বিশ্ব অর্থনীতির দুরন্ত গতির সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ধারাবাহিক অগ্রগতির হাত ধরে জীবনমান উন্নত হচ্ছে, বাড়ছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও। বিপুল জনগোষ্ঠীর অধিকারী বাংলাদেশ এসব কারণে রূপ নিয়েছে বিশ্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় বাজারে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এর পরিধি। বাংলাদেশে জনমিতির সবচেয়ে অগ্রসরমনস্ক এবং এগিয়ে থাকা অংশটাই হচ্ছে বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্ম, সংখ্যায় যারা মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি। তাই তারাই সবচেয়ে বড় সম্ভাবনার নাম।
তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ আর আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে অভাবনীয় বিকাশ ঘটেছে তাদের সৃষ্টিশীলতার। গোটা বিশ্ব হাতের মুঠোবন্দি থাকার সুবাদে তাদের জীবনযাপনেও প্রতিফলন ঘটছে নিত্যনতুন বৈচিত্র্যের। বাড়ছে ব্র্যান্ড সচেতনতা। বাংলাদেশের শীর্ষ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মডেল গ্রুপের অনন্য ফ্যাশন উদ্যোগ হিসেবে তিন শর বেশি বিশ্বমানের ডিজাইনের পোশাকপণ্য ও লাইফস্টাইল সামগ্রী নিয়ে বাজারে আসছে সোলাস্তা। বিশ্বসংস্কৃতির আবহে দেশীয় ঐতিহ্যের গৌরবলালিত এই তরুণদের লাইফস্টাইল ও ফ্যাশন চাহিদাকে মাথায় রেখে সোলাস্তার এই আত্মপ্রকাশ।
সোলাস্তার স্লোগান, ‘বি নিউ, বি ইউ’। সোলাস্তার আত্মপ্রকাশের বর্ণাঢ্য আয়োজন ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলের উৎসব ব্যাংকোয়েট হলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শুক্রবার সন্ধ্যায়। আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক।
আকর্ষণীয় কেক কাটার মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হয় সোলাস্তার। পরে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের হাতে সোলাস্তার পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় খ্যাতিমান দুই শিল্পীর আঁকা পেইন্টিং।
সোলাস্তার এ আবির্ভাবকে অভিবাদন জানিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এতকাল আমরা তো শুধু বিদেশিদের ফরমায়েশি কাজ করেছি। এবার সোলাস্তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হতে যাচ্ছে। পৃথিবীর শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলো আমাদের এখান থেকেই পণ্য তৈরি করিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে আমরা অনেক এগিয়েছি, কিন্তু প্রত্যাশিত সেই ভাবমূর্তি আজও তৈরি হয়নি সবক্ষেত্রে। আমার বিশ্বাস, সোলাস্তা আমাদের এ চাহিদা পূরণ করতে পারবে। আপাদমস্তক বাঙালি মাসুদুজ্জামানের এ উদ্যোগ আমাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তার হৃদয়ের ছোঁয়া নিশ্চয়ই সোলাস্তার পণ্যেও থাকবে। আমি শুভেচ্ছা জানাই সোলাস্তার এই আবির্ভাবকে।’
ড. রুবানা হক তার প্রেরণাদায়ী ভাষণে বলেন, ‘যথাযথ যত্নের অভাবে মসলিন, জামদানির মতো অনেক ঐতিহ্যই আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এটি থামাতে হবে। আপনারা এই স্বপ্ন ছড়িয়ে দিন দিকে দিকে। বাংলাদেশকেও বিশ্বের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে হবে, হ্যাঁ, এই পণ্য আমাদের। অত্যন্ত আনন্দের বিষয়, আজ দেশে কেবল বয়সে তরুণ নয়, বয়স্ক তরুণদের জন্যও এসেছে সোলাস্তা। আমি চাই দেশের সর্বত্র সোলাস্তার অন্তত একটি করে আউটলেট থাকুক।’
আয়োজনের সভাপতি মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘সোলাস্তা মানেই বর্ণাঢ্য, উজ্জ্বল। বাংলার এই উজ্জ্বলতা তার বিভা নিয়ে ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বের সবখানে। বিশ্বদরবারে গৌরবের স্থানে অধিষ্ঠিত হোক বাংলাদেশের নাম। এই প্রত্যয়ে আপনাদের আস্থা আর ভালোবাসার মধ্য দিয়েই আত্মপ্রকাশ হচ্ছে সোলাস্তার।’
সন্ধ্যা ৬.০০টায় লেজার বিম অ্যান্ড অ্যানিমেশন শোর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ আত্মপ্রকাশ আয়োজনে বাংলাদেশের ফ্যাশন বিবর্তনের ওপর একটি আকর্ষণীয় কোরিওগ্রাফি পরিবেশন করে জনপ্রিয় থিয়েটার গ্রুপ প্রাচ্যনাট। এ ছাড়া ছিল আজরা মাহমুদের কোরিওগ্রাফিতে র্যাম্প শো। সবশেষে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যান্ড চিরকুটের আকর্ষণীয় সংগীত পরিবেশনা এবং ডিনারের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সোলাস্তার এই আনন্দ আয়োজন।
দেশের শিল্প-শিক্ষা-ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অসাধারণ এক মিলনমেলায় পরিণত হয় এই সোলাস্তা-সন্ধ্যা। সোলাস্তা তরুণদের আস্থা অর্জন করতে চায়। বিশ্বমানের এই ফ্যাশন ব্র্যান্ড পণ্যের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা ও বিশুদ্ধ পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশের ফ্যাশনিস্তা জনগোষ্ঠীর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি নিয়ে তার যাত্রা শুরু করল।
২৫ বছর ধরে মানসম্পন্ন পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে অতুল আস্থা অর্জন করেছে মডেল গ্রুপ। বাংলাদেশ সরকারের সিআইপি নির্বাচিত শিল্পপতি জনাব মাসুদুজ্জামানের হাতে গড়া মডেল শিল্পগ্রুপ তার অধীন ২০টি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন অবদান রেখে চলেছে দেশের অর্থনীতিতে।