বিউটি সার্ভিস I লাইটেনিং ফেশিয়াল
রূপচর্চার রুটিন মেনে চলছেন। স্যালনে গিয়েও নিচ্ছেন স্পেশালাইজড ট্রিটমেন্ট। কারণ, পরিবেশজুড়ে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর উপাদান। একটু অবহেলাতেই উবে যেতে পারে ত্বকের প্রাকৃতিক লাবণ্য। ব্রণ, র্যাশ আর দাগছোপে হারিয়ে যেতে পারে ত্বকের সৌন্দর্য। ত্বকসমস্যা মোকাবিলায় তাই প্রস্তুত থাকা চাই। দেশের বিউটি সেক্টরও কিন্তু বসে নেই। বরং নিত্যনতুন সেবা নিয়ে তৈরি হয়ে আছে। সম্প্রতি এমনই এক চমক যোগ হয়েছে সার্ভিস লিস্টে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য, যা অনায়াসেই ব্যবহারের উপযোগী। হ্যাঁ, বলা হচ্ছে লাইটেনিং ফেশিয়াল নিয়ে। এটা ত্বকের হারিয়ে যাওয়া দীপ্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। লোমকূপগুলো গভীর থেকে পরিষ্কার করে কমায় দাগছোপ। রোদপোড়া তামাটে ত্বকও স্বাভাবিক করে দেয়। ফলে দেখায় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও সুন্দর। এবারে ঈদের আগে বেছে নেওয়া যেতে পারে বিশেষ এ সৌন্দর্যসেবা। চাঁদের মতো ঝলমলিয়ে ওঠার জন্য।
তৈলাক্ত, শুষ্ক কিংবা স্বাভাবিক—যেকোনো ধরনের ত্বকে জুতসই লাইটেনিং ফেশিয়াল। হাইএন্ড এই ফেশিয়ালের শুরুটা দারুণ আরামপ্রদ। মুখ, মাথাসহ শরীরের উপরের অংশে রিল্যাক্সিং ম্যাসাজ দিয়ে শুরু হয় এটি। গ্লাইডিং, নিডিং আর ফ্রিকশন স্ট্রোকে বিভিন্ন মাত্রার চাপ প্রয়োগ করে চলে পুরো প্রক্রিয়া। মিনিট পাঁচেকের এই ম্যাসাজ শরীরের ক্লান্তি পুরোপুরি দূর করে। সঙ্গে ফেশিয়ালের জন্যও প্রস্তুত হয়ে ওঠে ত্বক। লাইটেনিং ফেশিয়ালের মূল প্রক্রিয়া শুরু হয় ত্বক পরিষ্কারের মাধ্যমে।
বিশেষ ধরনের থাই ক্লিনজার দিয়ে পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করা হয়। যা ত্বকের গভীর থেকে তেল, ময়লা আর দূষণ দূর করতে সাহায্য করে। এর পরপরই ফেশিয়ালটির জন্য উপযোগী করে তৈরি কফি ফ্লেবারড স্ক্রাব ব্যবহার করা হয়। এটি রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, করে তোলে দাগছোপমুক্ত। কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ক্লিনজিং ও স্ক্রাবিংয়ের পরপরই ব্ল্যাক হেডস রিমুভিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপগুলোর জন্য প্রস্তুত হয়। এরপর মুখে মাখানো হয় বিশেষ ম্যাসাজ ক্রিম। ম্যাসাজও চলে মিনিট দশেক। কিন্তু হাতে নয়। অত্যাধুনিক গ্যালভানিক মেশিনে। যার ব্যবহারে লোমকূপগুলো খুলে যায়। ফলে ত্বক পরিষ্কার করা যায় পরিপূর্ণভাবে। এতে ত্বকের নির্জীবতা কাটে। উজ্জ্বলতা আসে। ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে বিশেষ এ মেশিন। বাড়ায় রক্তসঞ্চালন আর ত্বকের অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা। আর গ্যালভানিক মেশিন ব্যবহারের পর ত্বক সহজেই পরবর্তী সৌন্দর্যপণ্যগুলো শুষে নিতে পারে। ফলে পুষ্টিগুণ পৌঁছে যায় দ্রুততম সময়ে। এরপর মাস্ক ব্যবহারের জন্য মুখ মুছে পরিষ্কার করা হয়। লাইটেনিং ফেশিয়ালে ডাবল মাস্কের প্রয়োজন হয় ত্বকে। প্রথমে দেওয়া হয় ২৪ ক্যারেট গোল্ডেন প্যাক। যা ত্বকে মাখিয়ে রাখা হয় মিনিট বিশেকের জন্য। শুকিয়ে যাওয়ার পর তা তুলে নিয়ে মাখানো হয় আরেকটি মাস্ক। লাইটেনিংয়ে মাস্ক প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। সারায় হাইপারপিগমেন্টেশন, দাগছোপ আর ত্বকের বিবর্ণ ভাব। জীর্ণতা কাটিয়ে জোগায় উজ্জ্বল আভা। সবশেষে বিশেষ ধরনের টোনার মাখিয়ে নেওয়া হয় ত্বকে। ১ হাজার ৮০০ টাকা খরচ হতে পারে ফেশিয়ালটির জন্য। বোনাস হিসেবে এর সঙ্গে হাত-পা আর ব্যাক স্ক্রাবিংয়ের সুযোগ থাকছে। অত্যাধুনিক এ ফেশিয়াল করাতে ঘণ্টা দেড়েক সময় হাতে নিয়ে যাওয়া জরুরি।
জাহেরা শিরীন
মডেল: ইন্দ্রাণী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন