হেঁশেলসূত্র I রসনায় দশ
‘নিরামিষ’ শব্দটি শুনে যারা মুখ বাঁকিয়ে ফেলেন, তারা কি জানেন স্বাদে-গন্ধে এর মাহাত্ম্য কতখানি? শরীরের জন্যও তো লাগসই। আর সঙ্গে যদি থাকে মিষ্টান্ন, তবে বাঙালির ভোজন হয় ষোলো আনাই আনন্দদায়ক। পূজার দিনগুলো সামনে রেখে সে রকম ১০টি পদের সমাবেশ ঘটিয়েছেন গৌরী দেবনাথ
ছবি: সৈয়দ অয়ন
কচুশাক
উপকরণ: কচুশাক পরিমাণমতো, নারকেলবাটা ১ টেবিল চামচ, কালোজিরা ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, চিনি সামান্য, তেজপাতা ২-৩টি, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, তেল পরিমাণমতো, শুকনা মরিচ ৫-৬টি।
প্রণালি: শাক ভালো করে ধুয়ে নিন। হাঁড়িতে কচুশাক, লবণ, হলুদ দিয়ে অল্প আঁচে সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে শুকনো মরিচ, তেজপাতা, কালোজিরা দিয়ে নেড়ে, নারকেল বাটা দিন। এবার কচুশাক দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন।
হয়ে গেলে চিনি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন।
বুটের ডাল
উপকরণ: বুটের ডাল ২ কাপ, নারকেলকুচি আধা কাপ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, চিনি সামান্য, হলুদ সামান্য, লবণ পরিমাণমতো, শুকনো মরিচ ৪-৫টি, তেজপাতা ৩-৪টি, কালোজিরা ১ চা-চামচ, তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: সামান্য হলুদ ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে বুট সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে ২ টেবিল চামচ ঘি গরম করুন। ততে নারকেলকুচি বাদামি করে ভেজে তুলে নিন। এবার কড়াইতে বাকি ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে কালোজিরা, তেজপাতা, শুকনো মরিচ দিয়ে নাড়তে থাকুন। এবার সেদ্ধ ডাল দিয়ে নেড়ে ভাজা নারকেল দিন। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে নিন।
কলার মোচার ঘণ্ট
উপকরণ: কলার মোচা ১টি, নারকেল বাটা ১/৪ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, নারকেল কুচি আধা কাপ (ঘিয়ে ভাজা) আস্ত গরমমসলা পরিমাণমতো, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, তেজপাতা ৩টি, শুকনা মরিচ ৪/৫টি, পরিমাণমতো লবণ, হলুদ ও মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ।
প্রণালি: কলার মোচা ছাড়িয়ে বেছে ধুয়ে নিন। এবার কুচি করে কেটে লবণ, হলুদ ও মরিচ দিয়ে ভাপে সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে ঘি গরম করে গরমমসলা দিয়ে, একে একে বাকি সব উপকরণ দিয়ে নেড়েচেড়ে দিন। সেদ্ধ কলার মোচা দিয়ে নাড়তে থাকুন। ভাজা নারকেল কুচি দিয়ে ঢেকে দিন। হয়ে গেলে নামিয়ে নিন।
লাউয়ের শুক্ত
উপকরণ: লাউকুচি ৪ কাপ, মেথি ১ চা-চামচ, ছেঁচা আদা ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল ১ টেবিল চামচ, ময়দা ১ টেবিল চামচ (পানি দিয়ে গোলানো), চিনি সামান্য।
প্রণালি: লাউ ছিলে ধুয়ে নিন। কুচি কুচি করে কেটে নিন। এবার লাউয়ের কুচির সঙ্গে পরিমাণমতো লবণ দিয়ে ভাপে সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে মেথি দিন, মেথির ঘ্রাণ উঠে এলে আদা দিন। সেদ্ধ লাউ দিয়ে নাড়তে থাকুন। গোলানো ময়দা দিন। মাখা মাখা হয়ে এলে সামান্য চিনি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন।
টমেটোর চাটনি
উপকরণ: টমেটো ৮-১০টি, চিনি পরিমাণমতো, তেঁতুল আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো, শুকনো মরিচ ৪-৫টি, আস্ত সরিষা আধা চা-চামচ। হলুদ সামান্য, তেল ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২-৩টি, লবণ ও চিনি পরিমাণমতো।
প্রণালি: হাঁড়িতে টমেটো ও তেঁতুল, পরিমাণমতো লবণ ও সামান্য হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে শুকনো মরিচ, তেজপাতা ও সরিষা দিন। এবার সেদ্ধ করা টমেটো ঢেলে দিন। পরিমাণমতো লবণ ও চিনি দিয়ে ফুটিয়ে নামিয়ে নিন।
পটোল পাতুরি
উপকরণ: পটোল ৮টি, নারকেলবাটা আধা কাপ, সরিষাবাটা ১ টেবিল চামচ, কালোজিরা আধা চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, চিনি সামান্য, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাবাটা আধা চা-চামচ, তেল পরিমাণমতো, কাঁচা মরিচ বাটা ২ চা-চামচ।
প্রণালি: ছিলে নেওয়া পটোল মাঝ বরারর চিরে দিন, যাতে মসলা ভেতরে ঢুকতে পারে। হালকা হলুদ ও লবণ মাখিয়ে ভেজে তুলে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে সব মসলা কষিয়ে পটোল দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে দিন। হয়ে গেলে সামান্য চিনি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন।
ছানার রসা
উপকরণ: ছানা কিউব ২ কাপ, আলু কিউব ২ কাপ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, চিনি সামান্য, আস্ত গরমমসলা পরিমাণমতো, হলুদ আধা চা-চামচ, তেজপাতা ২-৩টি, শুকনো মরিচ ৩-৪টি, লবণ পরিমাণমতো, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ।
প্রণালি: ছানার পানি ঝরিয়ে একটি চারকোনা সমান্তরাল পাত্রে চেপে রাখুন। এবার কিউব করে টুকরো করে নিন। ছানা ও আলু আলাদা করে ঘিয়ে ভেজে তুলে রাখুন। প্রয়োজনে আরও একটু ঘি কড়াইতে ঢেলে, চিনি বাদে বাকি সব মসলা দিয়ে কষিয়ে নিন। এবার ভেজে রাখা আলু ও ছানা দিয়ে নেড়ে পরিমাণমতো পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মাখা মাখা হয়ে এলে সামান্য চিনি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন।
মাওয়া লাড্ডু
উপকরণ: বুন্দিয়া ২ কাপ, মাওয়া ১ কাপ, জাফরান পরিমাণমতো, গোলাপজল সামান্য, ঘি ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে নিন। এবার গোল গোল করে লাড্ডু বানিয়ে পরিবেশন করুন।
নারকেলের নাড়ু
উপকরণ: কোরানো নারকেল ২ কাপ, আখের গুড় ৩/৪ কাপ।
প্রণালি: কড়াইতে আখের গুড় দিয়ে নাড়তে থাকুন। গলে গেলে কোরানো নারকেল দিন। নাড়তে থাকুন। আঠালো হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এবার হাতে সামান্য তেল লাগিয়ে কুসুম গরম থাকা অবস্থায় গোল গোল করে নাড়ু বানিয়ে নিন। নাড়ু মুড়িভর্তি জারে সংরক্ষণ করতে পারেন।
ছানার সন্দেশ
উপকরণ: ছানা ১ কাপ, চিনি আধা কাপ, এলাচিগুঁড়া সামান্য, জাফরান পরিমাণমতো, ঘি ১ চা-চামচ, কিশমিশ পরিবেশনের জন্য।
প্রণালি: একটি ননস্টিক প্যানে চিনি, এলাচিগুঁড়া ও ছানা একসঙ্গে নেড়ে জ্বাল দিন। আঠালো হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। একটি থালায় মিশ্রণটি ঢেলে জাফরান ও ঘি দিয়ে হাতে মিশিয়ে নিন। এবার হাতে চেপে সন্দেশ বানিয়ে নিন।