ফিচার I জড়োয়া হাউজ
বিয়েতে গয়নার কথা আলোচনায় এলেই প্রথমে চলে আসে জড়োয়া হাউজের নাম। শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠান সব সময়ই চেষ্টা করেছে সময়ের সঙ্গে থেকে ভোক্তার পছন্দকে স্পর্শ করতে। এটা সম্ভব হচ্ছে ভোক্তার চাহিদা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল থাকার কারণে। সঙ্গে যোগ হয়েছে নিরন্তর উৎকর্ষপ্রয়াস। সময়োপযোগী নকশা, ঐতিহ্যের সঙ্গে মেলবন্ধন জড়োয়া হাউজের প্রতিটি পণ্যকে দেয় আলাদা মাত্রা।
আজ থেকে ১০০ বছর আগে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ জড়োয়া হাউজের। দেশের মানুষকে গুণগত মান ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের গয়না উপহার দেওয়ার মানসে ওয়ারীর নিজেদের বাড়িতেই শুরু এই স্বপ্ন প্রতিষ্ঠানের- বলছিলেন চতুর্থ প্রজন্ম অভি রায়। তিনিই বর্তমানে সামলাচ্ছেন পারিবারিক এই প্রতিষ্ঠান।
জড়োয়া অর্থাৎ মণিমুক্তাখচিত অলংকার। স্বর্ণালংকারই মুখ্য। কারণ, আমাদের দেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী সোনার গয়নার প্রতি বাঙালি অনুরাগ অনিঃশেষ। তাই সোনার গয়নার কালেকশনকে করা হয়েছে আকর্ষণীয় ও বৈচিত্র্যময়। অনিন্দ্য ডিজাইনকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলার জন্য ব্যবহার করা হয় হীরা, চুনি, পান্না ইত্যাদি নানা ধরনের প্রেশাস ও সেমিপ্রেশাস স্টোন। গোল্ডের পাশাপাশি হোয়াইট গোল্ড আর প্ল্যাটিনামের অলংকারও তারা তৈরি করে থাকে। এ ছাড়া রয়েছে মুক্তার গয়না। যেকোনো অনুষ্ঠান উপযোগী গয়নায় জড়োয়া হাউজের জুড়ি মেলা ভার। তা সে বিয়েই হোক কিংবা কোনো উৎসব। তাই প্রতিবারের মতো এবারের ব্রাইডাল কালেকশনও যথেষ্ট ঋদ্ধ। ডিজাইন অনিন্দ্যসুন্দর আর সময়োপযোগী। আর এখন তো সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। ঘরে বসেই সবাই সবকিছু দেখে নিতে চান। বিজ্ঞাপন, টিভি শো, ওয়েবসাইটের নকশা দেখেই কনেরা উৎসাহী হন। এই বিষয়ও থাকছে জড়োয়া হাউজের সচেতন বিবেচনায়। ফলে সেই স্টাইলের গয়না প্রাধান্য পেয়েছে তাদের কালেকশনে। জড়োয়া হাউজে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা হয় ভোক্তার চাহিদার প্রতি। তাই কোন ধরনের গয়না এবার বেশি টানছে, সেটাও গুরুত্ব পাচ্ছে তাদের কাছে, জানালেন অভি।
আমাদের এখানে কিন্তু পুরোনোর বদলে নতুন গয়না বেছে নেওয়ার সুবিধাও আছে, বললেন অভি। যোগ করলেন, এ ক্ষেত্রে জড়োয়া হাউজের নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে। সেটা অবশ্য আমরা আগে থেকেই ক্রেতাদের জানিয়ে দিই। ফলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থেকে নিজের পছন্দমতো গয়না বানিয়ে নেওয়া ক্রেতার জন্য সহজ হয়।
আরও বলতেই হয়, জড়োয়া হাউজের গয়নার গুণগত মান অক্ষুণ্ন রাখার জন্য রয়েছেন অভিজ্ঞ ও দক্ষ অলংকারশিল্পী। নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী, আধুনিক ট্রেন্ড অনুসারী গয়না যেমন বানিয়ে থাকেন, তেমনি ক্রেতার পছন্দকে সবিশেষ গুরুত্বে বিবেচনায় রেখেও গয়না তৈরি করে থাকেন। আর এই সৃজনে থাকে নিপুণতার সঙ্গে যত্ন। ফলে ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী গয়না পেতে সমস্যা হয় না।
ক্রেতার সঙ্গে জড়োয়া হাউজের সম্পর্ক কেবল কেনাবেচায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা হয়ে ওঠে পারিবারিক। ফলে প্রজন্মান্তর যেমন জড়োয়া হাউজের ঘটেছে, তেমনি ক্রেতার। তাই একসময় বাবা-মায়ের হাত ধরে যে ছেলে বা মেয়েরা আসতেন, এখন তারাই আসেন তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে, বিষয়টি বিশেষ তৃপ্তি দেয় অভি রায়কে।
ক্রেতাদের দেওয়া ডিজাইনেও জড়োয়ার গয়নাশিল্পীরা অলংকার তৈরি করে দিয়ে তাদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করেন। মূলত ক্রেতাদের সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। কারণ, ভোক্তারা জড়োয়া পরিবারেরই অংশ। ফলে তাদের পছন্দ-অপছন্দ, ভালো-মন্দই তো সবার আগে গুরুত্ব পাবে। তা ছাড়া ক্রেতা খুশি হলে, কোনো গয়না পাঁচজনে প্রশংসা করলে তার থেকে সুখ আর কী হতে পারে, বললেন অভি রায়।
স্টাফ রিপোর্টার
মডেল: মিথিলা
ছবি: সৈয়দ অয়ন