বিউটি সার্ভিস I কোলাজেন ফেশিয়াল
মানবশরীরে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট প্রোটিন কোলাজেন। এর কাজ নানাবিধ। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখা। অর্থাৎ ইলাস্টিসিটি বজায় রেখে টানটান, ভাঁজহীন ভাব তৈরি। শরীরের কোলাজেন ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রভাব পড়ে ত্বকের ওপর। তৈরি হয় বুড়িয়ে যাওয়া ভাব। দেখায় নিষ্প্রাণ। প্রাকৃতিকভাবেই শরীর কোলাজেনে ভরপুর থাকে। কিন্তু বয়স বাড়তে শুরু করলে এর উৎপাদন কমে যায়। সঙ্গে পরিবেশদূষণের প্রভাব যদি পড়ে, তাহলে তো কথাই নেই। ভাঙতে থাকে কোলাজেন। এ ক্ষেত্রে এটির উৎপাদন আর কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধায়নে হাইএন্ড ট্রিটমেন্ট। সুখবর হচ্ছে, এখন তা-ও যুক্ত হয়েছে সৌন্দর্যকেন্দ্রগুলোর সেবার তালিকায়। করে নেওয়া যাচ্ছে কোলাজেন ফেশিয়াল, যা এর উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক। ক্ষতি সারাতে চমৎকার। বলিরেখা কিংবা সূক্ষ্মরেখা- বুড়িয়ে যাওয়ার যেকোনো চিহ্ন দূর করতে সক্ষম। এ ছাড়া ফেশিয়ালটি জরুরি আর্দ্রতার জোগান দিতেও দারুণ। ফলে কোলাজেন ফেশিয়ালের নিয়মিত সেশন ত্বককে করে তোলে কোমল, দেখায় মসৃণ আর তারুণ্যোজ্জ্বল।
ট্রিটমেন্টের শুরুতেই ক্লায়েন্টকে দেওয়া হয় বিশেষ ম্যাসাজ। গ্লাইডিং, নিডিং আর ফ্রিকশন স্ট্রোকে বিভিন্ন মাত্রার চাপ প্রয়োগ করে চলে রিলাক্সিংয়ে ম্যাসাজের পুরো প্রক্রিয়া, যা মিনিট পাঁচেকের মধ্যে শরীরের ক্লান্তি দূর করে। ফেশিয়ালের জন্যও প্রস্তুত হয় ত্বক। কোলাজেন ফেশিয়ালের মূল প্রক্রিয়া শুরু হয় ত্বক পরিষ্কারের মাধ্যমে। বিশেষ ধরনের থাই ক্লিনজার দিয়ে পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করা হয়। যা গভীর থেকে তেল, ময়লা আর দূষণ দূর করতে সাহায্য করে। এর পরের ধাপ এক্সফোলিয়েশন। কফি ফ্লেবারড স্ক্রাব ব্যবহার করা হয় এ ক্ষেত্রে। এটি রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, মৃতকোষ দূর করে, সারায় দাগছোপ। কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের টক্সিন দূর করতে সক্ষম। ক্লিনজিং আর স্ক্রাবিংয়ের পরপরই ব্ল্যাক হেডস রিমুভিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপগুলোর জন্য প্রস্তুত হয় ত্বক। পরিষ্কার তো হয়ই, ব্যবহৃত অন্যান্য স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট সহজেই প্রবেশ করে ত্বকের গভীরে। তারপর মুখে মাখানো হয় ডিমের সাদা অংশ দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের মাস্ক। এটা ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে। ডিমের প্রোটিন পুষ্টি জোগায়। লোমকূপগুলো সংকুচিত করে। ফলে টানটান দেখায় ত্বক। মিনিট পনেরো পর এই মাস্ক মুখত্বক থেকে তুলে নেওয়া হয়। বিশেষ ধরনের ম্যাসাজ ক্রিম মাখিয়ে দশ মিনিট ম্যাসাজ করা হয়। এটা মুখত্বকের পেশিগুলো রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। বাড়ায় রক্তসঞ্চালন। তারপর আবার মুখে মাখানো হয় মাস্ক। এ ক্ষেত্রে দুই ধরনের অপশন দেওয়া হয় ক্লায়েন্টকে। বানানা মাস্ক অথবা পার্ল কোল্ড মাস্ক। ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। এই মাস্ক মাখিয়ে বিশ মিনিট অপেক্ষার পর ভালো করে ধুয়ে নেওয়া হয়। সবশেষে কোলাজেন সিরাম মাখানো হয় ত্বকে। ২ হাজার ৩০০ টাকা খরচ হতে পারে ফেশিয়ালটির জন্য। বোনাস হিসেবে এর সঙ্গে থাকবে হাত-পায়ের পরিচর্যার সুযোগ। ঘণ্টা দেড়েক সময় হাতে থাকলে যে কেউ করিয়ে নিতে পারবেন অত্যাধুনিক এই ফেশিয়াল।
জাহেরা শিরীন
মডেল: তানজিন তিশা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস