ফরহিম I এইজ! জাস্ট অ্যা নাম্বার
বাড়ুক বয়স। কিন্তু এর ছাপ যেন না পড়ে ত্বকে বা চেহারায়। সে জন্য কী কী চাই?
বুড়িয়ে যাওয়ার প্রভাব মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ত্বকেই বেশি পড়ে। কারণ, ছেলেরা স্বভাবতই ত্বকের যত্ন কম নিয়ে থাকে। ফলে একটা নির্দিষ্ট সময় থেকে তাদের বেশি বয়স্ক মনে হতে থাকে। যদিও ততোটা বয়স তাদের হয়নি। ত্বকের বলিরেখা, কুঁচকে যাওয়া চোখ কিংবা নিষ্প্রাণ চেহারা—এ সবকিছুই তখন প্রকট হয়ে ওঠে। তবে এর থেকে বাঁচার উপায়ও আছে। প্রাত্যহিক ও সাপ্তাহিক কিছু নিয়ম মেনে চললে বয়স বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো বিলম্বিত করা সম্ভব।
ফেসওয়াশ ও ময়শ্চারাইজার
ত্বকের প্রতিদিনের যত্নের জন্য একটা রুটিন তৈরি করে তা নিয়মিত অনুসরণ করতে হবে। সাধারণ ফেসওয়াশ আর ময়শ্চারাইজারের নিয়মিত ব্যবহারেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে। অবশ্যই ছেলেদের ত্বকের জন্য তৈরি ফেসওয়াশ ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ত্বকের ফাইন লাইন কমিয়ে ত্বককে আরও বেশি প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। তবে যেকোনো প্রডাক্ট কেনার আগেই নিজের স্কিন টাইপ অবশ্যই জেনে নেবেন।
অ্যান্টি-এজিং ক্রিম
ছেলেদের অ্যান্টি-এজিং ক্রিমে হালকা অ্যালোভেরা, হায়ালুরনিক অ্যাসিড কিংবা গ্রিন টির মতো অ্যান্টি-এজিং উপাদানগুলো হতে হবে হালকা এবং ট্রান্সপারেন্ট। এতে ত্বকের উপরে আলাদা কোনো প্রলেপ অনুভূত হবে না। রাতে এই ক্রিমের ব্যবহার বিশ্রাম নেওয়া ত্বকে প্রাণ সঞ্চার করে। অ্যান্টি-এজিং সিরামও আজকাল পাওয়া যাচ্ছে ছেলেদের জন্য। ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখতে এটি বেশি কার্যকর। কারণ, সিরাম গভীরে গিয়ে ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এতে বলিরেখা আর ফাইন লাইন কমে আসে। প্রতিকারের পাশাপাশি বার্ধক্যের ভবিষ্যৎ প্রভাব প্রতিরোধও করে থাকে নাইট সিরাম। রাতে ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। মুখত্বক শুকিয়ে গেলে তাতে কয়েক ফোঁটা সিরাম লাগিয়ে নিন। সিরাম শুকিয়ে গেলে তার উপর অ্যান্টি-এজিং ক্রিম লাগিয়ে নিন। এই প্রক্রিয়া দিনেও চালিয়ে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডে ক্রিম এবং ডে সিরাম ব্যবহার করতে হবে।
মেনজ আই ক্রিম
ছেলেদের চেহারার যে অংশে বয়সের ছাপ সবচেয়ে বেশি পড়ে, তা হলো চোখের চারপাশের ত্বক। এটা চেহারার এমন একটা অংশ, যা খুব সহজে চোখে পড়ে। চোখের চারপাশের এই নিষ্প্রাণ কিংবা কুঁচকে যাওয়া অংশ থেকে চেহারাকে বাঁচানোর উপায় আই ক্রিমের ব্যবহার। সকালে কিংবা রাতে বা উভয় সময়েই এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে রাতেই বেশি ফলপ্রদ, কেননা চোখ এবং ত্বক তখন দীর্ঘ সময় বিশ্রাম পায়। আপনি সকালে উঠেই একটা প্রাণবন্ত লুক পেয়ে যাবেন। অন্যদিকে ডার্ক সার্কেল কমিয়ে আনার জন্য দিনের শুরুতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ক্রিমটা যেন খুব হালকা হয়, যাতে বোঝা না যায় যে ওই অংশে কিছু ব্যবহার করা হয়েছে। আই ক্রিম কেনার আগে অবশ্যই এর উপাদানগুলো দেখে নেবেন। সবচেয়ে ভালো হয় ক্যাফেইনযুক্ত আই ক্রিম ব্যবহার করলে। এটি চোখের চারপাশের ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং ডার্ক সার্কেল ও ফোলা ভাব কমিয়ে আনে।
সূর্যতাপ এড়িয়ে চলা
যত সানস্ক্রিনই মাখা হোক না কেন, আর তা যে মাত্রার এসপিএফই হোক না কেন, সূর্যের তাপ ত্বকের কমবেশি ক্ষতি করবেই। এই নয় যে, এসপিএফ কাজ করছে না। এর কারণ নিয়মানুযায়ী আধা ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন না লাগানো। কিছু ক্ষেত্রে এটা সম্ভবও হয়ে ওঠে না। তাই যতটা সম্ভব রোদ থেকে দূরে থাকুন, আর রোদ এড়ানো সম্ভব না হলে চেষ্টা করুন বারবার সানস্ক্রিন লাগানোর। রোদে ত্বক পুড়ে গেলে স্কিন স্পেশালিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করাই শ্রেয়।
হেলদি লাইফস্টাইল
বয়সের প্রভাব রুখে দেওয়ার প্রথম শর্ত হলো হেলদি লাইফস্টাইল। অনিদ্রা বা কম ঘুমানো, ব্যায়াম না করা, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুডে আসক্তি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শারীরিক বয়স লক্ষণীয়ভাবে বাড়িয়ে দেয়। নিজেকে ফ্রেশ রাখার জন্য দরকার পরিমিত স্বাস্থ্যকর খাবার। ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম।
অ্যান্টি-এজিং প্রডাক্ট
বয়সরোধী পণ্য কেনার আগে খেয়াল রাখা দরকার, এর মধ্যে রেটিনল, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, এমএসএম, ডিএমএই ইত্যাদি আছে কি না। এ ছাড়া অ্যালোভেরা, গ্রিন টি, ক্যাফেইন এসব বাড়তি সুবিধা দেবে। হিমস-এর গুডনাইট রিঙ্কেল ক্রিম, অজ ন্যাচারালসের রেটিনল সিরাম, কসমেডিকার হায়ালুরনিক অ্যাসিড সিরাম, নিউট্রিজেনার হেলদি স্কিন আই ফার্মিং ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
শিরীন অন্যা
মডেল: কারার
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: ক্যানভাস