skip to Main Content

ফরহিম I স্যালন অ্যাট হোম

মহামারির এই দুর্যোগের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্যালনে চুল কাটার কোনো সুযোগ নেই। শিখে নিতে পারেন বাড়িতে কীভাবে নিজেই কাজটি করবেন

কাট নির্ধারণ
প্রথমেই চুলের কাট নির্বাচন করতে হবে। সে অনুযায়ী এগোতে হবে বাকি ধাপগুলো। ছেলেদের চুলের কাটের অনেক বিকল্প রয়েছে। পছন্দের কাট ঠিক করে ইন্টারনেট থেকে কিছু ছবি নামিয়ে নিন রেফারেন্সের জন্য। সহজ কিংবা নিয়মিত যে কাট দিয়ে থাকেন, সেটা বেছে নেওয়াই ভালো। তবে মুখের আকৃতির সঙ্গে যেন মানানসই হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সহজ এবং মোটামুটি সব ধরনের ফেসেই মানিয়ে যায় এমন কিছু হেয়ারকাটের মধ্যে রয়েছে কম্ব ওভার ফেইড, স্লিকড ব্যাক আন্ডারকাট কিংবা ব্লো আউট ট্যাপার। ছোট করে চুল কাটতে চাইলে বাজ কাট কিংবা ক্রিউ কাট বেছে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, চুল বড় থাকলে তা আবার ছোট করা যায়, কিন্তু একবার কেটে ফেললে সঙ্গে সঙ্গেই ফেরত আনা সম্ভব নয়। সবকিছু বিবেচনায় রেখে বেছে নিতে হবে পছন্দের কাট।

টুল নির্বাচন
এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে কাটিং ও স্টাইলিং- দুই ধরনের টুল রয়েছে কি না। বেশি কার্যকর হতে পারে, সেগুলো হলো-
❙ ক্লিপারস: চুল ছোট করা, মাথার পেছন ও দুপাশে ফেইড অথবা বাজ কাট দেওয়ার জন্য অবশ্যই একটি ভালো মানের ক্লিপার কিংবা ট্রিমার জরুরি। এর অনেক ধরনের অপশন আছে। প্রফেশনাল ক্লিপারে আলাদা কয়েক ধরনের গার্ড থাকে। ফলে এগুলোর মাধ্যমে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এগুলোতে পাওয়ারফুল মোটর এবং ব্যাটারি লাইফ বেশি থাকার কারণে ব্যবহার করা যায় স্বচ্ছন্দে। তবে তুলনামূলকভাবে কম দামের কর্ডলেস ক্লিপারগুলোও বাসায় চুল কাটার ক্ষেত্রে কার্যকর।
❙ কাঁচি : একটা ধারালো কাঁচি হাতের কাছে থাকা জরুরি। যদিও সিংহভাগ কাজই হবে ক্লিপারের মাধ্যমে, কাঁচি সাহায্য করবে মাথার উপরের কিংবা ছোট ছোট অংশের চুল কাটতে।
❙ আয়না: নিজেই চুল কাটতে চাইলে সবচেয়ে সুবিধাজনক হলো একটা থ্রি-ওয়ে আয়নার ব্যবহার। এটি না থাকলে ওয়াশরুমের আয়নার দিকে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আরেকটি হাত ধরার আয়না নিয়েও কাজ সারা যায়।
এ ছাড়া চিরুনি আর ব্লো ড্রায়ার দরকার। ব্লো ড্রাই করার আগে হিট প্রটেকশন স্প্রে কিংবা সি সল্ট স্প্রে এবং পরে স্টাইলিংয়ের জন্য নিত্যব্যবহার্য হেয়ার প্রোডাক্টগুলোও একসঙ্গে নিতে হবে।

স্থান নির্ধারণ
চুল কাটার জন্য যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো রয়েছে এবং সহজে পরিষ্কার করা যায় এমন জায়গা বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজে নিজের বাথরুমই হতে পারে সবচেয়ে আদর্শ স্থান। এখানে সাধারণত আয়নার উপর একটা লাইট থাকে। এ ছাড়া জায়গা ছোট ও আবদ্ধ হওয়ায় কেটে ফেলা চুল বাতাসে উড়বে না এবং কাটিং শেষে গোসলটা সেরে নেওয়া যায়। এ ছাড়া বাসার গ্যারেজ, ছাদ অথবা বারান্দাও হতে পারে উপযুক্ত স্থান। জায়গা যা-ই হোক না কেন, আলো থাকতে হবে একদম ‘অন পয়েন্ট’।

অবস্থান নির্ধারণ
বাসায় চুল কাটার ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে না বসে, কিংবা ফিক্সড মিররের দিকে পেছন ফিরে এবং হাতে ধরার আয়নার অবস্থানÑ ঠিক করে নিতে হবে আগেই।

চুল শুকানো
শেষ ধাপ হলো চুল ভালো করে ধুয়ে হালকা শুকিয়ে নেওয়া। চুল ধুয়ে টাওয়েল ড্রাই করে নেওয়া নিশ্চিত করবে কাটার সময় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এমন কোনো বাড়তি হেয়ার প্রোডাক্ট নেই। চুল যত স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে, ততই তা নিজের মতো করে কাটতে সুবিধা হবে।

কাটার সময়
সব প্রস্তুতি শেষে এবার কাটার পালা। শুরুতে চুলগুলো ভাগ করে নিতে হবে। উপরের চুলে হাত না দিয়ে আগে দুপাশের অংশ ফেইড করে নেওয়া যায়। রেফারেন্সের ছবিগুলো হাতের কাছে রাখা জরুরি। এটা ক্লিপারের দৈর্ঘ্য নির্বাচনে সাহায্য করবে। একেকটা ধাপ অবশ্যই অন্যটি থেকে আলাদা হবে। সবার আগে সিঁথি কোন দিকে, তা ভালোভাবে খেয়াল করুন। এবার সিঁথি অনুযায়ী চুলগুলো ভাগ করে নিন। নিচের ও উপরের সাইডের চুল আলাদা করতে হবে। যদি চুল যথেষ্ট বড় হয়, তবে ক্লিপ কিংবা পিন দিয়ে ভাগগুলো আটকে নেওয়া যায়। এরপর কাটা শুরু।
❙ সাইড: শুরুতেই মাথার দুই পাশের চুল কাটতে হবে। ক্লিপারে গার্ড সাইজ ঠিক করে চিরুনি ধরে আস্তে আস্তে নিচ থেকে উপর দিকে ট্রিম করতে থাকুন। ক্লিপারটি যতটা সম্ভব স্থির রেখে এবং সামান্য সামনের দিকে কাত করে ট্রিম করুন। কাটার সময় সব চুল দৈর্ঘ্যে সমান আছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। পাশের ও পেছনে নিচের চুলগুলো যেন উপরের থেকে কমপক্ষে ট্রিমারের দুই গার্ড সাইজ ছোট হয়। তবে একটা টেপারড লুক দেওয়ার জন্য এক গার্ড ছোট রাখা যেতে পারে।
❙ ব্যাক: মাথার পেছনের চুল কাটার জন্য ক্লিপারটা নেকলাইন থেকে উপরের দিকে নিতে হবে। এ সময় আয়নার ব্যবহার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পেছনের সঙ্গে দুপাশের চুলের সামঞ্জস্য আনতে ক্লিপার ঊর্ধ্বমুখী ফ্লিকিং মোশনে ব্যবহার করতে হবে।
❙ টপ: বাজ কিংবা ক্রু কাট করতে না চাইলে মাথার উপরের চুল কাঁচি দিয়ে কাটতে হবে। আঙুল দিয়ে মাপমতো উপরে তুলে কেটে নেওয়া যায়। অথবা চিরুনির সাহায্যে উপরে টেনে তা সমান রেখায় কেটে নিতে হবে।
সবশেষে কানের পাশে এবং হেয়ারলাইনে চুলগুলো পরিষ্কার করার পালা। এতে এখানে একটা সঠিক কার্ভ তৈরি হবে। এটা হেয়ারকাটকে আরও ভালো করে ফুটিয়ে তুলবে।

কাটার পর
চুল কাটার পর শ্যাম্পু করে নিতে হবে। কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। হিট প্রটেকশন স্প্রে লাগিয়ে ব্লো ড্রায়ার দিয়ে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন। সি সল্ট স্প্রে ব্যবহার করা যায়। এটি চুলে সঠিক ভলিউম আর টেক্সচার দেবে।

❙ শিরীন অন্যা
মডেল: ডিউক
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: সৈয়দ অয়ন

This Post Has One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top