সাক্ষাৎকার I ‘গান যেন সবাই এনজয় করে’
তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ পছন্দের কিছু গান হলো ‘আসো মামা প্রীত হে, বেয়াইন সাব, বন্ধু তুই লোকাল বাস’ ইত্যাদি। জনপ্রিয় এই গানগুলোর মিউজিক ডিরেক্টরও প্রীতম হাসান। তাঁর সঙ্গে এবারের আলাপচারিতায় ছিলেন শুভ্রদেব দাশ ও জুনেদ আহমাদ মুহতাসীম মিশাল
ক্যানভাস: কেমন আছেন?
প্রীতম: ভালো। একটু দৌড়াদৌড়ির ওপরে। এই আরকি।
ক্যানভাস: এখন কী নিয়ে ব্যস্ত?
প্রীতম: একটা ফটোশুট নিয়ে কাজ করছি। সেটি করার পরে যাবো একটা শোতে। তারপরেই নিজের গান নিয়ে ব্যাক করতে হবে। তা ছাড়া কিছু জিঙ্গেল নিয়ে কাজ করছি আপাতত। এগুলোর মধ্যে মুভি ‘দেবী’র জন্য কাজ করেছি। তো এই চলছে আপাতত।
ক্যানভাস: এই প্রীতম হাসানকে আমরা অন্য কোনো জায়গায়ও দেখতে পারতাম। প্রীতম হাসান কীভাবে মিউজিশিয়ান হলো?
প্রীতম: আসলে এটা একটা লং স্টোরি। শুরুর দিকে খুব মজা করে বসতাম আরকি। বিভিন্ন গানের ছোট ছোট কিছু প্যাটার্ন নিয়ে কাজ করতাম। এই যেমন ধরেন, আমার পরান যাহা চায়, কিংবা মাঝে মাঝে নজরুল। মূলত আমার মিউজিকে আসাটা হয় এভাবেই।
ক্যানভাস: বাহ্, আপনার যে গানগুলো আমরা শুনেছি, তাতে আমরা নতুন একটি বৈশিষ্ট্যের সঙ্গেও পরিচিত হয়েছি। তো, এই ভিন্নতাটা কীভাবে এলো!
প্রীতম: দেখুন, আমি ছোটবেলা থেকেই প্রচুর ইংরেজি গান শুনেছি। পাশাপাশি নিজের দেশের মিউজিকও শুনেছি। আমি যেটা ভেবেছি, সামনে নতুন একটা ইন্ডাস্ট্রি শুরু হচ্ছে। যেখানে নতুন একটা সাউন্ডের প্রয়োজনীয়তা আসবে ইন্টারন্যাশনাল সাউন্ডের সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য। তো, আমি যখন চিন্তা করলাম, আমাদের যে সাউন্ড তার সঙ্গে বাইরের সাউন্ডের ফিউশন কীভাবে করা যায়। তার সঙ্গে আমি এটা ভাবতাম, বাংলাদেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন কিছু কীভাবে দেওয়া যায়, যা সবার কাছে নতুন করে দাঁড়াবে। এভাবেই হয়তো আমি কিছু দিতে পেরেছি বা দেওয়ার চেষ্টা করছি এখনো।
ক্যানভাস: নতুন কিছুর ক্ষেত্রে ক্রিটিসিজমের একটা ব্যাপার থাকে। এটা নিয়ে কখনো ভেবেছেন?
প্রীতম: না, আমি এটা নিয়ে কখনো ভাবি না। আমি জানি কিছুটা ক্রিটিসিজমের শিকার হবো। যদি আসলেই ভালো কিছু দিতে পারি, তাহলে দিন শেষে সবাই আমাকে পছন্দ করবে।
ক্যানভাস: আচ্ছা, আপনার গান এখন বিয়েবাড়ি, গায়েহলুদ, বিভিন্ন পার্টি ইভেন্টে, রেস্টুরেন্টে প্রায়ই বাজানো হয়। যেখানে আগে বাইরের দেশের গানগুলোই প্রাধান্য পেতো। এখন সেখানে জায়গা করে নিয়েছে আপনার গান। এটা কি আপনার প্ল্যানের মধ্যেই ছিল, নাকি গান অনুসারে শ্রোতারাই এভাবে নিয়েছেন?
প্রীতম: দেখুন, আমি যে গানগুলো করছি বা মূলত করি, এগুলো বাজানোর মতো জায়গা হলো বিয়েবাড়ি, না হয় রেস্টুরেন্ট। এবং বিভিন্ন পার্টিতে গেলেই দেখতাম মানুষ বাইরের গানগুলোই নিচ্ছে এসব অনুষ্ঠানের জন্য, যেখানে আমাদের দেশেও এ ধরনের গান হতে পারে। তো এটা চিন্তা করেই আমি কাজ শুরু করি। আসিফ ভাইকেও বলি যে আমরা এমন কিছু একটা করি, যাতে মানুষ মজা পায়- বিয়েবাড়ি, গায়েহলুদ এসব যেন এনজয় করতে পারে। তো এই ভেবেই ‘বিয়াইন সাব’ গানটা করা। এবং এটা আসলেই কাজ করেছে। হা হা হা।
ক্যানভাস: আপনি তো ফকির বা বাউল গান নিয়েও কাজ করেছেন। এই চিন্তাটা কীভাবে এলো?
প্রীতম: আসলে আমাদের দেশে ফকির বা বাউলরা এবং এদের গানগুলো খুব আন্ডাররেটেড। তো আমি চিন্তা করছিলাম প্রথমে এদেরকে নিয়েই শুরু করবো। এটা ভেবে আমার প্রথম কাজটি বের হয় ‘আসো মামা, প্রীত হে’। এ ছাড়া আরও কিছু কাজ করবো সামনে।
ক্যানভাস: সামনে আমরা কী পেতে যাচ্ছি?
প্রীতম: নেক্সট যে কাজটি করছি, সেটা নুহাশ ভাইয়ের সঙ্গে। একজন পপ আর্টিস্টের সঙ্গে। আশা করি ভালো কিছু পাবেন।
ক্যানভাস: এটা কি ওয়েডিং সিজনের আগে নাকি পরে?
প্রীতম: নাহ্, ওয়েডিং সিজনের আগেই পাবেন। এবং মূলত এটা হবে পপ ধারা। সো, মজাদার কিছু আসবে।
ক্যানভাস: গান বানানোর সময় আপনার মধ্যে কোন চিন্তাটা প্রথমে আসে?
প্রীতম: আমি আসলে ওভাবে কিছু চিন্তা করি না। তবে হ্যাঁ, এটা ভাবি যে আমি একটা ওয়েডিংয়ে যাচ্ছি। সেখানে যেন আমার গান বাজে বা একটা রেস্টুরেন্টে যাচ্ছি, সেখানে যেন আমার গান বাজে। এই আরকি।
ক্যানভাস: আপনার গানের শ্রোতা ও ক্যানভাসের পাঠকদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
প্রীতম: হ্যাঁ, আসলে সামনে বড় একটা পরিবর্তন আসছে মিউজিকে। এখন যেভাবে আমার পাশে আছেন, সামনেও যেন আপনাদের কাছে পাই। পাশে থাকুন।
ছবি: সজীব রহমান