সাজসারাই I আড়াল হবে চোখের ক্লান্তি
ক্লান্তির ছাপ পড়া চোখ কীভাবে সাজাবেন? আছে সহজ কিছু উপায়
ত্বকে ক্লান্তির ছাপ দিনের যেকোনো সময় চোখে পড়তে পারে। এটি হয় মূলত পরিমিত ঘুম না হলে। সারা দিনের কাজের ফলে মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে। রাতারাতি এই ছাপ দূর করা যায় না। তবে মেকআপের মাধ্যমে এটি কিছুটা হলেও লুকানো সম্ভব।
ক্লান্তি লুকানোর চেষ্টায় মনোযোগ দিতে হয় চোখের মেকআপে।
কোণের ডার্ক সার্কেল রিমুভ: চোখের কোণে কালি বা ডার্ক সার্কেল থাকলে চোখ দেখতে আরও ছোট আর ক্লান্ত লাগে। এ জন্য মেকআপ শুরুর আগে কনসিলার দিয়ে ডার্ক সার্কেল ঢাকতে হবে। এতেই চোখ দেখতে কিছুটা বড় লাগবে। কালি পড়া চোখে কাজল লাগানো যাবে না, তাতে আরও ক্লান্ত দেখাবে।
হাইলাইটার: রাত জাগার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্লান্তির ছাপ পড়ে চোখের কোণে। এটি দূর করতে চোখের ভেতরের কোনায় (অর্থাৎ নাকের দিকে) ছোট ব্রাশ দিয়ে হাইলাইটার মেখে নিতে হবে। সোনালি আইশ্যাডো অথবা পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করা যেতে পারে।
ন্যুড আই পেনসিল: অনেকেই চোখে কালো কাজল পরেন। কেউ কেউ অকেশন অনুযায়ী গাঢ় বাদামি, সবুজ বা নীল কাজলও ব্যবহার করেন। ন্যুড কালারের আই পেনসিল বা কাজল চেহারা থেকে ক্লান্তি দূর করতে পারে নিমেষেই। চোখের নিচের পাতায় ভেতরের দিকে (অর্থাৎ ওয়াটার লাইন বরাবর) ন্যুড বা পিঙ্ক আই পেনসিলের টানে চোখ উজ্জ্বল দেখাবে।
চিকন আইলাইনার: চোখজুড়ে মোটা করে অথবা নিচের অংশে আইল্যাশের ভেতর দিকে আইলাইনার লাগানো যাবে না। আইল্যাশের বাইরে দিয়ে প্রলেপ দিতে হবে। চোখের কোল পর্যন্ত লাইন না টেনে একটু আগে ছেড়ে দিলে আকর্ষণীয় দেখাবে।
হালকা রঙের আইশ্যাডো: আইশ্যাডোর রং যত হালকা হবে, চোখ তত বড় দেখাবে। বাইরের দিকে গাঢ় রঙের আইশ্যাডো লাগালেও চোখের ভেতরের কোলে হালকা আইশ্যাডো লাগাতে হবে। সাদা, সিলভার, গোল্ডেন বা ব্রোঞ্জ আইশ্যাডো ব্যবহার করা যায়।
মাসকারা: চোখের পাপড়ি কার্ল করে তারপর মাসকারা ব্যবহার করতে হবে। এতে চোখ বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে, দূর হবে রাতের ক্লান্তি। এ ক্ষেত্রে ভলিউমনাইজিং মাসকারা ব্যবহার করা যেতে পারে।
গাঢ় ব্লাশ বা কনটুর: দিনের বেলা মুখে গাঢ় কনটুর করা হলে ক্লান্তি আরও বেশি ফুটে উঠবে। অন্যদিকে গাঢ় রঙের ব্লাশ ব্যবহার করলে কিছুটা বার্ন্ট দেখায়। বরং মুখত্বকে হালকা গোলাপি আভা নিয়ে আসে এমন ব্লাশ ব্যবহার করলে উজ্জ্বল দেখাবে।
লিপবাম: সকালে ম্যাট বা গ্লসি লিপস্টিকে চেহারা আরও রুক্ষ দেখাবে। বরং হালকা রঙের লিপবাম ব্যবহার করলে ঠোঁট প্রাকৃতিকভাবেই লালচে হয়ে উঠবে।
পেট্রোলিয়াম জেলি: চোখের পাতায় আর চিকবোনে সামান্য একটু পেট্রোলিয়াম জেলি ঘষে দিলে মুখ সতেজ দেখাবে।
অলিভ অয়েল: এর ময়শ্চারাইজার আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। হাতে সামান্য অলিভ অয়েল নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করলে রক্তসঞ্চালন হবে, ফলে ত্বক হয়ে উঠবে ঝলমলে।
মধু: এতে ভিটামিন বি ও সি রয়েছে, যা ত্বকে পুষ্টি জোগায়। মুখে কয়েক ফোঁটা মধু লাগিয়ে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিলে ক্লান্তিভাব অনেকটা কেটে যাবে। উজ্জ্বল দেখাবে। টক দইয়ে মধু মিশিয়ে একটা ফেস প্যাক তৈরি করে মুখে লাগানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফেসিয়াল মিস্ট: মুখের ক্লান্তি দূর করতে এটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে। কৃত্রিম ফেসিয়াল মিস্ট ব্যবহার করতে না চাইলে ঘরে বানিয়ে নেওয়া যায়। এ জন্য তিন কাপ পানিতে আধা কাপ পুদিনাপাতা ফুটিয়ে নিতে হবে। চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হলে একমুঠো গোলাপের পাপড়ি যোগ করে আরও ১৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন। পানি শুকিয়ে অর্ধেক হলে নামিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। ছেঁকে স্প্রে বোতলে ঢেলে আধা চামচ লেবুর রস ও কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল মিশিয়ে মুখ বন্ধ করে ঝাঁকিয়ে নিন। ক্লান্ত লাগলেই একবার স্প্রে করে নেওয়া যায়।
আরও জেনে নিন
কিছু প্রসাধনী ত্বক থেকে ক্লান্তি দূর করতে কার্যকর। যেমন রিফ্রেশিং আই রোল-অন, রিফ্রেশিং অ্যালো জেল ইত্যাদি। দিনে ২-৩ বার এগুলো ব্যবহার করা যায়।
ত্বকে আলতো করে বরফ ম্যাসাজ করলে মসৃণ দেখায়। চোখের নিচে ফুলে থাকলে সকালে এই ম্যাসাজ করা যায়।
লেবুযুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিয়মিত কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করলে চোখের ক্লান্তিভাব এমনিতেই দূর হবে।
চোখের কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারেন নিয়মিত।
সুরবি প্রত্যয়ী
মডেল: মাহেলেকা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন