skip to Main Content

ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন I উইন্টার পারিফিকেশন

শীত এলেই বদলে যায় পারির পরিধেয়। টুপি থেকে শুরু করে জুতা পর্যন্ত। শরীরে উষ্ণতা সঞ্চারের প্রয়োজনে সেজে ওঠে সেখানকার সবাই

বলা হয়ে থাকে, প্যারিস বিশ্বের ফ্যাশন ক্যাপিটাল। ১০০ বছর আগে যখন আধুনিক ফ্যাশনের ধারাগুলো বিকশিত হতে থাকে, তখন এখান থেকেই তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। শ্যানেল, জিভাঁশি, ইভ স্য লর‌্যা, জ্য পল গতিয়েরের মতো ফ্যাশন ডিজাইনারদের আবাসভূমি প্যারিসের ফ্যাশন ধারা বিশ্বের অন্য সব দেশের থেকে আলাদা। পারির ফ্যাশন এবং লাইফস্টাইল সবাইকে এত আকর্ষণ করে শুধু এর নিজস্বতার জন্য। গোটা দুনিয়া এখন মেতে আছে সাসটেইনেবল ফ্যাশন নিয়ে। কিন্তু পারিসিয়ানরা অনেক আগে থেকেই এর চর্চা করে। পারিসিয়ান স্টাইলের মূলমন্ত্র হলো, ‘সিম্পল ইজ বেটার, লেস ইজ মোর’। হালকা সাজ, এলোমেলো পোশাক বা খুবই সাধারণ পোশাকেই যে অসাধারণ হওয়া যায়, তা পারিসিয়ানদের না দেখলে বোঝা যাবে না। তাদের রয়েছে শীতের ফ্যাশনের নিজস্ব ধারা, যা কয়েক দশক ধরেই অপরিবর্তনীয়। বিশ্বের ফ্যাশন-সচেতন মানুষ এই শীতের পোশাকেরই অনুসারী। এই ধারা একই সঙ্গে যেমন সিম্পল, তেমনই সাসটেইনেবলও বটে।
পারফেক্ট সোয়েটার
শীতে সব দেশের মানুষই পরে থাকে। পারিসিয়ানদের ওয়্যারড্রোবে এ পোশাক একটি বা দুটি থাকবেই। গোল গলার ঢোলা সোয়েটার আর টার্টল নেক সোয়েটার পারিসিয়ানদের বেশি প্রিয়। কালো, সাদা আর নিউট্রাল। প্রিন্টের ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখতে হয় স্ট্রাইপকে। পারিসিয়ানরা এই প্রিন্টে আচ্ছন্ন।
জিনস
শুধু শীতে নয়, বছরের সব সময় এটি পরা হয়ে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ফ্যাশনে যতই ছেঁড়া বা ঢোলা, ব্যাগি স্টাইলের মামা জিনস আসুক না কেন, পারির নারীরা কখনোই স্কিনি জিনস থেকে সরে আসেনি। ধনী থেকে গরিব—সবারই একটা না একটা ব্লু অথবা ফেড ব্লু জিনস থাকবেই। এই ফ্যাশন সর্বজনীন।
ব্লেজার
প্যারিসের অফিসগুলোয় ঢুঁ মারলে দেখা যাবে, বেশির ভাগ কর্মজীবী নারীর পরনে রয়েছে কোনো মনোক্রম শার্ট বা টি-শার্ট (বেশির ভাগ সময় সেটা হয়ে থাকে সাদা অথবা কালো) আর তার ওপর ফিটেড বা ওভার সাইজ ব্লেজার। ক্যাজুয়াল ব্লেজার পরে অফিসে যেতে বেশি পছন্দ এবং স্বচ্ছন্দবোধ করে পারিসিয়ান মেয়েরা। পোশাকটি মেয়েদের কাছে এলিগ্যান্ট এবং পাওয়ার ওয়্যারড্রোব। সিল্কি শাইনি, টাক্সিডো ডিজাইনের ব্লেজার যেমন পরা হয়, তেমনি হালকা ফেডেড কালারের ব্লেজারের চাহিদাও অনেক। বেশির ভাগ সময় জিনসের উপর পেয়ার করে পরতে দেখা যায়। রেডিমেডের চেয়ে ভালো কাপড়ের টেইলরিং ব্লেজারের চাহিদা বেশি। অনেক ফরাসি সেলিব্রিটিকে দেখা যায় রেড কার্পেটে এই পোশাক পরে আসতে। তাহলে বোঝা যাচ্ছে এই পোশাক সবার কতটা পছন্দের।
বড় স্কার্ফ
একটি সাধারণ লুককে নিমেষেই আকর্ষণীয় করতে কালারফুল স্কার্ফের জুড়ি মেলা ভার। গরমের দিনে নরম সুতি স্কার্ফ আর শীতের দিনে উলের স্কার্ফ যেকোনো পোশাকের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যায়।
লেদার জ্যাকেট
কিছু পারিসিয়ানের ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট খুবই পছন্দের একটি পরিধেয়। শীতের সময় অন্যান্য পোশাকের সঙ্গে ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট পরতে দেখা যায়। তবে যেসব পারিসিয়ান ফ্যাশনের দিক থেকে বোল্ড, তারাই এটি বেশি পরেন।
ট্রেঞ্চ কোট
খুব শীতে এটি পারিসিয়ানদের বেস্ট ফ্রেন্ড! সোয়েটার, ব্লেজারে যখন শীত মানায় না, তখন এসবের উপর ট্রেঞ্চ কোট চাপিয়ে নিলেই হয়। বেশি ফ্যাশন-সচেতনেরা ফারের ট্রেঞ্চ কোট পরে থাকেন। রঙের ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখতে হয় ক্যামেল এবং অলিভ কালার। এ ছাড়া বাদামি, কালো, সাদা তো আছেই। এগুলো সব রঙের পোশাকের সঙ্গেই ভালো মানিয়ে যায়।
স্নিকার ও বুট
এই দু ধরনের জুতা ছাড়া অন্য কোনো জুতা শীতের সময় পারিসিয়ানদের পরতে দেখা যায় না। স্নিকারের রঙ হতে হবে ক্ল্যাসিক সাদা বা কালো এবং বুটের ক্ষেত্রে কালো আর বাদামি।
টুপি
বেরেট ফরাসিদের প্রিয় টুপি। সব সিজনেই সব পোশাকের সঙ্গে মানানসই। তবে শীতে পারিসিয়ানরা এটি পরবেই। হাতে বোনা উলের বিভিন্ন ডিজাইনের বেরেট তাদের শীতের ফ্যাশনে অন্য মাত্রা এনে দেয়।
পারিসিয়ানরা শীতের পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবার আগে যে জিনিসটি গুরুত্ব দেয়, তা হলো কোয়ালিটি। ভালো কোয়ালিটির একটি পোশাক বছরের পর বছর ধরে পরে। এতে তারা কখনোই একঘেয়ে বোধ করে না। একটি নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম স্টাইল প্রত্যেক ফ্যাশন-সচেতন পারিসিয়ান নারীর আছে। বছরের পর বছর হাজারো ট্রেন্ড আসে-যায়, তবু তাদের স্টাইলের কোনো পরিবর্তন হয় না।

 ফাহমিদা শিকদার
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top