ইভেন্ট I হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল
সম্প্রতি হ্যান্ডলুম টেক্সটাইলের তৈরি পণ্য নিয়ে গুলশানের খাজানা গার্ডেনিয়ার গ্র্যান্ড হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল। এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনারস অব বাংলাদেশের (এএফডিবি) যৌথ আয়োজনে। তিন দিনের এই আয়োজনে দেশের ৭ জেলার বয়নশিল্পীরা তাদের পণ্য প্রদর্শন করেছেন। জামদানি, মিরপুর বেনারসি, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মণিপুরী, রাঙামাটি ও বান্দরবানের তাঁতজাত পণ্য এবং নকশিকাঁথার বিভিন্ন বস্ত্রসামগ্রী।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এই বয়ন উৎসবের উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম, এএফডিবির সভাপতি মানতাশা আহমেদ, জ্যেষ্ঠ ডিজাইনার ও কারুশিল্প গবেষক চন্দ্র শেখর সাহাসহ অনেকে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আদিকাল থেকেই তাঁতশিল্প প্রসিদ্ধ। ব্রিটিশ শাসনামলে যন্ত্রের প্রভাবে শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার পর বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প এখন সরকারের সুনজর পাচ্ছে। বাংলাদেশের শিল্পের বিকাশে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। এর প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে হলে এতে বৈচিত্র্য বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
পৃথিবীর কোনো দেশে হাতের কাজ এত কম মূল্যে বিক্রি হয় না বলে মন্তব্য করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী। মেশিনে তৈরি পণ্যের দাম আমরা বেশি দিই, কিন্তু একজন শিল্পী শ্রম আর মেধা দিয়ে সৃজনশীল পণ্য তৈরি করলেও তার যথার্থ মূল্য আমরা দিচ্ছি না বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যালে বয়নশিল্পীদের পাশাপাশি স্বনামধন্য আটজন ডিজাইনার তাদের পণ্য প্রদর্শন করেন। আয়োজিত হয় ফ্যাশন শো। এ ছাড়া উৎসবের সার্বিক বিষয় এবং বয়নশিল্পীদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে সমাপনী দিনে বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ‘পরিবর্তনের ধারায় ঐতিহ্যবাহী বয়নশিল্পের ভবিষ্যৎ’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গবেষক চন্দ্র শেখর সাহা। এর ওপর আলোচনা করেন শিল্প-সমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ, ফ্যাশন ডিজাইনের অধ্যাপক কায়কোবাদ রানা, বিসিকের সাবেক প্রধান নকশাবিদ হালিমা আক্তার ও ফ্যাশন কলামিস্ট শেখ সাইফুর রহমান। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব মো. আব্দুল হালিম এবং বিশেষ অতিথি জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির সভাপতি মির্জা নূরুল গণী শোভন ও চিটাগাং উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মনোয়ারা হাকিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মানতাশা আহমেদ।