skip to Main Content

রূপরসদ I খেজুর

এর পুষ্টিগুণ যেমন বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে, তেমনি চুল ও ত্বকের পরিচর্যায়ও অসাধারণ। আজকাল ফলটির ফাইবার ও নির্যাস থেকে তৈরি হচ্ছে কার্যকর সৌন্দর্যপণ্য

মরুভূমির ফল খেজুর। ক্যারামেলের মতো এর টেক্সচার ও মিষ্টি স্বাদ অনন্য। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও আফ্রিকা, আমেরিকা ও এশিয়ার কিছু ক্রান্তীয় অঞ্চলে এর ব্যাপক চাষ হয়। মুসলিম বিশ্বে এই ফলের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।
পুষ্টিবিদদের মতে প্রাপ্তবয়স্ক সবার প্রতিদিন অন্তত দুটি করে খেজুর খাওয়া উচিত। শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি, ওজন নিয়ন্ত্রণ, মস্তিষ্কের সুস্থতা, হাড়ের গঠন ঠিক রাখা ছাড়াও ফলটির রয়েছে আরও অনেক স্বাস্থ্যসম্মত গুণ। ত্বকের সমস্যা রোধের একটি অসাধারণ উপাদান এটি। সম্প্রতি পশ্চিমে অনেক কসমেটিক ব্র্যান্ড ফলটির পুষ্টিগুণ কাজে লাগিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট। অবশ্য এর বীজের তৈরি তেল অনেক আগে থেকেই ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
খেজুরে রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, সি, ডি, ফাইবার, প্রোটিন। আছে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, কপারের মতো খনিজ উপাদান। সঙ্গে রয়েছে তিন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো হলো ফ্ল্যাভোনয়েডস, ক্যারোটেনয়েডস ও ফেনলিক অ্যাসিড।
ফলটি সব ত্বকের জন্যই কার্যকর। তবে শুষ্কতা দূর করতে এর জুড়ি নেই। এটি একই সঙ্গে প্রাকৃতিক স্কিন ব্রাইটনার, হাইড্রেটর ও ময়শ্চারাইজার। খেজুর অ্যান্টিএজিং উপাদান হিসেবে সম্ভবত সবচেয়ে ভালো। ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধে অত্যন্ত ফলদায়ক। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব টিস্যু রিঅ্যাকশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুরে থাকা ফাইটোহরমোন বলিরেখা দূর করতে অনেক বেশি কার্যকর। এতে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও ডি কোলাজেন বুস্ট করে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়। এটি রিঙ্কেলস, ফাইন লাইন ও ডার্ক স্পটের মতো বয়সের চিহ্ন প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফ্রি র‌্যাডিকেল, যা ত্বকের নীরব ঘাতক ও রিঙ্কেল আর ফাইন লাইনের বন্ধু; এর ওপর বিরূপ প্রভাব তৈরিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বিকল্প নেই। সূর্যের ইউভি রশ্মির কারণে সৃষ্ট ড্যামেজ রিপেয়ার ও হাইপারপিগমেন্টেশন কমিয়ে দেয় ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আবার ভিটামিন সি ত্বকের নমনীয়তাও বাড়ায়। ব্রণের দাগ ও ব্লাকহেডস দূর করে ভিটামিন এ।
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সারিয়ে তোলে। ফলটির পাঁচ রকমের ভিটামিন বি এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্রণের ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। রোজেশিয়া নামে ত্বকের রোগের উপসর্গ সারাতে পারে। খেজুরের ভিটামিন বি৫ বা প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। কেমিক্যাল পিলিংয়ের অনেক সাইড এফেক্ট আছে। তাই সব ত্বকের জন্য তা উপযোগী নয়। এ জন্য ন্যাচারাল পিলিং হিসেবে ব্যবহার করা যায় খেজুর। তা ছাড়া শরীরের স্ট্রেচ মার্ক দূর করার জাদুকরি ক্ষমতা আছে ফলটির।
খেজুরের বীজ থেকে তৈরি তেল ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। স্কিন মসৃণ ও নরম করে। এই তেল শক্তিশালী ডিটক্সিফায়ারও। নিমেষেই ত্বকের যেকোনো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ড্যামেজ সারিয়ে তুলতে পারে।
অ্যান্টিএজিং ক্রিম, ময়শ্চারাইজার, এক্সফোলিয়েটর, পিলিং, আই ক্রিম, মাস্ক, স্কিন রিনিউয়াল সিরাম এমনকি ফেসওয়াশ- সবকিছুতেই এখন ব্যবহার করা হচ্ছে খেজুরের এক্সট্রাক্ট। ঘরেই ফলটি বেটে তৈরি করা যায় মাস্ক। মেশানো যেতে পারে একটু মধু ও দুধ। এতে ত্বক হবে উজ্জ্বল, মসৃণ ও টান টান।

উপকরণের ধরন: হাইড্রেটর, ময়শ্চারাইজার, ব্রাইটনার
মূল কাজ: ত্বকের বলিরেখা কমানো, আর্দ্রতা বাড়ানো, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
যে ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়: সব ত্বকেই। তবে অতিমাত্রায় শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশি ভালো।

 ফাহমিদা শিকদার
মডেল: প্রিয়াম
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top