ফরহিম I ম্যাসকুলিন ফেসিয়াল
ত্বক পরিষ্কার রাখা মেয়েদের যেমন জরুরি, ছেলেদেরও। পুরুষের ত্বক সাধারণত বেশি তৈলাক্ত হয়ে থাকে। তাই তাদেরও ফেসিয়াল জরুরি। এতে ত্বক মসৃণ হয়। শেভও সহজে করা যায়। পাশাপাশি দুশ্চিন্তা দূর করতে থেরাপির মতো কাজ করে।
ছেলেদের বেলায় ধাপগুলো প্রচলিত ফেসিয়াল থেকে ভিন্ন নয়। তবে ত্বকের গঠন পৃথক হওয়ায় পুরুষের জন্য তৈরি প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করতে হবে। নিচের ধাপগুলো মাসে একবার করে নিজেই ফেসিয়ালের কাজটি সেরে নেওয়া যায়।
ক্লিনজ
প্রথমেই ত্বক থেকে সব ময়লা ও তেল পরিষ্কার করে নিতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভালো মানের ক্লিনজিং ক্রিম নিন। ময়লা কিংবা তেল শুষে নেওয়ার জন্য ফোমটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। দুই মিনিট পর পরিষ্কার পাতলা সুতি কাপড় কিংবা ফেসিয়াল টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে নিতে হবে। ক্লিনজিং ক্রিম না থাকলে ত্বকের সঙ্গে মানানসই যেকোনো ফোম দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, মুখে যাতে কোথাও কোনো ফেনা না থাকে।
এক্সফোলিয়েট
এক্সফোলিয়েশন ত্বকের উপর পড়ে থাকা স্তর সরিয়ে ভেতরের উজ্জ্বল সেলগুলো বের করে আনে। এতে চেহারায় বাড়তি উজ্জ্বলতা সৃষ্টি হয়। ত্বকের গভীরে থাকা ময়লা ও শুষ্ক সেলগুলো অপসারণ করতে গরম পানিতে আর্দ্র করে নিন। পরে মাইক্রোবিডস সম্পন্ন ভালো মানের একটা স্ক্রাব দিয়ে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে চোখের আশপাশের সংবেদনশীল অংশগুলো এড়িয়ে চলুন। দুই মিনিট ম্যাসাজ করে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। তবে ঘন ঘন স্ক্রাব ব্যবহার করবেন না। এতে নতুন সেল তৈরি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
স্টিম
ত্বকের পোর খোলার জন্য স্টিম দেওয়া জরুরি। এর মাধ্যমে যে প্যাক বা সিরাম লাগানো হবে, তার জন্য ত্বককে প্রস্তুত করা হয়। স্টিম নেওয়ার জন্য বড় বোল কিংবা বালতিতে গরম পানি নিন। উপুড় হয়ে পানি থেকে আসা ভাপ নিতে থাকুন। বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে দিতে হবে, যাতে ভাপটা কেবল মুখে লাগে। এভাবে ৪ থেকে ৫ মিনিট স্টিম নিন।
এক্সট্রেকশন
এই ধাপে ত্বকের ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস কিংবা একনে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে টুইজার কিংবা নিজের আঙুল ব্যবহার করতে পারেন। নিজে ফেসিয়াল করার জন্য একটা জুম মিরর থাকা জরুরি। এতে সহজেই বোঝা যাবে কোন খুঁতগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।
ফেসিয়াল ম্যাসাজ
ত্বকের ধরন বুঝে পুষ্টি জোগাবে এমন কোনো সিরাম বা ক্রিম দিয়ে বেশ খানিকটা সময় ফেসিয়াল ম্যাসাজ কিংবা প্রেশার পয়েন্ট ম্যাসাজ করে নেওয়া যায়। এতে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়বে, ত্বক সজীব হয়ে উঠবে।
মাস্ক
প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক বেছে নিতে হবে। বাসায় ফেসিয়াল করার ক্ষেত্রে মাস্ক প্যাকে লেখা নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি। ত্বক তৈলাক্ত হলে ক্লে বেজড মাস্ক বেছে নেওয়া যায়। শুষ্ক হলে দরকার ময়শ্চারাইজিং মাস্ক।
পোর ক্লোজিং
মাস্ক শুকিয়ে চামড়া টানতে থাকলে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। পাতলা কাপড় গরম পানিতে ভিজিয়ে মুখ ভালোভাবে মুছে নিন। পরে মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। এতে স্টিম এবং গরম পানির মাধ্যমে খুলে যাওয়া পোরগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পরে ময়লা প্রবেশ করতে পারবে না। এরপর একটা নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিন।
টোন
ত্বককে সতেজ করতে এবং অতিরিক্ত তেল সরিয়ে নিতে টোনার ব্যবহার করুন। চেহারার একনেপ্রবণ স্থানগুলোতে এবং নাক, কপাল ও চিবুকে টোনার লাগিয়ে নিন। ত্বক খুব বেশি শুষ্ক হলে এই ধাপটা বাদ দিতে পারেন। কারণ, অনেক সময় টোনার ত্বককে আরও বেশি শুষ্ক করে দিতে পারে।
চোখের যত্ন
হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আই ক্রিম কিংবা আই জেল নিয়ে চোখের চারপাশে বৃত্তাকারে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে নিতে হবে। মাস্ক লাগানোর সময় দুই টুকরা শসা চোখে দিয়ে রাখতে পারেন।
ময়শ্চারাইজ
সবশেষে ত্বক ময়শ্চারাইজিংয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবে। এটা পুরো ফেসিয়ালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ত্বকে ময়শ্চার ধরে রাখা জরুরি। তাই ময়শ্চারাইজার মুখ ও গলার অংশে ভালো করে মেখে নিতে হবে। এটি ত্বককে যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক ক্ষতি থেকে বাঁচায়। এ ছাড়া এটি ত্বক নরম রাখতে এবং চেহারার রুক্ষতা কমাতে সহায়তা করে।
শিরীন অন্যা
মডেল: ইতমাম
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: ক্যানভাস