হেঁশেলসূত্র I আমিষান্ন
প্রোটিনের আকর ছটি পদ। স্বাদ ও পুষ্টির সুখকর উৎস। পূজার পাতে। রেসিপি দিয়েছেন দেবী সাহা
কৃতজ্ঞতা:
গৌতম সাহা, ফ্যাশন এডিটর, আইস টুডে ও নূপুর সাহা
ছবি:
সৈয়দ আয়ন
পাবদা মাছের ঝোল
উপকরণ: পাবদা মাছ ৫টি, কাঁচা মরিচের বাটা ১ চা-চামচ, সরিষাবাটা ২০ গ্রাম, পেঁয়াজবাটা ১ চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, লাল মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, তেজপাতা ২টি, কালোজিরা আধা চা-চামচ, সরিষার তেল প্রয়োজনমতো, লবণ স্বাদমতো, ধনেপাতার কুচি পরিমাণমতো।
প্রণালি: মাছ ভালোভাবে ধুয়ে হালকা ভেজে নিতে হবে। কড়াইয়ে তেল গরম করে কালোজিরা ও তেজপাতা দিন। কিছুক্ষণ পর আদাবাটা যোগ করুন। লাল হয়ে এলে কাঁচা মরিচের বাটা, পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, লাল মরিচের গুঁড়া ও হলুদগুঁড়া দিন। অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে নাড়ুন। কয়েক সেকেন্ড পর ভাজা মাছ ও সরিষাবাটা দিন। লবণ যোগ করুন। মাছ সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রাঁধুন। ধনেপাতার কুচি ছিটিয়ে নামিয়ে নিন। ভাতের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।
চিংড়ি পোলাও
উপকরণ: চিংড়ি ৫০০ গ্রাম, তেল ৫০ মিলিগ্রাম, পোলাও চাল ৪০০ গ্রাম, পেঁয়াজ স্লাইস করে কাটা ২টি, লবঙ্গ ৪টি, এলাচি ৪টি, দারুচিনি ৩টি, রসুনকুচি ১০ কোয়া, বড় মাপের টমেটোকুচি ১টি, আদাকুচি ২ ইঞ্চি, কাঁচা মরিচের কুচি ৩টি, নারকেলের দুধ আধা কাপ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ ২ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ।
প্রণালি: চিংড়ির মাথা ও খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে পানি নিয়ে চিংড়িগুলো সেদ্ধ করে নিন। স্টক আলাদা করে রাখুন। সেদ্ধ চিংড়িতে সামান্য লবণ মেখে রেখে দিন। কড়াইয়ে তেল নিন। তাতে পেঁয়াজকুচি ও চিংড়ি দিয়ে হালকা বাদামি করে ভাজুন। কড়াইয়ে এলাচি, লবঙ্গ, দারুচিনি, আদা ও রসুন দিয়ে আরও এক মিনিট নাড়ুন। এবার টমেটোকুচি, কাঁচা মরিচ ও হলুদগুঁড়া যোগ করুন। আরও দু-তিন মিনিট কষিয়ে নিন। তারপর চাল যোগ করে এক মিনিট ধরে নেড়ে মিশিয়ে নিন। তাতে চিংড়ি স্টিক, নারকেল দুধ ও সামান্য চিনি দিন। ভালো করে মিশিয়ে মাঝারি আঁচে সেদ্ধ হতে দিন। হয়ে গেলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
সরিষা ইলিশ
উপকরণ: টুকরা করা ইলিশ মাছ, সরিষাবাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৬টি, তেল পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: মাছের টুকরাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে হলুদ ও লবণ মেখে রেখে দিতে হবে। চুলায় পাত্র দিয়ে তেল গরম করে নিতে হবে। তাতে পেঁয়াজকুচি ভেজে নিন। ভাজা হলে সরিষাবাটা ও কাঁচা মরিচ বাদে অন্যান্য উপকরণ একে একে যোগ করে কষিয়ে নিতে হবে। এবার মাছের টুকরাগুলো মসলার উপর দিয়ে দিতে হবে। সামান্য পানি দিয়ে মাছের টুকরাগুলো উল্টোতে দিন। এবার সরিষাবাটা ও কাঁচা মরিচ যোগ করুন। সামান্য পানি দিয়ে পাত্র ঢেকে দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন সরিষা ইলিশ।
রুই মাছের কালিয়া
উপকরণ: রুই মাছের বড় টুকরা ৪টি, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, টক দই ২ কাপ, কাঁচা মরিচ ৬টি, কিশমিশ ৫০ গ্রাম, ঘি ১ চা-চামচ, আদাকুচি, পেঁয়াজ ও রসুনবাটা পরিমাণমতো, তেল ও জিরাগুঁড়া প্রয়োজনমতো, চিনি সামান্য পরিমাণ।
প্রণালি: মাছের টুকরাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে। এবার মাছগুলো টক দইয়ে পাঁচ মিনিট ধরে ভিজিয়ে রাখুন। একটি কড়াইয়ে ঘি ও পরিমাণমতো তেল নিয়ে তাতে পেঁয়াজকুচি, আদাকুচি, পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, লবণ, চিনি, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। দইয়ে ভেজা মাছের টুকরাগুলো কষানো মসলায় ছেড়ে দিতে হবে। এবার ঢেকে দিয়ে মাখা মাখা করে রেঁধে নিন। নামানোর আগে কিশমিশ, কাঁচা মরিচ ফালি ও জিরাগুঁড়া ছিটিয়ে দিতে পারেন।
মুরগির রোস্ট
উপকরণ: আস্ত মুরগি ১টি, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, টক দই দেড় কাপ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, জয়ত্রীগুঁড়া আধা চা-চামচ, জায়ফলগুঁড়া প্রয়োজনমতো, তেল ২ কাপ, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি: মুরগি চার ভাগে কেটে নিন। চাকু দিয়ে আলতো করে মাংস চিরে নিন। একটি কড়াইয়ে তেল গরম করুন। তাতে মুরগির মাংস দিয়ে হালকা বাদামি করে ভেজে নিন। এবার কড়াইতে পেঁয়াজকুচি দিয়ে ভাজুন। হালকা বাদামি হয়ে এলে একে একে আদাবাটা, রসুনবাটা ও মরিচের গুঁড়া দিয়ে কষিয়ে নিন। এবার গরমমসলা, জায়ফল, জয়ত্রী দিন। তার উপর মাংস ঢালুন। মসলার সঙ্গে মাংস ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন। দুই কাপ পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে ঢেকে রাখুন। পানি কিছুটা শুকিয়ে এলে ঘি দিন। তেল উপরে উঠে এলে চুলা বন্ধ করুন। নামিয়ে পরিবেশন করুন।
খাসির মাংসের রেজালা
উপকরণ: খাসির মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, এলাচি ৪টি, দারুচিনি ৩ টুকরা, লবঙ্গ ৫টি, কাঁচা মরিচ ৩টি, তেজপাতা ৩টি, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, জিরাগুঁড়া দেড় চা-চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া ১/৪ চা-চামচ, তেল ৪ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, গরম পানি পরিমাণমতো।
প্রণালি: কড়াইয়ে তেল গরম করে গরমমসলা ও পেঁয়াজকুচি দিন। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে রসুনবাটা ও আদাবাটা দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। এবার হলুদ-মরিচ-ধনে-জিরাগুঁড়া এবং পরিমাণমতো লবণ দিন। অল্প অল্প পানি যোগ করে মসলা কষিয়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে এবং মসলা তেল ছেড়ে দিলে খাসির মাংস দিন। এ সময় চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিতে হবে। মাংস ঢেকে দিন। অনেক পানি বের হবে। এ পানিতেই মাংস অনেকটা সেদ্ধ হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে, যাতে পাত্রের গায়ে লেগে না যায়। এবার চুলার আঁচ কমিয়ে মাঝারি করুন। আধা ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ধরে মাংস কষিয়ে রান্না করুন। যত সময় নিয়ে কষাবেন, স্বাদ তত বাড়বে। মাংসের পানি পুরোপুরি শুকিয়ে গিয়ে তেল ভেসে উঠলে সামান্য গরম পানি দিন। মাঝে মাঝে নাড়তে হবে। মাংস কষানো হয়ে গেলে পরিমাণমতো গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন। সেদ্ধ হয়ে গ্রেভি ঘন চুলা বন্ধ করে দিন। দুটি কাঁচা মরিচ মাংসের উপর দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। হয়ে গেলে খিচুড়ি, পরোটা কিংবা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।