ফিচার I বিউটি on ডিউটি
অফিস ডেস্কের ড্রয়ারে থাকুক সাজসরঞ্জামের ছোট্ট সংগ্রহ। চটজলদি টাচআপ আর যত্নের জন্য। মুহূর্তে ঝলমলিয়ে উঠতে
কলম, কাগজ আর হরেক রকম দরকারি ফাইলপত্র—সবই থাকুক অফিস ডেস্কের ড্রয়ারে। কিন্তু এক কোণ যদি বরাদ্দ রাখা যায় জরুরি সাজসরঞ্জাম দিয়ে, ক্ষতি কী? দিনের একটা দীর্ঘ সময় যাদের অফিসের চার দেয়ালে কাটে, তাদের সৌন্দর্যবিষয়ক যেকোনো সমাধানের দারুণ অপশন হতে পারে এটি। মধ্য দুপুরের টাচ আপ, হুটহাট মিটিং আর প্রেজেন্টেশন কিংবা অফিস পার্টি, কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার আগে ডেটের জন্য পরিপাটি হয়ে উঠতে এগুলোই কাজে আসবে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অতশত মেকআপ, স্কিন আর হেয়ার কেয়ার প্রডাক্টের মধ্যে কোনটা রাখা যাবে আর কোনটা যাবে না, এই নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন অনেকেই। তাদের জন্যই গাইডলাইন।
বডি লোশন
অফিস মানেই দিনের একটা দীর্ঘ সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরায় কাটানো। ফলাফল রুক্ষ ত্বক, চামড়া ওঠা, ফাটা ভাব আর সাদা শুষ্কতার অস্বস্তি। এর চটজলদি সহজ সমাধান বডি লোশন। চলবে হ্যান্ড ক্রিমও। তবে তা হতে হবে ময়শ্চারাইজিং ফর্মুলায় তৈরি। এবং চটচটে যেন না হয়। বরং কুইজ অ্যাবজরবিং ফর্মুলার অর্থাৎ যেগুলো ত্বক খুব সহজেই শুষে নেয়, অফিসে সেগুলো সবচেয়ে বেশি উপযোগী। তাই হাত ধোয়ার পর কিংবা এয়ারকন্ডিশনের প্রভাবে যখনই ত্বক শুষ্ক অনুভূত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বডি লোশন বা হ্যান্ড ক্রিম মেখে নিলে অস্বস্তি থেকে মুক্তি। তাই অফিস ডেস্কের ড্রয়ারে এটি রাখা অতীব জরুরি।
ফেস মিস্ট
হাতের ত্বকের সঙ্গে মুখত্বকও বেশ শুষ্ক হয়ে ওঠে অফিসের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। ফেস মিস্ট দারুণ এক উপায় শুষ্কতা সারাইয়ে। হাইড্রেটিং ফেস মিস্ট ত্বকের উপর আর্দ্রতার আলাদা স্তর তৈরি করে দেয়। ফলে দেখায় কোমল ও পরিপুষ্ট। ক্লান্তি ভাব কাটাতেও সাহায্য করে। চেহারায় চনমনে ভাব ফুটে ওঠে। সকালে করা মেকআপ দেখায় প্রাণবন্ত। ডেস্কের ড্রয়ারে তাই একটা ফেস মিস্ট রেখে দেওয়া যায়। দরকার পড়লেই ব্যবহার করা যাবে দিনভর।
ক্লিনজার
ত্বকের ধরন বুঝে একটা ক্লিনজার যদি পুরে রাখা যায় ড্রয়ারে, তাহলে যখন-তখন চটজলদি ত্বক পরিষ্কার করে নেওয়া যাবে। তাতে সতেজ দেখাবে ত্বক। সারা দিনের কর্মব্যস্ততায় ক্লান্তির ছিটেফোঁটাও থাকবে না চেহারায়। প্রেজেন্টেশন, মিটিং কিংবা অফিসের পর পার্টি অথবা ডেটের জন্য তৈরি হতে কুইক ক্লিনজিং সেশনের বিকল্প কিছু নেই।
বি বি ক্রিম
ফাউন্ডেশন আর কনসিলারের বাড়তি ঝামেলা এড়িয়ে চটজলদি মেকআপ লুক তৈরিতে বি বি ক্রিম সেরা সমাধান। তাই অফিসের ড্রয়ারে এটি রাখা যেতেই পারে। তবে বাছাইয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় কাভারেজ দেওয়ার পাশাপাশি এমন বি বি ক্রিম বেছে নেওয়া প্রয়োজন, যা আর্দ্রতাও জোগাবে ত্বকে। এসপিএফ বাদেও যেন ত্বকের জন্য উপকারী উপাদানগুলোর উপস্থিতি থাকে ক্রিমটিতে। এতে করে সারা দিনের জরুরি পুষ্টির জোগান পাবে ত্বক। তা দাগছোপমুক্ত, নিখুঁত তো থাকছেই।
কনসিলার
ত্বকে যাদের বাড়তি কাভারেজ প্রয়োজন বা পছন্দ, তাদের জন্য কনসিলার জুতসই। সারা দিনের ক্লান্তি ঢাকতে চোখের চারপাশে কিংবা হঠাৎ উঁকি দেওয়া ব্রণকে বশে রাখতে এটি ব্যবহার করা যায় যখন-তখন। দিনভর একদম পিকচার পারফেক্ট লুকের জন্য তাই পছন্দের কনসিলার রাখা যেতে পারে অফিস ডেস্কের ড্রয়ারে।
ব্লটিং পেপার
মেকআপের পর একসময় একটু তেলে ভাব দেখা দেবেই। আর অফিসে সারা দিনের দৌড়ঝাঁপের মধ্যে এটা খুবই স্বাভাবিক। যারা নতুন করে মুখ ধুয়ে আবার মেকআপ করার ঝামেলায় যেতে চান না, তাদের জন্য ব্লটিং পেপার জুতসই। চটজলদি একটু চেপে নিন মুখে। ব্যস! তেলে ভাব গায়েব। মেকআপ দেখাবে একদম ফ্রেশ। শুধু পেপার নয়, মিলবে ব্লটিং স্টিকও। ড্রয়ারে অনায়াসে এঁটে যাবে এটি।
লিপ বাম
লিপস্টিক আর লিপ গ্লস তো সব সময় সঙ্গেই থাকে। তাই লিপ বামটা থাকা চাই ডেস্কের ড্রয়ারে। চটজলদি ঠোঁটের শুষ্কতা সারাবে এটা। তা ছাড়া অফিসে লাঞ্চের পরের খানিকটা সময় যদি লিপ বাম মাখিয়ে রাখা যায় ঠোঁটে, তা আরাম জোগাবে। ফাটা ভাব দূর করে লিপস্টিক মাখার জন্য প্রস্তুত করবে ঠোঁটকে। শুধু তা-ই নয়, চটজলদি ত্বকের শুষ্কতা সারাইয়েও লিপ বাম ব্যবহার করা যায় অনায়াসে। আর টিন্টেড লিপ বাম তো ব্লাশঅন হিসেবেও দারুণ।
ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে
চুলের জৌলুশ ফিরিয়ে দিতে পারে ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে। নেতিয়ে পড়া উষ্কখুষ্ক চুলে ভলিউম জোগায়। দেয় মসৃণ, পলিশড লুক। শ্যাম্পু না করা চুলেও দেয় ঝরঝরে পরিচ্ছন্ন ভাব। তাই প্রতিদিন শ্যাম্পু করার সময় কিংবা সুযোগ যদি না থাকে, সে ক্ষেত্রে ড্রাই শ্যাম্পু খুব কাজের। ডেস্কের ড্রয়ারে এটা থাকা চাই।
হেয়ার সিরাম
নতুন হেয়ারস্টাইল যখন নিত্যসঙ্গী, তখন তা সুন্দরভাবে যেন সেট থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা চাই। হেয়ার সিরাম এই কাজে সেরা। অবাধ্য আর এলোমেলো চুল বশে রাখে, হেয়ারস্টাইলকে রাখে পলিশড। সঙ্গে যোগ করে বাড়তি উজ্জ্বলতা। অল্প কয় ফোঁটায় সেকেন্ডেই চুল দেখায় স্যালন ট্রিটেড। তাই এটাও থাকা চাই ডেস্কের ড্রয়ারের কোণে।
কন্ট্যাক্ট সলিউশন
যারা লেন্স ব্যবহার করেন, তাদের জন্য খুব জরুরি। সারা দিন কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখ তো ক্লান্ত হয়ই। যারা লেন্স ব্যবহার করেন, তাদের চোখ শুষ্ক হয়ে আসে, ফলে তৈরি হয় অস্বস্তি। সে ক্ষেত্রে ছোট বোতলের হ্যান্ডি কন্ট্যাক্ট সলিউশন সেরা সমাধান। দুপুরের দিকে লেন্সটা এতে ধুয়ে নিলে তফাতটা টের পাবেন।
এ ছাড়া পছন্দসই কয়েক রঙের নেইলপলিশ, ববি পিন, হেয়ার টাই, স্যানিটাইজার, পারফিউমের ছোট বোতলও রাখা যেতে পারে অফিস ডেস্কের ড্রয়ারে। সব সময় পিকচার পারফেক্ট থাকার জন্য।
জাহেরা শিরীন
ছবি: ইন্টারনেট