সম্পাদকীয়
আকাশের স্বচ্ছ নীলে, মেঘ আর কাশবনের মনকাড়া শুভ্রতায় ভর করে আবার এলো সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। উদযাপনের রীতিপ্রথা ধর্মীয় হলেও বেশ আগে থেকেই এটি সর্বজনীন। মানে, সম্প্রদায়-বর্ণ-শ্রেণি-পেশানির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে শামিল হয়ে থাকেন। তাতে সহাবস্থান ও সম্প্রীতির এক আনন্দমুখর আবহ সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের মানুষ যে সত্যিকার অর্থেই অসাম্প্রদায়িক ও উৎসবপ্রিয়, এতেই তা বোঝা যায়।
ক্যানভাসও এর সঙ্গে রয়েছে। প্রতিবারের মতোই। কিন্তু নতুন রূপে, আকর্ষণীয় আর উদ্ভাবনী সব আয়োজন নিয়ে। এবারের কভারস্টোরির কথাই ধরুন। যার শিরোনাম ‘শস্যপ্রতিমা’। আঠারো শতকের কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর অন্নদামঙ্গল কাব্যে লিখেছিলেন, ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য খাদ্যের গ্যারান্টি চেয়েছিলেন তিনি, অন্নপূর্ণার কাছে। এই দেবীই লেখকের ভাষায় শস্যপ্রতিমা, যিনি অন্নের উৎস। লৌকিক এই দেবীকে রূপকার্থেই প্রাসঙ্গিক করে তোলা হয়েছে আজকের ইকোলজিক্যাল সিস্টেমের বিপর্যয়, খাদ্যসংকট মোকাবিলা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে। আশা করি, রচনাটি পাঠকদের ভালো লাগবে।
অন্যান্য প্রয়োজনীয় ও সৃষ্টিশীল বিষয়ের পাশাপাশি উৎসবসম্মত খাবারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই সংখ্যায়। এখানেও ক্যানভাসের শারদীয় আয়োজন ব্যতিক্রমী। এবার স্থান পেয়েছে পূজার আমিষপ্রধান রেসিপি, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের রান্নায় মসলার পার্থক্য নিয়ে কৌতূহলকর নিবন্ধ।
আমাদের কালে হৈমন্তী শুক্লার গান শোনেননি, এমন বাঙালি খুব কমই আছেন। অসাধারণ এক কণ্ঠশিল্পী তিনি। আজও স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি তাঁর গান শুনে। এ সংখ্যার আলাপনে আমরা তাঁকে পেয়েছি। এ বড় আনন্দের।
সংখ্যাটি যখন পাঠকের হাতে, বিশ্বজুড়ে তখন হ্যালোউইন ফেস্টিভ্যালের প্রস্তুতি চলছে। বড় বড় শহরের মানুষ এই রোমাঞ্চকর এই উৎসবের অপেক্ষায়। এ নিয়ে রয়েছে একটি নিবন্ধ। তেমনি বিভিন্ন বিভাগের সূচনাপৃষ্ঠা সাজানো হলো হ্যালোউইন থিমের অলংকরণে।
উৎসব আনন্দময় হোক। সবার জন্য।