ই-শপ I সুগারি গিফট বেকারি
আপনজনদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান উপহার আমাদের সময়। কিন্তু ব্যস্ত এই শহরে তাদের জন্য সময় বের করাটাই দুষ্কর। তাই বিশেষ দিনে, কিংবা অকারণেই নিজেদের প্রিয় মানুষকে দেওয়ার জন্য নানা ধরনের উপহার খুঁজে বেড়াই। চাই, তা ব্যতিক্রমী উপস্থাপনে হয়ে থাকুক। এই আকাঙ্ক্ষা মেটানোর ওয়ান স্টপ সলিউশন ‘সুগারি গিফট বেকারি’।
২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে এই ই-শপ। শুরুর গল্পটা জানতে চাইলে কর্ণধার তানভীর হাসান বলেন, ‘প্রতিদিনের ব্যস্ততায় ভালোবাসার মানুষদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি, অনুভূতিগুলো প্রকাশ করা হয় না বিভিন্ন কারণে। সেসবকে অর্থপূর্ণ করতে তৈরি করেছি কাস্টমাইজড গিফট কিউরেটিং সার্ভিস। ব্যক্তিগতভাবে সুন্দর কিছু করার ইচ্ছা নিয়েই এই প্রয়াস।’
সুগারিতে অর্ডার করতে তিনটি বিষয় তাদের জানাতে হবে। তা হলো, প্রত্যাশিত তারিখ, প্রাপকের ফোন নম্বর, আর জেন্ডার। তবে অর্ডার দিতে হবে অবশ্যই ১০ থেকে ১৫ দিন আগে। প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে তাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা ওয়েবসাইটে ম্যাসেজ দিলেই সেই অনুযায়ী ৭-১০ দিন আগে ছেলেদের গিফট কিউরেশনের জন্য ছেলে ক্রাফটিং এক্সপার্ট এবং মেয়েদের গিফট কিউরেশনের জন্য মেয়ে ক্রাফটিং এক্সপার্ট প্রেরককে ফোন করবে। যার জন্য গিফট বক্স তৈরি হচ্ছে, তার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছু তথ্য দিলে সুগারি টিম সেভাবে মানানসই গিফটের ধারণা দেবে এবং প্রেরকের মতামত নিয়ে কিনে নেবে।
উপহারটি কেমন হতে পারে, ভেবে রাখলে সেটাও জানাতে হয়। এ ছাড়া শপটির নিজস্ব ইলাস্ট্রেশনিস্ট ও ডিজাইনারের মাধ্যমে যেকোনো লেখা, নোট, লেটার বা গ্রিটিং কার্ড কাস্টম ডিজাইন করে বক্সে অ্যাড করা যায়। সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত ছবি পোলারয়েড, থ্রিআর সাইজ বা কোলাজ করেও সংযুক্ত করা যেতে পারে। সুগারি গিফট বেকারির পেজ লিঙ্ক: https://www.facebook.com/sugary.xoxo/ এবং ইনস্টাগ্রাম লিঙ্ক: https://www.instagram.com/sugary.giftstudio/ ই-শপটি কোনো নির্দিষ্ট পণ্য অথবা শুধু গিফট বক্স বিক্রি করে না। গিফট বক্সের জন্য যেসব আইটেম পছন্দ হবে, সেগুলো সংগ্রহের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানটির। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে আনার ব্যবস্থাও রয়েছে। রেগুলার ও প্রিমিয়াম নামে দুটি প্যাকেজ রয়েছে। রেগুলারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকেই অর্ডার করা হলে কমপক্ষে ৪০০০ টাকার এবং দেশের বাইরে থেকে করলে কমপক্ষে ৫০ ডলারের বাজেট থাকতে হবে। আর প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ১০ হাজার টাকা অথবা ১২০ ডলার।
সুগারির সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, তাদের প্রডাক্টের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। ব্র্যান্ডেড পারফিউম থেকে শুরু করে সিনেপ্লেক্স মুভি টিকিট কিংবা নেটফ্লিক্স সাবস্ক্রিপশন— যেকোনো কিছু গিফট করা যায়। গিফট বক্স তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজিং ব্যবহৃত হয়— ম্যাট ব্ল্যাক কার্ডবোর্ড বক্স, উডেন কিংবা কাস্টম পিভিসি। র্যাপিংয়ে ইম্পর্টেড চার্মিউস সিল্ক, মেম টিস্যু কটন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর সঙ্গে দেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের ফ্রেগরেন্স, যা বক্স খোলার পর অন্য রকম অনুভূতি তৈরি করে।
ই-শপ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তানভীর বলেন, ‘আমরা কাস্টমারদের জন্য একটি অর্ডারিং স্পেস তৈরি করতে চাই, যেখানে সরাসরি এসে তাদের গিফট নিয়ে ক্যাজুয়ালি আলোচনা করতে পারবেন এবং কাস্টমারদের আমাদের হাতের তৈরি কফি অফার করতে পারব। এ ছাড়া বড় স্টুডিও নিয়ে ক্রিয়েটিভ টিম আরও বড় করতে চাই, যাতে আরও বেশি মানুষকে সেবা দিতে পারি।’
সামাজিকভাবেও খুব এগিয়ে এই ই-শপ। ব্যবহৃত সব ম্যাটেরিয়াল পরিবেশবান্ধব। এ ছাড়া হিউম্যানলি ওয়ার্ল্ড প্রজেক্ট নামে একটি চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একটি কাস্টমাইজড গিফট বক্স সেল হলে একজন সুবিধাবঞ্চিত শিশুও গিফট পায়। প্রতি তিন মাসে একবার গিফটগুলো বিতরণ করা হয়। এমন শিশুদের জন্য, যারা কখনো উপহার পায়নি।
শিরীন অন্যা
ছবি: সুগারি গিফট বেকারি