skip to Main Content

ই-শপ I টুটু’স

সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে খাবার সংগ্রহেরও সুযোগ এনে দিয়েছে। কোন খাবারটা আসলেই ভালো, সুস্বাদু এবং ভেজালমুক্ত, তা-ও জেনে নেওয়া এর বদৌলতে সহজ হয়েছে। হয়তো এ কারণেই বর্তমান যুগে মানুষ বিভিন্ন ধরনের খাবার চেখে দেখতে কোনো কার্পণ্য করে না। স্বাদের কারণে ডেইরি প্রডাক্টের মধ্যে পনির কিংবা চিজ এই তালিকায় বেশ ওপরে। আর পনিরের উন্নত সংস্করণ নিয়েই গড়ে উঠেছে ই-শপ ‘টুটু’স আর্টিসান চিজ’
আমাদের দেশের বিভিন্ন সুপারশপের শেলফে যে ফ্যান্সি চিজের প্যাকেটগুলো দেখা যায়, তা নিঃসন্দেহে সুস্বাদু, তবে গোড়ার কথা ভাবলে সেসব খুবই নগণ্য। গল্পটা একজন চিজ লাভারের। এ এম সাদুল্লাহ; যিনি বেন্টউড সলিড হার্ডউড ফ্লোরিং অ্যান্ড ফার্নিচারের সিইও। পরিবার-পরিজন এবং বন্ধুদের কাছে পরিচিত টুটু সাদ নামে। পনিরের প্রতি ভালোবাসা থেকেই সেটি তৈরির প্রক্রিয়া রপ্ত করেন তিনি। এটি তার শখও বটে। যদিও এক দিনে এমনটি হয়নি। তিন বছর ধরে তিনি বিভিন্ন ধরনের পনির তৈরি করছেন। তিনি বলেন, ১৯৬৮ সালে যখন বিমানবাহিনীর একজন পাইলট ছিলেন, কাজের সুবাদে যান পাকিস্তানের প্রত্যন্ত সোওয়াট ভ্যালিতে। সেখানকার আদিবাসীরা তাকে একটা দই দিয়ে বানানো পানীয় খাওয়ান, যার নাম ছিল ‘দিল-তার’। এটা দুধ দিয়ে তৈরি হতো। সেই দুধ তারা সংরক্ষণ করতেন পাহাড়ি ছাগলের পেটের থলি শুকিয়ে তৈরি একধরনের ব্যাগে। এই পানীয়র চিজি স্বাদ তার মনে দাগ কাটে।
বহু বছর পেরিয়ে, সময়, পেশা কিংবা কাজের পরিবর্তনে একপর্যায়ে নিজের চিজমেকিংয়ের শখ পূরণে কাজ শুরু করেন তিনি। টুটু বলেন, ‘যখন দেখলাম আমার তৈরি চিজ বন্ধুমহলের সবাই টেস্ট করার পর বারবার চাচ্ছেন, তখনই ভাবলাম আরও বেশি পরিমাণে চিজ তৈরি করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা।’ আর সেই ভাবনা থেকেই ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে ‘টুটু’স আর্টিসান চিজ’। পেজটির লিঙ্ক: https://www.facebook.com/cheesytutu/ চিজের অর্ডার নেওয়ার জন্য তিনি একটি ভিন্ন ফেসবুক পেজ ব্যবহার করেন, যার লিঙ্ক: https://www.facebook.com/ordertaking/
একজন সফল আর্টিসান চিজমেকার হতে এর স্বাদ ও গুণ সম্পর্কে যেই বিচক্ষণতা প্রয়োজন, তার সবটাই আছে টুটুর মধ্যে। বেশ কয়েক ধরনের ইউরোপীয় হার্ড অ্যান্ড সফট চিজ তৈরি করতে করতে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলছেন প্রতিনিয়ত। দুধের প্রোটিন জমাট বাঁধাতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের এনজাইম ও ব্যাকটেরিয়া জাতীয় উপাদান তিনি সংগ্রহ করেন যুক্তরাজ্য থেকে। কারণ, এর অনেক কিছুই দেশে পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে টুটু বলেন, ‘উপাদান হিসেবে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ সঠিক না হলে অথবা তাপমাত্রার একটু হেরফের হলে কিংবা যেকোনো ধাপেই সচেতনতার অভাবে দুধের বিপুল অপচয় ঘটতে পারে। তাই পুরো প্রক্রিয়াতেই খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।’
তিনি শুধু অর্ডারই নেন না, বিভিন্ন ধরনের চিজ পরিবেশনের সুচিন্তিত পরামর্শও দিয়ে থাকেন। ঢাকার প্রথম আর্টিসান চিজমেকার হিসেবে তিনি চান তার মতো চিজ লাভারদের কাছে এই প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে। তাই তিনি এর ওপর ওয়ার্কশপ নেওয়ারও পরিকল্পনা করছেন।

 শিরীন অন্যা
ছবি: টুটু’স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top