কুন্তলকাহন I হাউ টু রিকভার
এমনভাবে কাটা হলো চুল, কাম্য স্টাইলিং তো হলোই না- ঘটেছে বিপর্যয়। তখন? কিছু ব্যবস্থা তো রয়েছে এই অবস্থা সামলানোর জন্য
সৌন্দর্যপ্রেমীরা কিছুদিন পরপরই নিজেদের লুকে বদল ঘটাতে পছন্দ করেন। এর বড় একটি উপায় হলো বিভিন্ন স্টাইলে চুল কেটে নেওয়া। এতে চেহারায় লক্ষণীয় পরিবর্তন আসে। একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নতুন কাট দিতে গিয়ে চুল কাটানোটা যদি খারাপ হয়ে যায়, কিংবা ঠিক যেমনটা চেয়েছেন তেমনটা না হয়, তবে অবস্থাটা কেমন হয়? বাজে দেখা যায় এবং তা হতাশাজনকও। এ থেকে উত্তরণের উপায়ও রয়েছে। তা সমস্যাগ্রস্ত এলাকা লুকিয়েই হোক কিংবা ফিক্সিং করে। নিজের চুলের জন্য পছন্দসই একটি কাট বেছে নিতে পারেন কিংবা চুলকে বাড়তে দেখা যায়, যাতে অপছন্দের দিকগুলো লুকিয়ে ফেলা সম্ভব হয়।
চুল কাটার সময় হেয়ারস্টাইলিস্টের সঙ্গে কথা বলে নিন, কোন ধরনের স্টাইলে চুল কাটাতে চাইছেন। একটি বাজে হেয়ার কাটকে রিপেয়ার করার সেরা উপায় হলো, ঠিক যে মুহূর্তে আপনি অস্বস্তি বোধ করছেন বা মনে হচ্ছে চুল আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী কাটা হচ্ছে না, তখনই স্টাইলিস্টকে আপনার মনের কথাটি জানিয়ে দিন। একজন ভালো স্টাইলিস্ট জানতে চাইবেন তারা যা শুরু করেছিলেন তার পরিবর্তে আপনি কী চান। বুঝিয়ে বলুন, আপনি চুলে কেমন কাট চান।
সাধারণত চুল কাটানোর পর সবাইকে একটু অন্য রকম দেখায়। কারণ, চুলের ডগাগুলো দৃশ্যমান হয়। এগুলোর সেটেল হওয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন। যে লুকটি আপনি চান তা হয়তো দেখবেন সপ্তাহে দু-তিনবার শ্যাম্পু করার পর। এক সপ্তাহ পরও যদি দেখেন চুল সন্তোষজনক অবস্থায় আসেনি বা এডজাস্ট হয়নি, তখন স্টেপ নিতে পারেন ফিক্সড করার জন্য।
ক্লিপ, হ্যাট বা হেড-ব্যান্ডের সাহায্যেও খারাপভাবে কেটে ফেলা চুল আড়াল করা যায়। চুলের যে অংশগুলো লুকাতে চান, সেগুলো অন্য চুলের নিচে বা আড়ালে নিয়ে যান। এরপর ববি পিন বা হেড-ব্যান্ড দিয়ে আটকে নিন। চাইলে সুন্দর একটি হ্যাট মাথায় পরে নিতে পারেন। এতে চুল আর দেখা যাবে না। এ ছাড়া খুব ছোট ব্যাঙসও কোনো সমস্যা নয়, যখন সহায়ক সরঞ্জামাদি রয়েছে। ব্যারেট বা ববি পিন অন্য চুলের সঙ্গে ব্যাঙস অংশ মিশিয়ে দিতে সাহায্য করে। এই হেয়ার অ্যাকসেসরিজগুলো অবাধ্য বা এলোমেলো চুলকে জট পড়া থেকে রক্ষা করে।
আবার স্কার্ফও ভালো কাজ দেবে এই সমস্যায়। বিশেষ করে সামনের দিকের চুল যখন বাজে কাটা হয় বা একেবারে ছোট করে ফেলা হয়। মাথায় সুন্দর করে একটি স্কার্ফ বেঁধে নিন। তার আগে চুল পেছনের দিকে উল্টে আঁচড়ে নিন। এ ক্ষেত্রে সিল্ক বা সিনথেটিক স্কার্ফের বদলে সুতির স্কার্ফ বেছে নিন।
ধরা যাক, কোনো পার্টি আছে কিন্তু আপনার চুলের কাট স্বস্তি দিচ্ছে না। পার্টিতে যাওয়ার আগে একটি কার্লিং আয়রনের সাহায্যে সব চুল কার্ল করে নিন। এতে অসামঞ্জস্য চোখে পড়বে না। রোলারও ব্যবহার করতে পারেন ঢেউ খেলানো চুল তৈরির জন্য বা সুচালো প্রান্তগুলো আড়াল করার জন্য। যদি ভীত থাকেন যে কার্লিং আয়রনের তাপে চুল ড্যামেজ হতে পারে, তবে বেছে নিন বিভিন্ন সাইজের গোলাকার ব্রাশ, চুল ভালোভাবে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য। তবে স্ট্রেইট বা সোজা করতে যাবেন না। এতে চুলের খারাপ অংশগুলো আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। এ সময় তাই ফ্ল্যাট আয়রন থেকে দূরে থাকুন। এর বদলে বিভিন্ন ধরনের বান বেছে নিতে পারেন। চিক আপডু বাজে লেয়ার লুকিয়ে ফেলার আরেকটি ভালো উপায়।
বাজে কাট অদৃশ্য করার একটি ভালো ব্যবস্থা হতে পারে চুল কালার করে নেওয়া। চুলে যদি ইলিউশন বা বিভ্রম তৈরি করতে চান, আরও ভাইব্রেট করে তুলতে চান, তবে নিচের স্তরে বা বটম লেয়ারে চুলের স্বাভাবিক রঙের চেয়ে এক থেকে দেড় টোন গাঢ় কালার প্রয়োগ করুন। এই পদ্ধতি চুলে গভীরতা ও এক্সট্রা ভলিউম যোগ করবে।
যদি খুব ছোট চুলে স্বস্তি বোধ না করে থাকেন, তবে রয়েছে ক্লিপ-ইন হেয়ার এক্সটেনশন। এগুলো চুলের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায় এবং বেশ ন্যাচারালও। কালার এমনভাবে নির্বাচন করুন যা আপনার চুলের প্রান্ত পর্যন্ত মিলে যায়। যেখানটায় এক্সটেনশন যুক্ত করেছেন তার এক ইঞ্চি নিচে থেকে আঁচড়ে নিন। সামান্য হেয়ার স্প্রে করে ফলস পিসগুলো ক্লিপ দিয়ে আটকে দিন। সবশেষে হেয়ার এক্সটেনশনের ডগা প্রয়োজনমতো ছেঁটে নিন, যাতে আসল চুলের সঙ্গে মিলে যায়।
চুল হচ্ছে নারীর ‘ক্রাউনিং গ্লোরি’। চুল কাটা যখন বাজে হয়ে যায়, তখন এটি মনে করাই ভালো যে শিগগিরই তা ফেরত পাওয়া যাবে না। এমনও হতে পারে, হেয়ারস্টাইলিস্ট চুলের এই বাজে অবস্থা রিকভার করে দিতে পারবেন না, বিশেষ করে চুল যদি বেশি ছোট হয়ে যায়। এমন হলে চেষ্টা করুন নতুন লুকটি নিয়ে খুশি থাকার। অথবা শেষবারের মতো রিকভারের চেষ্টা করুন। তা সম্ভব না হলে সময় নিন নিজেকে পছন্দসই লুক নিয়ে আসার জন্য।
আহমেদ বুবলি
মডেল: মাশিয়াত
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন