বিশেষ সম্পাদকীয়
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে পৃথিবী ভয়ংকর এক দুর্যোগকাল অতিক্রম করছে। দেশে দেশে প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমিত আর মৃতের সংখ্যা। বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে আতঙ্কের ছায়া, থেমে গেছে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকা-। লকডাউনের ফলে অফিস-আদালত-কারখানা-ব্যবসা আর বৈদেশিক বাণিজ্য প্রায় স্থবির। ব্যস্ত কেবল জরুরি সেবাসংশ্লিষ্ট পেশার মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করে চলেছেন।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? জবাব একটাই : এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক নেই। সংক্রমিত ব্যক্তিকে সুস্থ করে তুলতে পারে, এমন কোনো ওষুধও নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরীক্ষামূলক একটা ব্যবস্থাপত্র অবশ্য দিয়েছে, তাতে মূলত দুটি ওষুধের স্থান দেওয়া হয়েছে- একটি হলো হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, অন্যটি অ্যাজিথ্রোমাইসিন। প্রথমটি ম্যালেরিয়া আর দ্বিতীয়টি ফুসফুসে সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ দুটিতে অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন। বাস্তবতা হলো, ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা না থাকলে এই ব্যবস্থাপত্রও কাজে আসছে না। তবে দুনিয়াজুড়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা করোনার প্রতিষেধক তৈরির জোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ইতিমধ্যে উদ্ভাবিত একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সংবাদ আমরা পেয়েছি।
আশার কথা, বিশেষজ্ঞরা বলছেন- সেপ্টেম্বর নাগাদ ভাইরাসটি কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। তাহলে কি আমরা অপেক্ষা করব মাসটির জন্য, কিংবা তাকিয়ে থাকব কখন একটা কার্যকর প্রতিষেধক নাগালে আসে? এই প্রতীক্ষার চেয়ে বেশি জরুরি হলো জীবনধারায় পরিবর্তন ঘটানো। ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ জোর দেওয়া। উপায়গুলো কী কী, কারও অজানা নয়।
বিদ্যমান দুর্যোগের মধ্যেই উদযাপিত হচ্ছে বর্ষবরণ উৎসব। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে। প্রান্তরে, উদ্যানে, সড়কে, বিনোদনকেন্দ্রে নয়। সময়ের প্রয়োজনে আনন্দযাপনের ধারাকেও পাল্টে ফেলতে হয়। নিজেকে ও অন্যকে রক্ষার জন্য আমরা স্বগৃহে (বা যেখানেই থাকি, সেখানেই) উদযাপন করছি এবারের বাংলা নববর্ষ।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্যানভাস এবার কেবল অনলাইনে প্রকাশিত হলো। তবে বৈশাখ বিশেষ সংখ্যার বিষয়বস্তুগুলোয় পরিবর্তন হয়নি। ফ্যাশন, বিউটি, লাইফস্টাইল, ফুড- সবেতেই। অর্থাৎ পাঠকেরা ক্যানভাসের বিশেষ সংখ্যাই পাচ্ছেন পরিপূর্ণভাবে।
নিজেকে সুস্থ রাখুন, অন্যকেও। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।