বিউটি সার্ভিস I সিগনেচার গোল্ড ফেশিয়াল
সৌন্দর্যের সঙ্গে বিলাসবহুল উপাদানের সম্পর্ক কখনো শেষ হওয়ার নয়। সেই নিয়ম মেনেই আধুনিক রূপচর্চার সম্ভার ভরে উঠেছে দুষ্প্রাপ্য ধাতু আর দামি রত্নের রাজকীয় উপস্থিতিতে। একসময় সাধারণ সব উপাদানে তৈরি ত্বকচর্চার পণ্যেই সেরে নেওয়া হতো প্রতিদিনকার বিউটি রেজিম। কিন্তু নিঃশব্দ বিপ্লব যে ঘটে গেছে! বিউটি বক্স দখল করে নিয়েছে অভিনব এবং বিশেষ সব সৌন্দর্য উপাদান। ময়শ্চারাইজার, সিরাম কিংবা জেলের বোতলে পুরে দেওয়া হচ্ছে দামি ধাতুর পার্টিকেল। এ দৌড়ে সম্ভবত সবচেয়ে এগিয়ে সোনা। ত্বকের যত্নে সোনার এই চাহিদার কারণ দুটো। প্রথমত, এটি অসামান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। দ্বিতীয়ত, সবার বাজেটের সঙ্গেই মানিয়ে তৈরি হতে পারে নানা রেঞ্জের সৌন্দর্যপণ্য। ফলে, বিউটি সার্ভিসেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর ব্যবহার। সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধায়নে উদ্ভাবিত হচ্ছে নিত্যনতুন সব সার্ভিস। যেমন সিগনেচার গোল্ড ফেশিয়াল। ত্বকে চটজলদি উজ্জ্বল, সতেজ ভাব যোগ করতে এর জুড়ি নেই। এটি ত্বকের প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণে সক্ষম। ফলে ক্লান্তি দূর করে ত্বককে দেখায় প্রাণবন্ত। সোনায় থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান অ্যাকনে আর ব্রণ সারাতেও দারুণ উপযোগী। রক্তসঞ্চালনও বাড়াবে ফেশিয়ালটি। সঙ্গে বাঁচাবে ফ্রি র্যাডিকেলের হাত থেকে। ফলে কোলাজেন উৎপাদনের হার বাড়বে। সমানুপাতিক হারে বাড়বে নতুন ত্বককোষ তৈরির প্রক্রিয়া। ফেশিয়ালটি ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককোষ সারাইয়েও চমৎকার। দূষণ দূর করে ত্বককে দেখায় ভেতর থেকে উজ্জ্বল। যা এপিডার্মিসের তারুণ্যোজ্জ্বল ভাব বাড়ায়।
ফেশিয়ালটি শুরু হয় ম্যাসাজ দিয়ে। মুখ, মাথাসহ শরীরের উপরের অংশে রিল্যাক্সিংয়ে ম্যাসাজের মূল কাজ ক্লান্তি দূর করা। ত্বককে ফেশিয়ালের জন্য প্রস্তুত করে তোলা। তারপর চলে পরিষ্কারের প্রক্রিয়া। মিনিট পাঁচেক বিশেষ ক্লিনজার দিয়ে ম্যাসাজ করে ত্বকের লোমকূপে জমে থাকা তেল, ময়লা, ধুলা আর দূষণ দূর করে নেওয়া হয় এ সময়। তারপর স্ক্রাবিং আর ব্ল্যাক হেড রিমুভিং সেরে নিয়ে মাখানো হয় ম্যাসাজ ক্রিম। আমন্ডের নির্যাস ও দুধে তৈরি এ পার্ল ক্রিম ত্বকের বাকি ময়লা তুলে আনে, করে ঝকঝকে উজ্জ্বল। তারপর ত্বকে মাখানো হয় গোল্ড জেল। অত্যাধুনিক গ্যালভানিক মেশিনের সহায়তায় চলে বিশেষ ম্যাসাজ। মূলত ত্বকের গভীরে জেল ঢোকানোর কাজ করে যন্ত্রটি। যেখানে এটি খুব গভীরে পৌঁছাতে পারে না, সেখানে এই যন্ত্র ডার্মিস লেভেলের কাছাকাছি পর্যন্ত জেল পৌঁছে দেয়। এতে লোমকূপগুলো সঠিকভাবে পরিশোধিত হয়, ত্বকে টান টান ভাব আসে। দূর হয় টক্সিন। বুড়িয়ে যাওয়া ভাব রোধ হয়। তারপর দেওয়া হয় মাস্ক। এ ফেশিয়ালে দুই ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা হয়। প্রথমে দেওয়া হয় গোল্ড মাস্ক। যা ত্বকে মাখিয়ে রাখা হয় মিনিট বিশেকের জন্য। শুকিয়ে যাওয়ার পর মাখানো হয় পার্ল মাস্ক। তা-ও ত্বকে থাকে পনেরো মিনিটের জন্য। সবশেষে টোনার মাখিয়ে নেওয়া হয়। ৪৫০০ টাকা খরচ হতে পারে ফেশিয়ালটি করতে। বোনাস হিসেবে পাওয়া যাবে হাত-পা অথবা ব্যাক স্ক্রাবিংয়ের সুযোগ। সব ধরনের ত্বকের উপযোগী এ ফেশিয়াল করতে সময় লাগবে ঘণ্টা তিনেক।
জাহেরা শিরীন
মডেল: মাশিয়াত
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস