়ক ম্যাটেরিয়ালে তৈরি পোশাক সরবরাহ করতেই কাজ করছে অর্নেট।
কোনো পূর্বপরিকল্পনা এমনকি, কেমন প্রডাক্ট বিক্রি করা হবে- এই ভাবনাটুকু ছাড়াই তৈরি করা হয় পেজ অর্নেট বাই অনা। পেজটির উদ্যোক্তা জারিন তাসনিম অনা বলেন, ‘একদিন বাসায় বসেই ভাবছিলাম, একটা কিছু করা দরকার। যদিও এমন বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রায়ই করা হয়, কিন্তু চাকরি ও সংসারের ব্যস্ততায় কোনোটির বাস্তবায়ন হয় না।’ সেদিনের ভাবনা হয়তো অন্য রকম ছিল। পরদিনই লোগো তৈরি করে খুলে ফেললেন পেজ।
বিবিএ পড়ার আগে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে কিছুটা অভিজ্ঞতা থাকায় মেয়েদের জামাকাপড় নিয়েই পেজটা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। অনার মতে, এখনকার এই অস্বস্তিকর গরমে প্রতিদিন বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আরামদায়ক আর মানানসই একটা জামা বেছে নিতে বেশ খানিকটা সময় দিতে হয়। হোক সে চাকরিজীবী কিংবা ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া, এই সমস্যায় নিত্য পড়তে হয় সবারই। নিজে চাকরিজীবী হওয়ায় এই ব্যস্ত যান্ত্রিক জীবনে নিজেও চান এমন কোনো ড্রেস, যা একই সঙ্গে ট্রেন্ডি ও আরামদায়ক, সহজেই পরে বের হওয়া যায় অফিস, ইউনিভার্সিটি কিংবা কোনো আউটিংয়ে। এসব চিন্তা থেকেই প্রডাক্ট লাইনে নিয়ে আসেন কমফোর্টেবল সিঙ্গেল কুর্তি। এখন কুর্তির ট্রেন্ড তুঙ্গে। বয়সভেদে সবাই বেছে নেন বিভিন্ন ডিজাইনের কুর্তি। তাই স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ট্রেন্ড অনুসরণ করতে অর্নেটের কুর্তি সহজেই জায়গা করে নিতে পারে ব্যস্ত কিন্তু ফ্যাশনেবলদের ওয়্যারড্রোবে।
পেজের কুর্তিগুলো আমদানি করেন অনা। তবে নিজের ডিজাইনের হাত ভালো হওয়ায় আমদানি করা কুর্তির পাশাপাশি নিজস্ব কিছু কুর্তিও রয়েছে তার পেজে। এগুলোর জন্যও বেশ ভালো সাড়া পান তিনি। তবে ব্যস্ততার কারণে ডিজাইনে সময় দেওয়া হয় না খুব একটা। ভবিষ্যতে নিজের ডিজাইন করা কুর্তির কালেকশন বাড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি। এ ছাড়া অর্নেটে মেয়েদের পোশাকের পাশাপাশি ছেলেদের জন্য আরামদায়ক পাঞ্জাবি তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। ছোট পরিসরে একটা আউটলেটও করতে চান তিনি। এ বিষয়ে অনা বলেন, ‘অনেকেই আমাদের আউটলেট কোথায় তা জানতে চান। বাংলাদেশে অনলাইন শপিংয়ের কনসেপ্টটা খুব পুরোনো না হওয়ায় মানুষ এখনো কাপড় না দেখে কিনতে ভরসা পায় না। তাই তাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই একটা আউটলেট খোলার ইচ্ছা আছে।’
অন্যান্য অনলাইন শপের তুলনায় অর্নেটে কুর্তির দাম অনেকটাই কম। যেহেতু প্রায় সব পেশার মানুষের কথা ভেবেই তৈরি করা হয় প্রডাক্টগুলো, তাই ব্যতিক্রমধর্মী ডিজাইন অনুযায়ী খুব একটা চড়া দাম রাখা হয় না। এখানকার পোশাকের দাম সাধারণত ১৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যে রঙই পছন্দ হোক না কেন! পেজে পোশাকের ছবিগুলো এর বড় আকর্ষণ। এগুলো বিভিন্ন থিম ও ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা হয়ে থাকে ফটোশুট, এডিটিং ও কন্টেন্ট তৈরির কাজ অনা একাই করে থাকেন। বিশ হাজারের বেশি ফলোয়ারের এই ফেসবুক পেজে নিরবচ্ছিন্ন গ্রাহকসেবা দিতে একজন কর্মী সাহায্য করেন। তিনি কাস্টমারদের মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে থাকেন। অর্নেটের ফেসবুক পেজের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/ornatedhaka/
অনা মনে করেন, এই পেজ থেকে তার সবচেয়ে বড় পাওয়া কাস্টমারদের ভালোবাসা। ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু করে এত কম সময়েই বিপুল সাড়া পাবেন, তা তিনি কখনো ভাবেননি। কাস্টমারদের এই ভালোবাসা আর সন্তুষ্টি ধরে রাখার জন্য তিনি প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। কোনো কাস্টমার যাতে তাদের কোনো পোশাক এমনকি তাদের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট না হন, সেদিকেও খেয়াল রাখেন। তাই ‘বি বিউটিফুল, বি অর্নেট’ স্লোগানে নিবেদিত এই ই-শপ জায়গা করে নিচ্ছে ফ্যাশনেবল নারীর মনে।
শিরীন অন্যা
ছবি: অর্নেট