পোর্টফোলিও I জেন নেক্সট লাইন
জেড জেনারেশনের পাঁচ ডিজাইনার। গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ফ্যাশন লেবেল। বিচিত্র তাদের কাজ, একদম আউট অব দ্য বক্স। টার্গেট- আধুনিক ও সমকালীন মননের মানুষ। যারা পরীক্ষাপ্রাণিত পোশাকেও দারুণ উৎসাহী। ডিজাইনারদের প্রত্যেকেরই চেষ্টা হাইস্ট্রিট আর হাইএন্ড ব্র্যান্ডের ভেদরেখাটা মুছে ফেলা। প্রয়াস একই সঙ্গে বাজেট শপার আর বিলাসী ক্রেতা— দু দলকেই তুষ্ট করা। শীর্ষে উঠে আসা। ক্রেতা থেকে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি— সর্বত্র এদের জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজেছেন জাহেরা শিরীন। সঙ্গে তাদের তৈরি সেরা আউটফিট নিয়ে এই পোর্টফোলিও
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন
এরর
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করা সজল রহমানের ড্রিম প্রজেক্ট ‘এরর’। বরাবরই আগ্রহী ছিলেন গার্মেন্টস ডিজাইনিংয়ে। পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যেই ২০১১ তে শুরু করেন নিজস্ব লেবেল। সঙ্গে ছিলেন নুসরাত রাহা এবং অভি খাদেম। প্রচলিত ডিজাইন প্যাটার্নকে ভেঙে ট্রেন্ডি পোশাক তৈরি ছিল এররের লক্ষ্য। মূলত টিনএজ আরবান কাস্টমারদের জন্য। পপ, রিকশা প্রিন্ট, সাবকন্টিনেন্ট প্যাটার্ন- আর্টের এই ফর্মগুলোকে প্রিন্ট আর এমব্রয়ডারির মাধ্যমে টি-শার্ট, টপ আর ডেনিমে ফুটিয়ে তোলে এরর। পরিকল্পনা আছে শুধু ডেনিম দিয়ে একটি সাব ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার। এ ছাড়া কাজ করতে চান প্রিন্টেড ফ্যাব্রিকের ইস্টার্ন আর ওয়েস্টার্ন ফিউশন নিয়ে। মূলত, পরিপূর্ণ একটি লাইফস্টাইল বেসড ই-কমার্স ব্র্র্যান্ড হিসেবে সজল প্রতিষ্ঠিত করতে চান এররকে।
সানশাইন ইয়েলো প্লেইড প্রিন্টের টার্টল নেক টপ
মডেল: মানসী
পিঙ্ক লং টপে স্টাইলিশ টাইড আপ ডিজাইন
মডেল: বর্ণ
রুলমেকার শার্টস
রনি ইমরানের প্রফেশনাল ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল ফ্যাশন মডেলিং দিয়ে। দীর্ঘ পাঁচ বছর কাজ করেছেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘গ্রে ঢাকা’ এবং ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘এক্সট্যাসি’র সঙ্গে। এত বছরের অভিজ্ঞতা, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফ্যাশনের প্রতি ভালোবাসা আর নিজে কিছু করার উদ্যম। ‘রুলমেকার শার্টস’-এর শুরু এভাবেই। ছোট একটা ফ্যাক্টরি দিয়ে। বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন কাস্টম মেড ক্লোদিং শপ এটি। শার্ট কাস্টমাইজেশনের পাশাপাশি ব্র্যান্ডটি টেইলর সার্ভিসও দিয়ে থাকে। তবে শুধু ঢাকায়। এ ছাড়া ব্র্যান্ডটির ই-কমার্স সাইটে মিলবে মৌসুম এবং উপলক্ষভিত্তিক কালেকশন। প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা আছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারিতে পৌঁছাবার, বেস্ট শার্ট ব্র্যান্ড হিসেবে।
ব্ল্যাক মিলিটারি জ্যাকেট
মডেল: দাউদ
ব্রাউন লং ওভার জ্যাকেট
মডেল: নাজিয়া
রেড লং ওভার জ্যাকেট
মডেল: সূর্য
ব্রোক্
২০১৯ এ যাত্রা শুরু করে মাহেনাজ চৌধুরী জেন্ডার ফ্লুয়িড, বেসপোক সার্কুলার ফ্যাশন লেবেল ব্রোক। মূলত আগে থেকেই সংগ্রহে থাকা পুরানো পোশাককে আপ সাইকেল করে ব্র্যান্ডটি তৈরি করে তাদের বেশির ভাগ ফ্যাশন লাইন। তাতে প্রাণময়তা যোগ করে রেট্রো থেকে ভিনটেজ ডিজাইনের অনুপ্রেরণা। এছাড়াও সাহসী শিলুয়েট, কাট, প্যাটার্ন, প্রিন্ট আর মোটিফে প্রাধান্য পায় আধুনিক আর্ট এবং ক্রাফট। মূলত এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এবং ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করা মাহেনাজ সব সময়ই চেষ্টা করেছেন সেকেন্ড হ্যান্ড কাপড় থেকে সাস্টেইনেবল এমন পোশাক তৈরির যা পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমায়, চলেও বেশি দিন। তারই প্রতিফলন এ ব্র্যান্ডটি। ‘হোয়াই ওয়েস্ট হোয়েন উই ক্যান ক্রিয়েট’ এই মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্রোক্ স্লো ফ্যাশন অনুশীলনের মাধ্যমেই প্রভাবিত করতে চায় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিকে। প্রতিষ্ঠিত হতে চায় আপন আলোয়।
গোল্ডেন এবং টিলের সমন্বয়ে কাতান সিল্ক ও পশমিনা শাল থেকে তৈরি জেন্ডার নিউট্রাল ব্লেজার এবং ফরমাল ট্রাউজার
মডেল: বর্ণ
ভিনটেজ ডিজাইনের প্লিটেড শার্ট। সঙ্গে সাসপেন্ডার দেওয়া হাই ওয়েস্টেড স্কার্ট। লেয়ার করা হয়েছে জেন্ডার নিউট্রাল সিঙ্গেল ব্রেস্ট ব্লেজারে
মডেল: মানসী
গরুর ঘাস
‘পোস্টার থেকে পোশাকে’— গল্পের শুরুটা এমনই। হাই স্কুলের পড়ার সময় নাহিয়ান নাসের বন্ধুদের সঙ্গে শুরু করেন অনলাইন পেজ ‘গরুর ঘাস’। ওয়াল পোস্টার থাকতো এতে। পরবর্তীকালে কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ হয়ে গেলেও, স্বপ্ন বোনা শেষ হয়নি নাহিয়ানের। সেই সূত্রে ২০১৭ সালে পোশাক নিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে পেজটি। অনলাইন ক্লদিং কোম্পানি হিসেবে। নাহিয়ানের সঙ্গে যুক্ত হন ফাহিম ইসলাম আর আলি সাফি। আড়ম্বরহীন তবে অভিজাত, ভার্সেটাইল এবং শিক পোশাক তৈরি করে ‘গরুর ঘাস’। টার্গেট তরুণ তুর্কীরাই। টি-শার্ট, জ্যাকেট, শার্ট, কিমোনো, র্যাপ আপ টপ, বিভিন্ন ডিজাইনের বটম আর অ্যাকসেসরিজসহ ব্র্যান্ডটির কালেকশনে মিলবে আরও অনেক ধরনের স্টাইলিশ অপশন। ‘কোয়ালিটি এন্ড এফোর্ডিবিলিটি’ এ দুটোই নিশ্চিত করে থাকে গরুর ঘাস। আর এসবের বদৌলতে প্রতিষ্ঠিত যেকোনো ব্র্যান্ডকে টক্কর দিতে প্রস্তুত।
রিগ্যাল সিল্ক ব্লাউজ। সঙ্গে মানানসই কর্ডুরয় পিঙ্ক জ্যাকেট
মডেল: সূর্য
স্প্যান্ডেক্স ব্রোকোলি টার্টলনেক। এর উপর স্লাব কটনের বাটন ডাউন শার্ট। স্কুবি ব্রাউন কর্ডুরয় জ্যাকেটে স্টাইলিশ উইন্টার লুক
মডেল: রেহান
রিগ্যাল সিল্ক ব্লাউজ। লেয়ার করা হয়েছে বার্গেন্ডি কর্ডুরয় জ্যাকেট দিয়ে
মডেল: নাজিয়া
স্টুডিও এমএম
ইনস্টাগ্রাম ব্লগ ‘মিনিমালমুদাসসির’ থেকে ‘স্টুডিও এমএম’। মুদাসসির আহমেদের যাত্রা দীর্ঘ তিন বছরের। শুরু নিজের ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে। শখের বশেই যেখানে পার্সোনাল স্টাইল শোকেশ করার জন্য ছবি পোস্ট করতেন তিনি। একসময় ব্র্যান্ডগুলোর নজরে পড়ে যান। তাদের পোশাক পাবলিসিটি করার সঙ্গে সঙ্গে মাসখানেক পরেই ব্যক্তিগত পেজকে ইনস্টাগ্রাম ব্লগে রূপান্তর করেন মুদাসসির। হয়ে ওঠেন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির তরুণ ইনফ্লুয়েন্সার। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর মডেলও। তবে এ সেক্টরে কাজ শুরুর প্রথম দিন থেকেই ইচ্ছা ছিল নিজে কিছু করার। একটা লম্বা সময় অভিজ্ঞতা অর্জনের পর প্যাশনটা যেন মাথা চাড়া দেয়। শুরু হয় ‘স্টুডিও এমএম’-এর যাত্রা। মূলত তরুণদের ইয়ুথফুল স্পিরিট উদযাপনের প্রয়াস ব্র্যান্ডটির, পোশাকের মাধ্যমে। বর্তমানে তিনটি কালেকশন রয়েছে এর। প্রথমটি জনপ্রিয় নেটফ্লিক্স শো ‘মানি হেইস্ট’ অনুপ্রাণিত। বাকি দুটি ডেনিম আর জার্সি কালেকশন। ইনস্টাগ্রাম ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত স্টুডিও এমএম একসময় পরিণত হবে পরিপূর্ণ ফ্যাশন স্টুডিওতে— ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এমনটাই।
লিমিটেড এডিশন অল হোয়াইট কালেকশনের জ্যাকেট এবং ট্রাউজার
মডেল: দাউদ
লিমিটেড এডিশন ডেনিম জ্যাকেট। সঙ্গে মানানসই হাইওয়েস্টেড ডেনিম প্যান্ট
মডেল: মানসী
সাইড লেবেল ডেনিম জ্যাকেট
মডেল: রেহান