ফরহিম I লালগালিচায় পাওয়া
রেড কার্পেট থেকে নেওয়া তিনটি হেয়ার লুক। এখনকার ছেলেদের নতুন ট্রেন্ড
লং অ্যান্ড ফ্লপি
কিছুটা ওয়েভ থাকলেই মানিয়ে যাবে এই হেয়ারকাটে। পুরোপুরি স্ট্রেইট চুলে এমন আলসে লুকটা পাওয়া যাবে না। কোঁকড়ানো হলে মাথার চারপাশেই চুল বড় করে এই স্টাইল করা যায়। এ ক্ষেত্রে চুলের নিচের অংশ তীক্ষè করে কাটতে হবে, যাতে নিজের মতো করে টেকশ্চারাইজ করতে পারেন। তা না হলে চুল ফ্ল্যাট হয়ে পড়ে থাকবে, অনেক সময় ধরে হেলমেট পরে থাকলে যেমনটা হয়।
স্লিক কম্ব ওভার
ক্যাপ্টেন আমেরিকা খ্যাত তারকা ক্রিস ইভান্সের হেয়ারস্টাইল প্রমাণ করে, স্লিক ব্যাক লুকটা এখনো ট্রেন্ডের শীর্ষে। তিনি অস্কার রেড কার্পেটে এই সাইড পার্টেড চুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ করেন সবাইকে। এ ধরনের হেয়ারস্টাইল কখনো পুরোনো হয়ে যায় না। এটা মানিয়ে যায় সোজা কিংবা অবাধ্য— দুই ধরনের চুলেই। তবে ভুলে গেলে চলবে না, এই হেয়ারস্টাইলের জন্য অবশ্যই একটা ভালো হেয়ার ওয়্যাক্স প্রয়োজন।
সব ধরনের চুলে মানিয়ে যাওয়া এই হেয়ারস্টাইল চলছে কয়েক দশক ধরে। এই লুকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায় জ্যাক অ্যাফ্রন কিংবা শ্যানিং ট্যাটামকে। তারা খুব সুন্দরভাবে স্টাইলটি ফলো করেছেন। তবে খুব পাতলা চুলে এই হেয়ারস্টাইল একটু বেমানান।
কম্ব ওভারের জন্য
পূর্ণাঙ্গ কম্ব ওভার লুক পেতে হলে অবশ্যই সঠিক হেয়ারকাট থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আপনার হেয়ারস্টাইলিস্টের সঙ্গে পরিষ্কারভাবে কথা বলে নিতে হবে যে, আপনি ঠিক কী রকম হেয়ারকাট চান। আন্ডারকাটসহ কম্ব ওভার চাইলে পাশে চুল রেখে পেছনে শেভ করে নিতে হবে, যেখানে ক্রমান্বয়ে ছোট হতে থাকবে। আর উপরের চুল থাকবে ২ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা। তবে যদি একটা পরিণত আর তীক্ষè কম্ব ওভার লুক চান, তবে উপরে ২ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা রেখে পাশের চুল হালকা ছোট করে ছেঁটে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শেভ করার প্রয়োজন নেই।
সাইড পার্ট
কম্ব ওভারে গাঢ় একটা সাইড পার্টও করে নিতে পারেন। এটা হেয়ারস্টাইলকে ট্রেন্ডি লুক দেবে। স্বাভাবিক সিঁথির মাধ্যমেই এটা করতে পারেন একটু হালকা লুক চাইলে। বেশি জোরালোভাবে সাইড পার্টটা ঝোলানোর জন্য হেয়ারস্টাইলিস্টকে বলতে পারেন। রেজরের মাধ্যমে তিনি একটা পার্টিং লাইন তৈরি করে দেবেন।
ব্লো ড্রাই
ব্লো ড্রাইয়ের মাধ্যমে চুল মসৃণ করে নিতে হবে। এর আগে তা পরিষ্কার করা জরুরি। একটা ভালো হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে উপর থেকে পেছনে নিয়ে চুল ব্লো ড্রাই করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিরুনি ব্যবহার করুন। ব্লো ড্রাই করার সময় চিরুনির ব্যবহার চুলের মসৃণতা নিশ্চিত করে আর জট থাকলে তা ছাড়িয়ে নেয়। পেছনের আর পাশের চুলে ফ্ল্যাট ব্লো ড্রাই করতে হবে।
স্টাইলিং ওয়্যাক্স
কম্ব ওভার স্টাইলিংয়ে পরিপূর্ণতা দিতে ভালো স্টাইলিং ওয়্যাক্সের বিকল্প নেই। হাতের তালুতে অল্প পরিমাণে স্টাইলিং ওয়্যাক্স নিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ধীরে ধীরে হাত চালিয়ে নিতে হবে। সব জায়গায় সমানভাবে ওয়্যাক্স লেগে গেলে তারপর চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিজের মতো করে চুল সেট করে নিতে হবে। স্মার্ট কম্ব ওভার লুকের জন্য চুল কিছুটা পেছনের দিকে নিয়ে সাইড ব্রাশ করুন। তবে অবশ্যই চুলের স্বাভাবিক গতিবিধি ঠিক রাখবেন।
ব্যস! এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করলেই খুব সহজে পেয়ে যাবেন একটা পারফেক্ট কম্ব ওভার লুক।
শর্ট টেক্সচারড কুইফ
জ্যাক এফ্রনের রেড কার্পেট লুক থেকে জনপ্রিয়তা বাড়ে কুইফের। এতে সাধারণত উপরের চুল উপর দিকে তুলে পেছনে টেনে নেওয়া হয়। নিজের চুলে কুইফ বেশি সময় ধরে বজায় রাখা কঠিন হলেও ক্ল্যাসিক কুইফ সব সময়েই ছেলেদের মধ্যে জনপ্রিয়। এই বহুমুখী হেয়ারস্টাইলের সেরা দিক হচ্ছে, ছোট, মাঝারি কিংবা বড়— সব ধরনের চুলের জন্যই এটি বেছে নেওয়া যায়। ছোট চুলে যদি এই স্টাইল চান, তবে ভলিউমের চেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে টেকশ্চারের দিকে। কারণ, ভলিউমের জন্য প্রয়োজন একটু বেশি চুলের। শর্ট ব্যাক অ্যান্ড সাইডস কুইফ সহজ একটা হেয়ারস্টাইল। সাইডে শর্ট লেন্থ রেখে উপরের দিকে একটু ভলিউম দেওয়ার মাধ্যমে এই স্টাইলিং করতে পারেন। টেকশ্চারড বা অগোছালো কুইফ ট্র্যাডিশনাল হেয়ারস্টাইলেরই একটা আধুনিক রূপ। যদি খুব কম সময়ে আর সহজে কোনো ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়া হেয়ারস্টাইলিং চান, তবে এর বিকল্প নেই। এমনকি এই স্টাইলিং চুলের উপরের অংশে উচ্চতা বাড়িয়ে আপনাকে আরও লম্বা দেখাতে সাহায্য করে।
কুইফের জন্য
একটা চিকন দাঁতের চিরুনি দিয়ে কিছু চুল নিয়ে আপনার চুলের স্বাভাবিক গতিবিধির ঠিক উল্টো দিকে একটা সাইড পার্ট করে নিন।
এই পর্যায়ে চুলে সল্ট স্প্রে দিলে স্টাইলিংয়ের সময় এটা চুলে টেকশ্চার বাড়াবে
এবার চুল উপরের দিকে টেনে ব্লো ড্রাই করে নিন। খেয়াল রাখবেন, যাতে আলাদা করা চুল মাথার অন্য চুলের সঙ্গে মিশে না যায়। অবশ্যই স্বাভাবিক গতিবিধির উল্টো দিকে ব্লো ড্রাই করতে হবে। এতে চুলে অতিরিক্ত ভলিউম যোগ হবে
ব্লো ড্রাইয়ের পরে চিরুনি দিয়ে সাইড পার্টেড অংশটা একটু আঁচড়ে নিন। সল্ট স্প্রে করা চুল ড্রাই করে নিলে চুল নিয়ন্ত্রণে থাকবে
খুব অল্প পরিমাণে হেয়ার ক্লে বা ওয়্যাক্স হাতে নিয়ে পুরো চুলে সমানভাবে লাগিয়ে নিন। এটা হেয়ারস্টাইলকে একটা সুন্দর ফিনিশ দেবে। আরেকটু যথাযথ লুকের জন্য চিরুনি দিয়ে কুইফ সঠিক জায়গায় বসিয়ে নিয়ে চুল আটকে নিন হেয়ার স্প্রে দিয়ে।
মডেল: অভিনেতা আরিফিন শুভ
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: ক্যানভাস