ফিচার I সুবিন্যস্ত সাজরসদ
মেকআপের উপকরণগুলো এমনভাবে গুছিয়ে রাখা চাই, যাতে প্রয়োজনমাত্র পাওয়া যায় হাতের নাগালে
প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে মেকআপের জিনিসপত্তর খুঁজতে সময় চলে যায়। কাজলের ঢাকনা খোলা, শার্পনার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কিংবা ফেস পাউডারের নামনিশানা নেই কোথাও। এমন অবস্থায় মেজাজ ঠিক রাখা কঠিন। প্রতিদিন বের হওয়ার আগে এই যুদ্ধ থেকে বাঁচতে জেনে নিন মেকআপ গুছিয়ে রাখার কিছু কৌশল।
দুটি প্রাথমিক কাজ খুবই জরুরি। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয়, পুরোনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যগুলো ফেলে দিতে হবে; দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্ট মেকআপ অর্গানাইজারে পণ্যগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। ঠিক যেমন মাসে একবার অন্তত আলমারির জামাকাপড় গুছিয়ে রাখতে হয়, পরিষ্কার করে নিতে হয় জুতার তাক, তেমনি মেকআপের সরঞ্জামও নিয়ম করে দেখেশুনে গুছিয়ে রাখা দরকার। এবার ধাপে ধাপে জেনে নিন মেকআপ গোছানোর কৌশলগুলো।
ব্যবহার্য সব মেকআপ পণ্য এক জায়গায় জড়ো করুন
ড্রয়ার, ক্যাবিনেট, ড্রেসিং টেবিল, বাথরুম— যেখানে যেগুলো পণ্য আছে, সব। সেখানে দেখুন, যে উপকরণটি দুই বা ততোধিক আছে, যেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ এবং কখনোই যেটা আপনি ব্যবহার করেননি বা করবেন না, সেগুলো আলাদা করে ফেলে দিন। এমন একটি তালিকা মনে করুন, যেখানে আপনি ঠিক করবেন যে মেকআপের একই উপকরণ ঠিক কটি আপনার সংগ্রহে থাকবে। অর্থাৎ মাসকারা কয়টি রাখবেন বা লিপস্টিক কয়টা থাকবে অর্গানাইজারে। নেইলপলিশ যদি খুব পছন্দের হয়, তাহলে সব কটিই রাখতে পারেন, তবে নিজের কাছে এই প্রতিজ্ঞা করুন যে, নতুন একটি কিনলে পুরোনোটা ফেলে দিতে হবে; নইলে গোছানোর পুরো চেষ্টাটাই বৃথা যাবে।
দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য
অনাবশ্যক জিনিসগুলো ফেলে দেওয়ার পর সামনে কেবল প্রয়োজনীয়গুলো আছে এখন। এবার সেগুলো আলাদা করুন, যেগুলো আপনার দৈনন্দিন সাজে ব্যবহার করেন। চুলের স্প্রে থেকে শুরু করে পায়ের লোশন পর্যন্ত— সবকিছু এই তালিকায় থাকবে। আরেকটা অর্গানাইজারে রাখুন সেসব পণ্য, যেগুলো হঠাৎ একেক দিন কাজে লাগবে। আরেকটি অর্গানাইজারে রাখুন কিছু পণ্য, যেগুলো সঙ্গে নেবেন ভ্রমণের সময়, যাতে ট্রাভেল ব্যাগ গোছাতে গিয়ে এখানে-ওখানে হাতড়াতে না হয়।
জায়গার সদ্ব্যবহার করুন
যদি কেবল মেকআপের উপকরণ রাখার জন্য একটি আলমারি না থাকে, তাহলে সেগুলো কোথায় কীভাবে রাখবেন, তা নিয়েও বিস্তর চিন্তাভাবনা করতে হবে। যেকোনো কিছু গোছানোর উদ্দেশ্য জায়গার সদ্ব্যবহার করে জিনিসগুলো রাখা। ঘরের যেকোনো অংশে, দেয়ালে, ড্রেসিং টেবিলে কিংবা বাথরুমেও আপনি সাজের উপকরণ রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন সৃজনশীল নানা উপায়ে।
নতুন করে সাজান
মনের মতো করে সব গুছিয়ে নিন। প্রতিদিনের ব্যবহারের জিনিসগুলো একটু সামনের দিকে রাখুন, বাকিগুলো পেছনের দিকে। ড্রয়ারে লেয়ার করে জিনিস রাখতে পারেন। আবার পেনসিল মেকআপগুলো রাখতে পারেন পুরোনো কোনো মগে। প্রতিটি অর্গানাইজারের সামনে কাগজে হাতে লিখে দিতে পারেন এর ভেতরে কী কী জিনিস আছে।
নিজের হাতে বানান
ব্যাগে কিংবা বাক্সে সব মেকআপ সামগ্রী তুলে রাখলে নিত্যব্যবহারের সময় বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য মেকআপের কিছু সামগ্রী হাতের কাছে রাখা প্রয়োজন। সব ধরনের উপকরণ স্বল্প স্থানের মধ্যে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখতে চাইলে শক্ত কাগজ, রঙিন কাগজ ইত্যাদি দিয়ে ঘরেই বানিয়ে নিতে পারেন মেকআপ হোল্ডার। এতে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় সৌন্দর্যসামগ্রী সহজেই হাতের নাগালে থাকবে।
এ ছাড়া মনে রাখবেন
অর্গানাইজারগুলো ট্রান্সপারেন্ট বা স্বচ্ছ হলে ভালো হয়
যে জিনিসটা যেখান থেকে নেবেন, সেটি আবার সেখানেই গুছিয়ে রাখুন
দিনের ও রাতের মেকআপে জিনিসগুলো আলাদা করে রাখতে পারেন
যেগুলো নিয়মিত ব্যবহার করবেন, সেগুলো সামনের দিকে রাখতে পারেন
মেকআপ অর্গানাইজার এমন কিনবেন যেটিতে আপনার বর্তমান মেকআপ পণ্য রাখার পর আরও জায়গা থাকে
যেখানেই রাখুন না কেন, মেকআপ সামগ্রী ঢেকে রাখার চেষ্টা করবেন; খোলা মেকআপ ব্রাশ অবশ্যই বন্ধ জায়গায় রাখবেন
চেষ্টা করুন নিয়মিত ব্রাশ আর অ্যাপ্লিকেটর পরিষ্কার করতে। ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে তবেই আবার ব্যবহার করবেন
সব সময় চেষ্টা করতে হবে বিউটি ব্লেন্ডারকে বায়ুনিরোধক কোনো স্থানে রাখার জন্য। কাচের জার জুতসই
মেকআপের রসদপত্র সঙ্গে নিয়ে কাজে বেরোনোর অভ্যেস থাকলে এমনভাবে সেগুলো বাছুন, যাতে একটা দিয়েই অন্য প্রয়োজনগুলো মিটে যায়। যেমন লিপস্টিক আর ব্লাশার আলাদা না নিয়ে ব্যাগে রাখুন কম্বাইন্ড লিপ অ্যান্ড চিক টিন্ট। একইভাবে এমন একটা কম্প্যাক্ট বাছুন, যার সঙ্গে আয়না লাগানো আছে
সুরবি প্রত্যয়ী
ছবি: ইন্টারনেট