ফিচার I জ্যৈষ্ঠের ঈদ ফ্যাশন
জ্যৈষ্ঠের শেষ দিকে ঈদুল ফিতর। বৃষ্টিদিন শুরুর আগে এমনিতেই ভ্যাপসা গরম থাকে। এবারের ঈদ ফ্যাশন তাই গ্রীষ্মকেন্দ্রিক। আরামের পোশাকেই। তাই বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের সংগ্রহে ঘটেছে সামার ফ্যাশনের প্রতিফলন।
টিপিক্যাল ড্রেস ও প্রিন্ট বৈচিত্র্য
বৈশ্বিক ট্রেন্ডে এ বছরের সামার কালেকশনে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে টাইডাই। এবার বেশি কালারফুল। টাইডাই চলবে আগামী কয়েক সামারে, এমন ধারণা করছেন বিখ্যাত ফ্যাশন বিশ্লেষকেরা। ঈদ কালেকশনে এর ব্যতিক্রম ঘটছে না। অলওভার প্রিন্ট চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। তবে প্রতিবারই অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন হয়। এবারেও তাই। নতুন অলওভারের মধ্যে থাকছে মাল্টিকালারের মাল্টি অবজেক্টস। পিন্টারেস্ট প্রিন্ট কালেকশনের প্রভাব দেখা যাবে ঈদে। ফ্যাশন হাউসগুলোর এবারের কালেকশন সেই বার্তা দিচ্ছে।
লজিক্যাল কালার
নতুন ফ্যাশনে রঙবৈচিত্র্য বিশ্বজুড়ে একই রকম। সেই ছাপ পড়েছে ঈদ কালেকশনেও। পার্পল ও ভায়োলেটের মধ্যে অনেক শেডই ঈদ ফ্যাশনে পুরোপুরি ইন। এ বছর ও আগামী বছরজুড়ে মেয়ে এবং বাচ্চাদের পোশাকে এই রঙ দুটির দাপট থাকবে। ছেলেদের পাঞ্জাবিতেও তাই। তবে এর বাইরে আমাদের ট্র্যাডিশনাল কালারে দেখা যাচ্ছে ঈদের পোশাক।
টিপিক্যাল প্যাটার্ন
একটু ঢিলেঢালা, আরামদায়ক প্যাটার্ন। এর সঙ্গে এবারের ঈদ কালেকশনে পশ্চিমা ধারার অংশগ্রহণ লক্ষণীয়। এবারে অ্যাসিমেট্রিক নেকলাইন দেখা যাবে ক্যাজুয়াল টপ ও পার্টি ড্রেসে। সেমি ক্রপড প্যান্ট থাকছে ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য। থাকছে পাফড শোল্ডারের ভিন্নধর্মী ব্যবহার, বেলুন স্লিভের অ্যামেন্ডমেন্টে সেমি বেলুন স্লিভ। আবার, বৈশ্বিক মেয়েদের ক্যাজুয়াল টপসের প্যাটার্নে এবার কাফতান, কিমোনো প্যাটার্ন একদমই নেই। তবে আমাদের ঈদ আয়োজনে তা বিদ্যমান থাকছে। তাই বড় পরিবর্তন আসছে না সামগ্রিক প্যাটার্নে। তবে কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে টাইট প্লিট, সোবার গ্যাদার, ডেকোরেটিভ টাইড।
গতানুগতিক কিছু ডিজাইন
মেয়েদের লং টু পিস সেট, জিপার অ্যাডেড সালোয়ার-কামিজ, স্ট্রেইট প্যান্ট এবং কামিজ প্যাটার্নের পালাজোসহ ফিউশনভিত্তিক শর্ট টপ অ্যান্ড পালাজো থাকছে আগের মতোই। যা জিপসি ড্রেস নামেও পরিচিত। দেখা যাচ্ছে জামদানি ছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে ইসলামিক মোটিফ, ফ্লোরাল, আলপনা, ম্যান্ডালা মোটিফ। রকমারি সুতি, তাঁত, হাফ সিল্ক, কাতান ও ফেক মসলিনের শাড়িও থাকছে আগের মতো। এ ছাড়া জামদানি ও অন্যান্য ট্র্যাডিশনাল মোটিফের পাঞ্জাবি থাকছে আগের মতোই। সিল্ক, কটন, টু টোন, টাই-ডাই, লিনেন ও ডবি কাপড়ের পাঞ্জাবিতে ব্যবহৃত হয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, কারচুপি ও মেশিন এমব্রয়ডারি।
টডলার টু নিউ টিন
টডলার মানে দুই থেকে আট বছরের শিশু। এদের থেকে নিউ টিন এজারের পোশাক পরিকল্পনায় আরামের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এসব পোশাকে কটন ও কটন ব্লেন্ডেড কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে বেশি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক অনুষঙ্গ—পাতার আকৃতি, বৃষ্টির পানির ফোঁটা, ফুল ইত্যাদি মোটিফে নকশা করা হয়েছে শিশুদের পোশাক। তবে, এতেও রঙ অন্যান্য পোশাকের মতোই। সব মিলিয়ে জ্যৈষ্ঠের ঈদ হচ্ছে সামার ফ্যাশনভিত্তিক।
আবদুল্লাহ আল কেমী
ছবি: সংগ্রহ