skip to Main Content

ফুড ট্রাভেল I হাফলংয়ের যৎকিঞ্চিৎ খাবার

লেখায় শীত থাকলেও খাবারের নাম অনেক কম। কিন্তু সেগুলো আস্বাদনের অভিজ্ঞতা রোমাঞ্চকর। তা তুলে ধরছেন পাঞ্চালি দত্ত

শীতের মৌন রোদ। দুপাশে পাইনগাছ আর মাঝখানে পিচ মোড়া রাস্তার উপর দিয়ে চলছে জিপ। গন্তব্য হাফলং রেলস্টেশন। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ; রাস্তার বাঁ দিক ঘেঁষে পাহাড় আর ডান দিকে খাদ। সকালের ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটায় গাড়িতে বসে কাঁপছি আমরা। খাদে তখনো কুয়াশা। দুপাশে বুনোফুল, কোথাও-বা কমলালেবুর বাগান পাহাড়ি রাস্তাকে বড্ড রোম্যান্টিক করে তুলেছে। আমাদের দুই বোনের আবদারে ড্রাইভার ততক্ষণে রাস্তার কোণ ঘেঁষে গাড়ি দাঁড় করিয়েছে। গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পৌঁছে গেছি ঝরনার ধারে। পাহাড়ের ওপর থেকে কুলুকুলু শব্দে জল গড়াচ্ছে। কেউ সেখানে ছোট্ট বাঁশ চিরে গড়িয়ে পড়া জলের মাঝখানে গুঁজে দিয়েছে, যাতে পানে অসুবিধে না হয়। আমরাও করপুটে শীতের সকালে ঠান্ডা জল পান করে চলেছি। পঁয়ত্রিশ বছর আগের সেই জল পান করার পরিতৃপ্তিকে আজও মনে করে যে সুখ পাই, সে অমৃতস্য। কিছুটা পথ পেরোলেই আবারও ড্রাইভারকে চাপ দিতে শুরু করলাম গাড়ি দাঁড় করানোর জন্য। এবারে ‘মিশন কমলালেবু’। যদিও বাগানটি কোনো ব্যক্তির, তবু দু-চারটে কমলা না পেড়ে আনলে এবং বাগানটির সামনে দাঁড়িয়ে তার গন্ধ অনুভব না করা অব্দি শান্তি নেই। চুপি চুপি কমলালেবু পেড়ে আনার জন্য বাবা সেদিন কিছু বলতেন না। বুঝতাম অন্যায়কে একটু প্রশ্রয় দিয়েছেন। শৈশবের একটু-আধটু ছাড়পত্র স্মৃতিগুলোকে মাঝেমধ্যেই উসকে দেয়। হাফলংয়ের কমলালেবুর বিশেষত্ব ছিল সাইজে ছোট, কিন্তু ভারি মিষ্টি। কমলার কোয়ার মতো রস নিংড়ে আকণ্ঠ পান করে চলেছি পার্বত্য অঞ্চলটির রূপ। কোথাও নেই দোকান, নেই বাড়ি। কখনোসখনো হুশ করে আমাদের টপকে এক দুটো জিপ বেরিয়ে যাচ্ছে। ওখানে ওই ধরনের গাড়ির চল বেশি। গুনে বলা যাবে সারা দিনে এই রাস্তায় কটা বাস চলাফেরা করে। ধীরে ধীরে রোদ্দুরের ঝিলিক পাহাড়ের খাঁজ অতিক্রম করে আমাদের গাড়িতে ভাবপাতানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। নিস্তব্ধ রাস্তায় নিঃশব্দে কথা বলে চলেছি হাওয়ার সঙ্গে, পাইনগাছের খয়েরি ফুল, ঝরনা, আকাশ, মেঘ, কুয়াশা, পাহাড়ের সঙ্গে। স্টেশনে যখন পৌঁছলাম, যথারীতি স্টেশনমাস্টার বললেন, ট্রেন লেট। ওটা আমাদের কাছে সাধারণ ঘটনা। কিন্তু সময়মাফিক হাজির হতেই হয়। ফোনের সুবিধে থাকলেও সঠিক উত্তর স্টেশন থেকে মেলে না সব সময়। আমাদের দুই বোনের কাছে ট্রেন লেট হলো একটি আনন্দ সংবাদ। বাবা গাড়িকে খালাস করে দিয়ে স্টেশন ঘরে পা ছড়িয়ে হেলান দিয়ে আরামকেদারায় ছুটির আমেজে বসে পড়তেন। রেখা, নাসিরুদ্দিন অভিনীত ‘এক বরষাত কী রাত’ সিনেমাটা দেখলে মনে পড়ে সেই লম্বা পায়াবিশিষ্ট আরামকেদারা ও হাফলং স্টেশনটির কথা। ইংরেজ সরকারের তৈরি রেলওয়ে স্টেশন। তাই চেয়ারের স্টাইলও সে রকম। দুই বোন রেললাইনের পাশ ধরে এগিয়ে চলেছি আরেক মিশনে। হাফলং স্টেশনটির চত্বর পেরোলেই জঙ্গলের শুরু। ঝোপঝাড়ের মধ্য দিয়ে চলে গেছে রেলের পাটাতন। বছরে অন্তত দুই থেকে তিনবার দাদু-ঠাকুমার কাছে শিলচর যাওয়ার ফলে দস্যি দুই বোনের মুখস্থ ছিল রাস্তা বা ঝোপঝাড়ের কোথায় রয়েছে কোন গাছ। হাফলংয়ে ফলের মধ্যে পাওয়া যেত কমলালেবু, পিচ, পাম, জলপাই, লিচু, আমলকী, কলা। সবজি বা খাবারদাবারের সামগ্রী শিলচর (ছোট্ট সমতল অঞ্চল) থেকেই আসতো। সপ্তাহের এক দিন অর্থাৎ শনিবারে বসতো হাট। বাজার বলতে একটাই। সেদিন বোধ হয় হাফলংয়ের সব বাসিন্দা চলে আসতো এখানে হপ্তার রসদের ব্যবস্থা করতে। অঞ্চলটিতে খুব একটা সামগ্রী পাওয়া যেতো না। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুটি, ওলকপি, মুলা, দু-চার রকমের শাক- এ ধরনের বাঁধাধরা শীতকালীন সবজি নিয়ে বসতো পুরুষ ও মহিলারা। ইচ্ছে থাকলেও ভিন্ন ধরনের সবজি খাওয়ার উপায় ছিল না। মাছের অবস্থা আরও কাহিল। কয়েকজন মাছ বিক্রেতা। রুই, কাতলাই মুখ্য। ওখানকার ট্রাইবালরা খুব পছন্দ করে শুয়োরের মাংস। তাই বাজারজুড়ে সেদিন থাকতো অনেক শুয়োরের মাংস। হাফলং অঞ্চলটি ঘিরে ছিল একটা লেক। যার দুপাশে শীতকালীন রঙিন ফুলে ফুটে উঠতো স্বর্গীয় অনুভূতি। সেই লেকের কয়েকটি জায়গায় মাছ ধরার অনুমতি ছিল। যদি কোনো দিন কপালগুণে বেশ কিছু মাছ জালে পড়তো, খবরটা চাউর হতেই বাবার পিয়ন খুঁজে গিয়ে নিয়ে আসতো মাছ। মা গামলায় জল দিয়ে সেই জ্যান্ত মাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন। কারণ, তখন ওখানে ফ্রিজ ছিল না। লেকে সিলভার কার্প মাছটাই বেশি পাওয়া যেত। আমরা অবশ্য খুব একটা পছন্দ করতাম না। হাট ছাড়াও সপ্তাহের অন্যান্য দিন বাজার থাকতো যদিও, তবে সবজিগুলোর চেহারা খুব একটা সবল নয়। এখন ভাবলেও অবাক লাগে। কলকাতায় বাড়ির বাইরে পা ফেললেই প্রতি মোড়ে বাজার। অঢেল সবজি। দেদার মাছ। কীভাবে মা চালাতেন ভরপুর সংসার এই রসদে? কীভাবে মন ভরিয়ে আতিথেয়তা করতেন? নাহ্, এটাই হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট স্কিল। এখন আমরা ওটা নিয়ে পড়াশোনা করি, মায়েরা রপ্ত করছেন কার্যকরভাবে। ফলের অবস্থাও তথৈবচ। প্রত্যেকের বাড়িতেই কিছু না কিছু ফলের গাছ থাকতো।
বেলা বেজে এক। পেটে তখনো ছুঁচো ডন দিচ্ছে। সেই সকাল আটটা নাগাদ ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়েছিলাম। ট্রেনের দেখা নেই। শুধু সবার চোখ রেললাইনে- এই আসছে, এই আসবে।

পাহাড়ের দূর কোণ থেকে কু…উ…উ করে ধোঁয়া উড়িয়ে ট্রেন আসতে দেখলেই ছুটে যেতাম, এবারে এলো বোধ হয়। নাহ্, আমাদের বোকা বানিয়ে কিছুক্ষণ বাদেই দু-দুটো মালগাড়ি সবুজ পতাকা নেড়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেল। হতাশ হয়ে চেয়ারে বসে পড়া ছাড়া উপায় নেই। দস্যিপনা এবারে মোটামুটি কবজায়। স্টেশনমাস্টার ছাড়া স্টেশনে আর লোক নেই। কিছু যাত্রী লোয়ার হাফলং স্টেশন থেকে ট্রেনে চাপতো। কারণ, ওদিকটায় একটু লোকালয়ের ভিড় ছিল, যেহেতু বাজার, হসপিটাল, স্কুল, কলেজ ছিল ওই চত্বরে। আমরা হিল হাফলং স্টেশনে ট্রেন ধরতে আসতাম বাড়ির কাছে বলে। যা হোক, এই চত্বরে নেই কোনো খাবারের দোকান। শুধু ঝুড়ি করে জাটিঙ্গার কমলালেবু নিয়ে দু-একজন পাহাড়ি মহিলা বিক্রির জন্য বসে থাকতো এদিক-ওদিক। একটি চায়ের দোকান ছিল বটে, কিন্তু মতিগতির ঠিক নেই। কবে এবং কখন যে তার দোকান পাবো। তবে মনে আছে দোকানে দু’রকম বিস্কুট পাওয়া যেতো; একটা হলো বেকারি বিস্কুট, যা এখনো সহজলভ্য কলকাতার প্রতিটি চা স্টলে। মা বাড়ি থেকে তাই গুছিয়ে আনতেন ফ্লাস্কে করে চা, বিস্কুট, কেক, জল। আর দুপুরের জন্য বরাদ্দ থাকতো লুচি, আলুর তরকারি। মিষ্টির আশা করে লাভ নেই। কারণ, সেই মিষ্টি আনতে বাজারে ছুটতে হবে বাবাকে। তাও হেঁটে। কমপক্ষে দু কিলোমিটার পথ। কারণ, ওখানে বাজার অব্দি পৌঁছানোর জন্য অটো, বাস কোনো কিছুর সুবিধে ছিল না। পা-ই ছিল ভরসা। কত যে হাঁটতাম, ইয়ত্তা নেই। হয়তো সেই হাঁটার জন্যই উপলব্ধি করতে পেরেছি প্রকৃতির গন্ধ, যার প্রতিটি স্বাদের পরত এখনো ছুঁয়ে আছে মনের মণিকোঠায়।
‘ছুঁচো ডন’ পেটে তখন, গোগ্রাসে গিলছি খাবার। সঙ্গে উৎকণ্ঠা ট্রেন এলো বলে। কারণ, খুব অল্প সময় স্টেশনে দাঁড়ায়, ফলত মিস করলে বাড়ি ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। সারা দিনে ওই একটি ট্রেনই ভরসা। ট্রেন বাবাজি কালো ধোঁয়া উড়িয়ে অবশেষে হেলতে-দুলতে হাজির হলেন। দু বোন আগেই জায়গা করে নিয়েছি জানালার দু পাশে। ট্রেন চলা শুরু। শুরু আমার প্রকৃতি ভ্রমণ, ট্রেনের জানালা দিয়ে। স্ফটিকের মতো জল পাহাড়ি নদীতে। বড় বড় পাথরের ধাক্কায় বিচ্ছুরিত হয়ে আবার গড়িয়ে চলছে আপন মনে তার ধারায়, শতাব্দীর পর শতাব্দী। কী তার গর্জন, কী তার খেলার মগ্নতা। ট্রেন পৌঁছল লোয়ার হাফলংয়ে। স্টেশনে বেশ কিছু লোক বাকি সিট দখল করে নিল। কমলা, কলা, বাদাম, ঝালমুড়ি, শনপাপড়ি, চা, বিস্কুট নিয়ে কামরায় ওঠা কয়েকজন বিক্রেতা আর যাত্রীদের আওয়াজে গমগম করছে ট্রেনের অভ্যন্তর। হাফলংয়ের গল্পে জাটিঙ্গা নদীটির কথা অবশ্যই উল্লেখ, করতে হয়। কোথাও হাঁটুজল বা পায়ের পাতা অব্দি জল নদীটির। নদীর মাঝখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিশাল বিশাল পাথর ও নুড়ি। শীতের সকালবেলা পরিবারসহ অনেকেই চলে আসে নদীতে। সারা দিন কাটিয়ে সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরে যায়। আমরাও খাবারদাবার নিয়ে মাঝেমধ্যে চলে আসতাম নদীতে। পাথরের ওপর জিনিসপত্র রেখে জলের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যেতাম অনেক দূর। ডোবার চিন্তা নেই। কখনো-বা পাথরের উপর এলিয়ে দিতাম শরীর। দূর থেকে ভেসে আসতো বাঁশির শব্দ। কোনো এক অজানা গ্রাম থেকে কোনো এক পাহাড়ির ঠোঁটে জন্ম নেওয়া পাহাড়ি সুর ছড়িয়ে পড়তো জাটিঙ্গা ঘিরে।

খাসিয়া পান

শোনা কথা, সেই সব জনজাতির নাকি জাদুবিদ্যা জানা আছে। মন্ত্রপূত পান-তাম্বুল খাইয়ে মানুষকে বশ করতে পারে। পান-তাম্বুলের প্রসঙ্গ যখন এলো, দু-একটি কথা বলা যাক। কাছাড়ি, খাসিয়া পাহাড়ি জনজাতির সংখ্যা বেশি বলে ওখানের উৎপন্ন পানকে ‘খাসিয়া পান’ বলা হয়, যার পাতা অন্যান্য পান পাতার তুলনায় মোটা ও ঝাল। সেই পানে চুন লাগিয়ে তাম্বুল অর্থাৎ কাঁচা সুপারির বড় বড় টুকরো সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে তাম্বুল খাওয়ার এই চল। কতবার যে তাম্বুল খেয়ে নাক, কান লাল করেছি; তবু খেতাম। কারণ, এই পানের রসটুকু ছিল উপভোগ্য এবং হজমের জন্যও নাকি ভালো। জাটিঙ্গার কথায় ফের ঘুরে আসি। বিশিষ্ট লেখকদের কলমে চলে এসেছে এই জায়গার কথা। তার আরেকটি কারণ শীতকালীন পাখি। কথিত আছে, এখানে শীতের সময় পাখিরা এলে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে সুইসাইড করে। পরে শুনেছিলাম আসল কথা বাবার মুখে, যিনি কিনা প্রত্যক্ষদর্শী। সুইসাইড মোটেও নয়। মানস-সরোবরের বহু পাখি ঠান্ডার সময় থাকতে না পেরে ঝাঁকে ঝাঁকে হাওয়ার গতি মেনে চলে আসে জাটিঙ্গার দিকে। ওখানকার লোকাল ট্রাইবালরা রাতে আগুন জ্বালিয়ে পাখিদের সেই সময় আকর্ষণ করে। যখন হাজার হাজার পাখি ছুটে আসে আলো অনুসরণ করে, লম্বা বাঁশের মাথায় সরা কঞ্চি লাগিয়ে লোকেরা বনবন করে ঘোরাতে থাকে সেই ধারালো অস্ত্রটি। ঘায়েল পাখিরা লুটিয়ে পড়ে অগ্নিকুন্ডে। সেখান থেকে তুলে তারা বাড়ি নিয়ে ঝলসে খায় চেনা-অচেনা সুন্দর, নিরীহ পাখিগুলো। বেশ কিছু বছর হলো সরকারি পদক্ষেপে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করায় এখন এই কুৎসিত হত্যাটি বন্ধ করা হয়েছে।

লাউপানি

ট্রেন ছুটছে পাহাড়, নদী, গাছপালা পেরিয়ে। কখনো তার গতি অল্প, কখনো-বা একটু বেশি। ঝড়ের গতিতে কদাপি নচেৎ। পরপর স্টেশন ও টানেলগুলো পেরোতে সন্ধ্যা নেমেছে পাহাড়ের কোলে। কোথাও আগুন জ্বলছে পাহাড়ের গায়ে। খুব অবাক হয়ে বাবাকে একবার জিজ্ঞেস করায় জানতে পারলাম, ওই আগুন হলো জুম ক্ষেতের। ট্রেন ছাড়া চারপাশ অন্ধকার। সারা দিন প্রকৃতির অতন্দ্র পাহারায় এবারে নিদ্রাদেবী দু’বোনের চোখজুড়ে নেমে এসেছে।
ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে চলেছি দাদুর বাড়ি। শিলচরে ক্রিসমাস উপলক্ষে তেমন কোনো উৎসব মনে করার মতো নেই। কিন্তু হাফলংয়ে বেশির ভাগই খ্রিস্টধর্মাবলম্বী। ফলে এ সময় উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে পড়তো চারপাশে। এই কটা দিনের জন্য নিঝুম অঞ্চলটি সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে। ওখানে ক্রিসমাসের প্রধান খাবার হচ্ছে শুয়োরের মাংস এবং লাউপানি। ভাতকে জলের মধ্যে পচিয়ে একধরনের নেশাদায়ক পানীয় তৈরি হয়, তাকে বলে লাউপানি। জনপ্রিয় এই পানীয় ছাড়া তাদের কোনো উৎসব বা পার্টি অসম্পূর্ণ। এ ছাড়া তরকারি করা হতো ফুটন্ত জলে নানা রকম সবজির টুকরো ঢেলে; তাতে খাবার সোডা, নুন ও হলুদ দিয়ে সেদ্ধ সবজিতে মিশিয়ে দেওয়া হতো সিদল কিংবা শুঁটকি। ভাত কিংবা পাউরুটির চল ছিল। তবে এই লেখার সুবাদে হাফলংয়ে ফোন করেছিলাম। শুনলাম ইদানীং তারা নানা রকম মসলা দিয়ে সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে শিখেছে। এমনকি ওখানে এখন ফুড ফেস্টিভ্যালও হয়। স্টেশনগুলোর নাম ও জায়গা দুটোরই পরিবর্তন হয়েছে। খুব দেখতে ইচ্ছে হয় আমার স্বপ্নের ছোটবেলার পাহাড়ি অঞ্চলটিকে।

লেখক: কলকাতার হ্যাংলা হেঁশেলের সাংবাদিক
ছবি: লেখক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top