skip to Main Content

ই-শপ I খাদি

বাঙালি পোশাক-ঐতিহ্যের প্রাচীন এক উপাদান খাদি। স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গেও এর সম্পর্ক ছিল ওতপ্রোত। ১৯২০ সালের দিকে ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ কর্মসূচির একটি অংশ হয়ে উঠেছিল এই কাপড়। তারই রেশ ধরে গড়ে উঠেছে ই-শপ ‘খাদি : দ্য ফ্যাব্রিক অব ফ্রিডম’।
খাদি কাপড় নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই ছিল এই ই-শপের কর্ণধার ফাতেমা তুজ জোহরা নুভিয়ার। স্থাপত্যে স্নাতক সম্পন্ন করে দুই বছর চাকরির পর এই ইচ্ছাপূরণে মনোনিবেশ করেন। ২০১৮-এর শেষের দিকে কাজ শুরু করেন খাদি কাপড় নিয়ে। এর ছিল দুটি কারণ। প্রথমত, ঐতিহ্যের প্রতি টান, দ্বিতীয়ত ফ্যাব্রিকটি পরিবেশবান্ধব এবং আরামদায়ক। বর্তমানে এই ই-শপে মেয়েদের পোশাকের প্রাধান্যই বেশি। কুর্তি, সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি এগুলোর ওপর বিভিন্ন প্রাকৃতিক নকশা যেমন গাছের ডাল, ঝরাপাতা, ফুল ইত্যাদি মোটিফে ব্লক, হ্যান্ডপেইন্ট ও স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করে ভার্চ্যুয়াল এ প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ওয়ার্লি আর্ট, মাধুবানী আর্ট, চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের ছবি, সিন্ধু সভ্যতা, অরিগ্যামি, বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা, জামদানি মোটিফ ইত্যাদি কনসেপ্ট নিয়েও প্রচুর কাজ হয়েছে এখানে। ছেলেদের পোশাক নিয়ে ই-শপটির কাজ সীমিত। প্রধানত খাদি পাঞ্জাবি ও ক্যাজুয়াল শার্টই তৈরি করা হয়েছে। এসবে রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের কাঠের ব্লক আর সুই-সুতার হাতের কাজের ছোঁয়া। তবে ঘরবাড়ি সজ্জার কিছু জিনিসপত্র নিয়েও প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা আছে। এ ব্যাপারে নুভিয়া বলেন, ‘স্বপ্ন দেখি এমন একটি আউটলেট হবে, যেখানে খাদির পোশাক প্রদর্শনীর পাশাপাশি থাকবে একটি বুক ক্যাফে। মানুষ যেখানে আড্ডা দিতে দিতে পোশাক দেখতে পারবেন, খাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। অথবা চা খেতে খেতে বই পড়তে পারবেন।’
সর্বস্তরের মানুষ যেন কিনতে পারে, সে ভাবনা নিয়েই পোশাকের দাম নির্ধারণ করা হয় এখানে। পাওয়ারলুম কাপড়ের চেয়ে হ্যান্ডলুম কাপড়ের দাম বরাবরই বেশি। তবু এর দাম সহনীয় রাখা হয়েছে বাড়তি মুনাফার কথা না ভেবেই। প্রডাক্ট এবং ডিজাইনভেদে সাধারণত ৬০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যেই এই ই-শপের পোশাকের মূল্য সীমাবদ্ধ। খাদি আনা হয় কুমিল্লা থেকে। এ ছাড়া তাঁতে বোনা শাড়ি ও আরামদায়ক সুতি কাপড়ও রয়েছে হাউসটির কালেকশনে। ২০১৮-এর শেষ থেকে খাদি আজ একটু একটু করে এই পর্যন্ত এসেছে, সেই সব মানুষের ভালোবাসায় যারা সম্মান রক্ষা করে চলেছেন খাদির পণ্য কিনে দেশীয় শিল্পের—এমনটাই মনে করেন নুভিয়া। তিনি বলেন, ‘ক্লায়েন্টরা কী করে পরিবারের মতো আপনজন হয়ে যান, তা জেনেছি এই খাদি নিয়ে কাজ করতে এসে।’ এই অল্প সময়েই পেজটির ফলোয়ারের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ফেসবুকে তাদের পাওয়া যাবে এই ঠিকানায় : https://www.facebook.com/khaadi.bd/

 শিরীন অন্যা
ছবি: খাদি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top