skip to Main Content

রূপরসদ I পাম্পকিন

 

ত্বকের সুস্থতায় এর গুণপনার শেষ নেই। ফলে সৌন্দর্যসামগ্রীতে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে বেশ আগে থেকেই

মিষ্টিকুমড়া আমাদের দেশে সবজি হিসেবে জনপ্রিয় হলেও পাশ্চাত্যে এটি উপাদেয় ডেজার্টেরই উপাদান। পুষ্টিবিদদের মতে এটি একটি সুপারফুড। দৃষ্টিশক্তির জন্য উপকারী। কিন্তু এর রয়েছে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জাদুকরি ক্ষমতা। যাদের মিষ্টিকুমড়ায় অ্যালার্জি আছে, তাদের ছাড়া সব ধরনের ত্বকের জন্যই এটি খুব ভালো স্কিন কেয়ার ইনগ্রেডিয়েন্ট। তবে শুষ্ক ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটু বেশি উপকারী।
মিষ্টিকুমড়ার উৎপত্তিস্থল উত্তর আমেরিকা হলেও সারা বিশ্বে এর চাষ হয়। কিউকারবিটেইসি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এর পাতা, ফুল, বীজ- সবই খাওয়া যায়। ত্বক পরিচর্যার পণ্যে মিষ্টিকুমড়ার ব্যবহার হচ্ছে। এর বীজ থেকে তৈরি তেল বেশ জনপ্রিয়। এটির পাল্প দিয়ে অনেক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট বানানো হচ্ছে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ব্রণের সমস্যা রোধ আর বুড়িয়ে যাওয়া কমাতে এটি খুব ভালো উপাদান। এ ছাড়া হাইড্রেটর ও এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কার্যকর।
মিষ্টিকুমড়ায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই এবং চার রকমের ভিটামিন বি। এগুলো হলো নায়াসিন, রিবোফ্লাভিন, বি সিক্স এবং ফোলেট। আরও আছে জিঙ্ক, নানা ধরনের উপকারী ফ্যাটি এসিড। রয়েছে আলফা ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন আর ক্যারোটেনয়েডস। এই উপাদানগুলোর জন্যই মিষ্টিকুমড়া দেখতে উজ্জ্বল কমলা রঙের। এ ছাড়া রয়েছে ফ্রুট এনজাইমস, আলফা হাইড্রক্সি এসিডস এবং অবশ্যই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এর বীজেও রয়েছে ভিটামিন ই, ফ্যাটি এসিড আর জিঙ্ক।
মিষ্টিকুমড়ায় থাকা ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন ত্বকের ইউভি ও ফ্রি র‌্যাডিকেল ড্যামেজ রিপেয়ারে একসঙ্গে কাজ করে। এ দুটি ত্বকের রিঙ্কেল এবং ক্যানসারের জন্য দায়ী। ভিটামিন এ, সি আর বিটা ক্যারোটিন ত্বককে মসৃণ ও নরম করার পাশাপাশি কোলাজেন বুস্ট করে এজিং সাইন যেমন রিঙ্কেলস, ফাইন লাইনস এবং ডার্ক স্পটস প্রতিরোধ করে। এতে থাকা ফ্রুট এনজাইমস আর আলফা হাইড্রক্সি এসিডও ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে। নতুন কোষ তৈরিতেও সাহায্য করে। মিষ্টিকুমড়া কিন্তু ব্রণের প্রতিকারক। জিঙ্ক এবং ভিটামিন বিগুলো ব্রণের যম। নায়াসিন আর ফোলেট ত্বকের রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এটি রক্তসঞ্চালনের জন্য ভালো, তাই ব্রণ সেরে ওঠে সহজে। জিঙ্ক ত্বকের হরমোন লেভেল এবং অয়েল প্রোডাকশন নিয়ন্ত্রণ করে। আর ভিটামিন এ ব্রণের দাগ কমায়। অতিরিক্ত সিবামের জন্য ব্রণের সমস্যা হয়ে থাকে। এই তেলের উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে কুমড়ার বীজে থাকা ভিটামিন ই আর ফ্যাটি এসিডগুলো। আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক আর সেই সঙ্গে ব্রণের সমস্যা থাকে, তাহলে অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন মিষ্টিকুমড়ার বীজে সমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট, বিশেষ করে পাম্পকিন সিড অয়েল। এই তেল একদম ননস্টিকি। মিষ্টিকুমড়ায় ভরপুর বিটা ক্যারোটিন ত্বকের অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে যথেষ্ট কার্যকর। অন্যদিকে এতে থাকা ভিটামিন আর খনিজ উপাদান শুষ্ক ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
স্কিন ব্রাইটেনিং আর অ্যান্টি এজিং ক্রিম, মাস্ক- এসব স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে দেদার মিষ্টিকুমড়া ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে ভরপুর এনজাইমকে কাজে লাগিয়ে বানানো হচ্ছে হাইড্রেটর, ময়শ্চারাইজার, এক্সফোলিয়েটর, পিলিং মাস্ক। এর এক্সট্রাক্ট দিয়ে তৈরি হচ্ছে টোনারও। বাসায় মিষ্টিকুমড়ার পাল্প দিয়ে তৈরি মাস্ক হতে পারে খুব ভালো স্কিন ফুড। এর মলিকুল খুব সূক্ষ্ম, তাই সহজে ত্বকের গভীরে পৌঁছতে পারে। ফলে বার্ধক্য রোধ ও সৌন্দর্যচর্চায় মিষ্টিকুমড়ার ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।

উপকরণ: হাইড্রেটর, স্কিন ব্রাইটনার, অয়েল কন্ট্রোলার, একনে রিমুভার
মূল কাজ: ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, বলিরেখা কমানো, আর্দ্রতা বাড়ানো, ব্রণ প্রতিরোধ
যে ধরনের ত্বকে ব্যবহৃত হয়: অ্যালার্জির সমস্যা না থাকলে সব ধরনের ত্বকের জন্য নিরাপদ। তবে শুষ্ক ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশি ভালো
ব্যবহারবিধি: ক্রিম বা লোশন ফর্মে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। মাস্ক, স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
 ফাহমিদা শিকদার
মডেল: নাজ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top