ফরহিম I পানে বিপন্ন ত্বক
সপ্তাহান্তের উইন্টার পার্টিতে পানের যোগ থাকেই। আনন্দদায়ক হলেও ত্বকে এর প্রভাব সুখকর নয়। কিন্তু কেমন করে সামলাতে হবে?
কর্মময় সপ্তাহের শেষ দিনে সূর্যাস্তের পর সবাই মিলে খানিকটা ফুর্তি করা বর্তমানে ট্রেন্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া বন্ধুদের ব্যাচেলর পার্টি কিংবা থার্টি ফার্স্ট নাইট— সব উদ্যাপনেই একটা সাধারণ উপকরণ অ্যালকোহল। কিন্তু কিছুদিন পরপর এটি গ্রহণের প্রভাব পড়ে ত্বকেও। তা কমিয়ে আনতে বিশেষ যত্ন দরকার।
অ্যালকোহল ত্বক শুষ্ক করে তোলে। ত্বকের ক্যাপিলারিগুলোর প্রসার ঘটায়, যা ব্রেকআউটের কারণ। এমনকি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডিফেন্স ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে। এরই জের থেকে রোদ কিংবা দূষণে তুলনামূলক বেশি ক্ষতি হতে পারে। তাই এই হ্যাংওভার ত্বককে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ডার্মাটোলজিস্টরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রেপ ইওর স্কিন
যেহেতু প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকারই শ্রেয়, তাই অবশ্যই নিজের ত্বককে আগে থেকেই তৈরি রাখা চাই আসন্ন পার্টির জন্য। শুরু করতে হবে ক্লিনজিং থেকে। কারণ, পরিচ্ছন্নতাই স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের ভিত্তি। তাই যেকোনো ভালো ব্র্যান্ডের ক্লিনজিং জেল দিয়ে শুরুতেই ত্বক খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর এক্সফোলিয়েশনের মাধ্যমে ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে হবে। দুই স্তরে ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে হবে। মানে ফেশিয়াল অয়েলের পর একটা ভালো ময়শ্চারাইজার। যা চেহারায় আর্দ্রতা ধরে রাখবে সারা রাত। এরপর মেখে নেওয়া চাই প্রাইমার, সেটা মেকআপ ব্যবহার করা হোক বা না হোক। কারণ, প্রাইমার ত্বকের ত্রুটিগুলো দৃষ্টিকটু হওয়া থেকে রক্ষা করে আর হাইড্রেশন ধরে রাখতেও ভূমিকা রাখে।
ওয়াটার ওয়ান্ডার
প্রতি পেগ অ্যালকোহলের সঙ্গে এক গ্লাস পানি পান করে নিলে ত্বকে এর প্রভাব আগে থেকেই কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া ট্রিকটির মাধ্যমে বিশেষ পানীয়ের পরিমিতি রক্ষা করা যায় সহজেই।
বিফোর বেড
পার্টি শেষে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ১ থেকে ২ গ্লাস পানি পান করতে হবে, যা ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে সহায়তা করবে। একটা ভিটামিন সি ক্যাপসুল খেয়ে নেওয়া যেতে পারে, যা ঘুমের মাঝেই শরীরের টক্সিন বের করে নিতে সাহায্য করবে। পরদিন ত্বকের নিষ্প্রাণ ভাব দূর করার স্কিন হাইড্রেটিং স্প্রে ব্যবহার করা যায়। এর কার্যকারিতা মুখত্বকের জন্য পানি পানের মতোই। খেয়াল রাখতে হবে, এগুলো যেন পর্যাপ্ত হায়ালুরনিক এসিড ও প্যান্থেনল থাকে। যেহেতু পার্টির রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে মধ্যরাতই হয়ে যায়, তাই প্রয়োজন এমন কোনো ক্রিম, যা খুব অল্প সময়েই ত্বককে আগের মতো স্বাভাবিক করে তুলবে। ফিরিয়ে দেবে হারানো কোমলতা ও উজ্জ্বলতা।
আফটার দ্য নাইট
ঘুম ভাঙার পরপরই দুই গ্লাস পানি পান করতে হবে। এর ফলে শরীরের টক্সিন নিঃসৃত হবে। এমন সকালে স্বাস্থ্যকর নাশতা করে নেওয়াই ভালো, যেমন এক বোল সিরিয়াল কিংবা ফ্রুট স্যালাড। মুখে ১০ মিনিটের জন্য একটা ফেস মাস্ক লাগিয়ে রাখা যেতে পারে, যা ত্বকের র্যাডিক্যাল দূর করতে সাহায্য করবে। এ রকম সকালে ফেসের চেয়েও বেশি অবসন্ন দেখায় চোখ আর তার চারপাশ। তাই একটা ভালো ব্র্যান্ডের কুলিং জেল ক্রিম আঙুলে মাখিয়ে তা চোখের চারপাশে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এতে পুরো চেহারার ক্লান্তি অর্ধেকে নেমে আসবে।
যারা ঘন ঘন পার্টিতে যান, প্রতিবারে দু পেগের বেশি গ্রহণ তাদের জন্য অনিরাপদ। কারণ, একটা সময় চেহারায় এমন প্রভাব পড়ে যেতে পারে, যা অনেক যত্নেও আগের মতো হবে না।
শিরীন অন্যা
মডেল: সাজিব
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ওয়্যারড্রোব: জুরহেম
ছবি: ক্যানভাস